চিনি ফসল : আখ চাষ

চিনি ফসল : আখ চাষ পাঠটি “কৃষি শিক্ষা ১ম পত্র ১৮৮৯” এর ইউনিট – ৭ এর পাঠ – ৭.৬ পাঠ এর অংশ। চিনি বা গুড় উৎপাদনের জন্য যে সব ফসল চাষ করা হয় তাদেরকে চিনি জাতীয় ফসল বলে। আখ ও সুগারবীট চিনি জাতীয় ফসলের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় আখ চাষ হলো সুগারবীট এখনও তেমনভাবে চাষ করা হয় না।

চিনি ফসল : আখ চাষ

চিনি ফসল : আখ চাষ

 

সুগারবীটে চিনির পরিমান আখের চেয়েও বেশি। সারা পৃথিবীতে আখ ও সুগারবীট প্রধান চিনি জাতীয় ফসল হলো বাংলাদেশে আরও কিছু চিনি জাতীয় ফসল আছে। নিচের সারণীতে কিছু ফসলের ইংরেজি ও ইংরেজি নাম দেয়া হল:

Capture 81 চিনি ফসল : আখ চাষ

 

চিনি জাতীয় ফসলের গুরুত্ব :

১। চিনি জাতীয় ফসল শর্করা জাতীয় খাদ্যের প্রধান উৎস। মানুষের মস্তিস্কের সুষ্ঠ বিকাশের জন্য চিনি ও গুড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, আর এই চিনি বা গুড় উৎপন্ন হয় চিনি জাতীয় ফসল থেকে।

২। ইক্ষু বা আখ এর কোন অংশই ফেলে দেয়া হয় না। আখ থেকে চিনি বা গুড়ের পাশাপাশি মোলাসেস তৈরি হয় যা থেকে ইথানল পাওয়া যায়। এই ইথানল বায়োফুয়েল হিসাবে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া ইক্ষুর ছোবড়া (ব্যাগাসী) থেকে কাগজ তৈরির পাল্প পাওয়া যায়।

৩। তাল ও খেজুর গাছ থেকে কাঠ পাওয়া যায় এবং এর পাতা বিভিন্ন হস্ত শিল্পে ব্যবহৃত হয়।

৪। চিনি ফসলের জমিতে অন্যান্য সাথী ফসল চাষ করে কৃষক দ্বিগুণ লাভবান হতে পারে।

৫। চিনি জাতীয় ফসল চাষ ও এর থেকে চিনি, গুড় ও অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাদ্য উৎপাদন করার জন্য বহু লোকের কর্মসংস্থান হয়।

৬। চিনি জাতীয় ফসলের চাষ বৃদ্ধি করে চিনি বা গুড় উৎপাদন বাড়িয়ে এসব পণ্য আমদানীর জন্য সে অর্থ ব্যয় হয় তা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব।

৭। ইক্ষু জাতীয় ফসল সব ধরনের জমিতেই জন্মে, তাই যে সব জমিতে অন্যান্য ফসল চাষ করা কষ্টসাধ্য সেসব জমিতে জমি পতিত না রেখে ইক্ষু চাষ করা যায়।

 

আখ চাষ

 

আখ চাষ পদ্ধতি:

আখ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল, বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই আখের চাষ করা যায়। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতেই আখের চাষ বেশী হয়। আখ থেকে গুড় ও চিনি তৈরি হয়। বাংলাদেশে প্রায় ১৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয় এবং তার গড় উৎপাদন ৭—৭.৫ টন/ হেক্টর। এই আখ থেকে ১.৫—২.০টন/হেক্টর চিনি উৎপাদিত হয় এবং গুড় উৎপাদিত হয় হেক্টর প্রতি ৫.৫ টন যা দেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এই ঘাটতি পুরণ করার জন্য আখের উৎপাদন বৃদ্ধি করা দরকার।

 

আখ চাষের জন্য জলবায়ু:

আখ উষ্ণ আবহাওয়ার ফসল। আখ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় গড় তাপমাত্রা হল ২৫—৩৫ সে আখের পরিপক্কতার সময় ১৮—২২ সে. তাপমাত্রা থাকলে চিনির উৎপাদন ভাল হয়। মাঝারি বৃষ্টিপাত অর্থাৎ সুষমাভাবে বণ্টিত ১২৫—১৫০ সে.মি. বার্ষিক বৃষ্টিপাত আখচাষের জন্য উপযোগী। জমি নির্বাচন সুনিষ্কাশিত উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি আখ চাষের জন্য উপযোগী। এঁটেল দো—অঁাশ ও দো—অঁাশ মাটিতে আখ ভাল জন্মে। তবে একই জমিতে পরপর দুই বছরের বেশি আখ চাষ করা ঠিক নয়। দু বছর পর কমপক্ষে একবছর ঐ জমিতে অন্য ফসল চাষ করা উচিত।

আখের জাত বর্তমানে বাংলাদেশে আখের অনেকগুলো জাত উদ্ভাবিত হয়েছে এগুলো বাংলাদেশ সুগার ক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত। জাতগুলো হল: ঈশ^রদী ১/৫৩, ঈশ^রদী ২/৫৪, ঈশ^রদী ১/৫৫, ঈশ^রদী ৫/৫৫, ঈশ^রদী ৯/৫৫, ঈশ^রদী ১৫,১৬, এলজে—সি, ঈশ^রদী ১৮২২; ঈশ^রদী ২৪—৪০; বিএস আর আই আখ ৪১—৪৫।

 

আখ চাষের জন্য জমি তৈরি :

আখ একটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল তাই মাটি থেকে প্রচুর খাদ্য গ্রহণ করে। আখের শিকড় মাটির অনেক গভীর পর্যন্ত গিয়ে যেন খাদ্য গ্রহন করতে পারে সেজন্য আখের জমি ভালভাবে ৫—৬টি গভীল চাষ দিয়ে তৈরি করতে হয়। জমি এমনভাবে সমান করতে হবে যেন জমিতে পানি জমে থাকতে না পারে।

 

আখ রোপন সময় :

আখবীজ রোপনের উপযুক্ত সময় হল সেপ্টেম্বর নভেম্বর পর্যন্ত। অতিরিক্ত ঠান্ডায় আখ বীজের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তাইশীতের সময় বাদ দিয়ে ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত রোপন করা যায়। বীজের হার ৩০—৪০ হাজার সেট বা কাটিং/হেক্টর

 

আখের বীজ বাছাইকরন ও তৈরি করন :

আখের বংশবিস্তার করা হয় অঙ্গজ পদ্ধতিতে। আখের বীজ নির্বাচনের সময় খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো যেন অবশ্যই সুস্থ সরল, রোগ ও পোকামুক্ত হয়। কোন পদ্ধতিতে আখ লাগানো হবে তার উপর ভিত্তি করে ১ অথবা ২ চোখ/বাড বিশিই খন্ড করে বীজ তৈরি করতে হবে। এই খন্ডগুলোকে সেট বা কাটিং বলে। আখের সম্পূর্ণ কান্ডই বীজ হিসাবে ব্যবহার হয়, তবে আগার দিকের অংশ বীজ হিসাবে বেশি ব্যবহৃত হয়। বেডে বা ব্যাগে বীজস্থাপনের আগে প্রথমে বীজ পানিতে ৩০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে শোধন করে নিতে হবে।

Capture 81 চিনি ফসল : আখ চাষ

 

আখের বীজ রোপন পদ্ধতি :

আখ বিভিন্ন পদ্ধতিতে রোপন করা যায়। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হল।

১। প্রচলিত পদ্ধতি/সমতল পদ্ধতি : মাটিতে ৫—৬ সে. মি অগভীর নালা তৈরি করে ৪৫—৬০ সে.মি. দূরে দূরে সেট বা কাটিং স্থাপন করে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে সাধারণত ২টি বাড যুক্ত কাটিং ব্যবহার করা হয়।

২। নালা পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে কোদাল দিয়ে ১৫ সেমি গভীর নালা তৈরি করে ৪৫—৬০ সেমি দূরে দূরে কাটিং বসিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

৩। পরিখা পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে ২০—৩০ সেমি গভীর নালা তৈরি করা হয়। এই নালার নীচের দিক ৩০ সেমি এবং উপরের দিক ৪০ সে.মি চওড়া হয়। এই পদ্ধতিতে আখগাছ ঢলে পড়ে না এবং কম সেচ প্রয়োজন হয়। ক) এক সারি পদ্ধতি খ) দেড়া পদ্ধতি গ) জিগজ্যাগ পদ্ধতি

Capture 1 13 চিনি ফসল : আখ চাষ

৪। চারা স্থানান্তর পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে প্রথমে চিত্র ৭.৬.২ : আখ রোপনের বিভিন্ন পদ্ধতিসমূহ পলিব্যাগ অথবা বেডে চারা তৈরি করা হয়। পরে সেই চারা মাঠে নিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে রোপন করতে হয়।

 

আখের সেট বা কাটিং স্থাপন পদ্ধতি :

ক) এক সারি পদ্ধতি (মাথা মাথা পদ্ধতি)

খ) দুই সারি পদ্ধতি

গ) দেড়া পদ্ধতি/ওভারলেপিং পদ্ধতি ঘ) জিগজ্যাগ পদ্ধতি/ এলোমেলো পদ্ধতি

Capture 83 চিনি ফসল : আখ চাষ

সার প্রয়োগ ভালো ফসলের জন্য আখ চাষের সময় সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। নিচে আখের জমিতে ব্যবহৃত সারের পরিমাণ দেওয়া হল :

Capture 82 চিনি ফসল : আখ চাষ

জমি তৈরির সময় সম্পূর্ণ গোবর মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়। সম্পূর্ণ টিএসপি, জিপসাম ও জিংকসালফেট জমি তৈরির পর নালা তৈরি করে তার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়। অর্ধেক ইউরিয়া এবং এমপি চারা রোপনের সময় এবং বাকী অর্ধেক ইউরিয়া ও এমপি কুশি গজানোর সময় মাটিতে ছিটিয়ে দিতে হবে মাটি যদি বেশি এসিডিক হয় তখন তাতে ডলোচুন ব্যবহার করতে হবে।

 

আখের আন্তঃপরিচর্যা :

১। আগাছা দমন ও গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়া : আখের জমিতে ৪—৫ বার আগাছা দমন করতে হবে, বিশেষ করে চারা গজানোর পর ৩—৪ মাস পর্যন্ত আখের জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। চারা বয়স ৭—৮ সপ্তাহ হলে প্রথমবার এবং ১২—১৪ সপ্তাহ বয়সে দ্বিতীয় বার আখের গোড়ার মাটি তুলে দিতে হবে ফলে গাছ হেলে পড়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং শিকড়ের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।

২। ঠেস দেওয়া : ঝড় বাতাস ও শেয়ালের উপদ্রব থেকে রক্ষার জন্য আখের ৩—৪টি ঝাড় একসাথে করে ঠেস দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।

৩। সেচ ও পানি নিকাশ : প্রয়োজন অনুযায়ী জমিতে পানি সেচ দিতে হবে এবং অতিরিক্ত পানি যেন জমে না যায় সেজন্য তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। শুকনা পাতা পরিষ্কার আখের ফলন বাড়ানোর জন্য গাছের পাতা শুকিয়ে গেলে সেগুলো পষ্কিার করতে হবে।

 

আখের ক্ষতিকর পোকামাকাড় ও দমনব্যবস্থা :

১। আখের ডগার মাজরা পোকা:

ক্ষতির লক্ষণ : পোকার কীড়াগুলো পাতার মধ্যশিরা ছিদ্র করে এবং পাশদিয়ে নালা তৈরি করে কান্ডের ডগায় পৌছে যায় কান্ডের নরম অংশ খেয়ে ফেলে এবং ফলে গাছ আর বাড়তে পারে না।
দমন ব্যবস্থা ক) আক্রান্ত গাছ কেটে ধ্বংস করতে হবে। বয়ষ্ক পোকা মথ ও কীড়া

ধ্বংস করতে হবে কীটনাশক ফুরাডান ৫জি একর প্রতি ১৬ কেজি হারে গাছের
দুই সারির মাঝে নালা করে মাটির সাথে মিশিয়ে নালাতে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।

Capture 84 চিনি ফসল : আখ চাষ

২। আখের কান্ডের মাজরা পোকা:

ক্ষতির লক্ষণ : প্রথমে গাছের পাতাগুলো শুকিয়ে যায় এবং পরে আখের পাতা মরে যায়। কান্ডে অনেক ছিদ্র থাকে এবং এগুলো দিয়ে গুড়ো গুড়ো হলুদাভ পদার্থ বের হয়ে এসে কান্ডে লেগে থাকে।

 

৩। আখের পিঙ্গল মাজরা পোকা:

ক্ষতির লক্ষণ : আখের মাইজ মরে যায় এবং টান দিলে তা সহজেই উঠে আসে। গাছের গোড়ার দিকে পোকা প্রবেশ করার চিহ্ন দেখা যায়। এখানে প্রচুর বিষ্টা দেখা যায় ও দুর্গদ্ধ ছড়ায়। দমন ব্যবস্থা : ক) ডিমের গাদা ধ্বংস করতে হবে। খ) আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে মথ ধ্বংস করতে হবে। গ) আক্রান্ত গাছ কেটে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ঘ) ডায়াজিন ৬০ ইসি প্রয়োগ করা যেতে পারে।

 

৪। আখের উইপোকা:

ক্ষতির লক্ষণ : লাগানো আখ খন্ডের দুইপাশ দিয়ে প্রবেশ করে ভেতরের অংশ খেয়ে ফেলে। ফলে রোপা আখের খোসাটি শুধু পড়ে থাকে, গাছ জন্মাতে পারে না আখ গজাবার পর আক্রমণ করলে চারাগুলো হলুদ হয়ে যায় এবং
টান দিলে সহজেই উঠে আসে। দমন ব্যবস্থা : ক) আক্রান্ত জমিতে মুড়ি আখ চাষ করা যাবে না।

খ) সম্ভব হলে জমিতে প্লাবন সেচ দিয়ে জমি কয়েকদিন ডুবিয়ে রাখতে হবে। গ) শুকনো পাটকাঠি হাড়ির মধ্যে ভরে তা মাটিতে পুড়ে রাখতে হবে। এতে উইপোকা এসে জমা হয়। ১৫ দিন পর পর সেগুলো উঠিয়ে ধ্বংস করতে হবে। ঘ) ক্ষেতের আশে পাশে উইপোকার ঢিবি থাকলে তা ভেঙ্গে দিয়ে ডাসবান ২০ ইসি ২৫০ মিলিলিটার ১০ গ্যালন পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। ঙ) ক্লোরপাইরিফস জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করা যায়।

 

আখ চাষ 3 চিনি ফসল : আখ চাষ

 

আখের রোগ ও দমন ব্যবস্থা :

১। আখের লাল পঁচা রোগ:

রোগের কারণ : ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগ হয়। লক্ষণ : এ রোগের ফলে প্রধানত আখের কান্ড পঁচে যায়। আক্রান্ত পাতা হলদে হয়ে শুকিয়ে যায়। আখের কান্ড কাটলে দেখা যায় ভেতরের কোষগুলো পচে লাল রং ধারণ করেছে। এর মধ্যে আড়াআড়িভাবে ছোপ ছোপ সাদা অংশ দ্বারা বিভক্তি দেখা যায়। দমন ব্যবস্থা

ক) রোগ সহিষ্ণু বা প্রতিরোধক জাত ব্যবহার করা

খ) বীজ আখ বপনের পূর্বে শোধণ করে নিতে হবে ১৫—২০ মিনিট ১% কার্বনডাজিম এর পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে।

গ) আক্রান্ত আখ উঠিয়ে নষ্ট করে ফেলতে হবে।

ঘ) ব্যাভিস্টিন (০.১%) অথবা বাইনালেট ৭০% ডব্লিওপি (০.১%—০.১৫%) ১০—১২ দিন পরপর পাতায় স্প্রে করা যেতে পারে।

 

২। আখের স্মাট রোগ:

রোগের কারণ :

ছত্রাকের জন্য এই রোগ হয়। লক্ষণ : আক্রান্ত গাছে পাতাগুলোর মধ্যে একটি চাবুকের মত লম্বা লিকলিকে ও কালো বর্ণের শীষ উৎপন্ন হয়। প্রথম দিকে কালো শীষটি পাতলা একটি রূপালি পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে যার ভেতরে কালো কালো অসংখ্য স্মাট রোগের জীবাণু থাকে। এই রূপালি পর্দা ফেলে গিয়ে রোগের জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। স্মাট আক্রান্ত আখের ঝাড়ে অসংখ্যা কুশি বের হয় এবং এগুলো দেখতে ঘাসের মত মনে হয়। দমন ব্যবস্থা

ক) রোগ প্রতিরোধ/সহিষ্ণু জাত চাষ করতে হবে।

খ) স্মাট আক্রমণ হলে সে জমিতে মুড়ি ফসল চাষ করা যাবে না।

গ) প্রয়োজনে ছত্রাক নাশক ব্যবহার করতে হবে।

ঘ) আক্রান্ত ঝাড় জমি থেকে উঠিয়ে ধ্বংস করতে হবে ঙ) প্রয়োজনে ছত্রাক নাশক ব্যবহার করতে হবে। ৩। উইল্ট রোগ : কারণ : ছত্রাক
লক্ষণ : এই রোগ অনেকটা লাল পঁচা রোগের মতই পাতা গুলো হলুদ হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত কান্ড লম্বালম্বিভাবে কাটলে ভেতরে লাল রং দেখা যায়।

 

দমন ব্যবস্থা :

ক) বীজ আখ লাগানোর আগে ০.১% ব্যাভিস্টিন দ্রবণে (পানি ও ব্যভিসিটন এর অনুপাত ১০০:১) ৩০ মিনিট ধরে চুবিয়ে রেখে শোধণ করতে হয়।

খ) রোগাক্রান্ত গাছ উঠিয়ে নষ্ট করে ফেলতে হবে।

 

আখ পরিপক্কতার লক্ষণ :

সাধারণত আখ পরিপক্ক হতে ১২ থেকে ১৫ মাস সময় লাগে। মাঠে রিফ্রেক্টোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে আখের মিষ্ঠতা পরিমাপ করে পরিক্কতা নির্ধারণ করা হয়। তাছাড়া আখ পরিপক্ক হলে কানেডর বৃদ্ধি থেমে যায়। পাতার হলুদ হতে থাকবে এবং কান্ডের কোন কিছু দিয়ে কান্ডের আঘাত করলে ধাতব শব্দ হবে, এসব লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে আখ কাটার সময় হয়েছে। ফসল কাটা আখ পরিপক্ক হওয়ার পরপরই ধারালো ছুরি দিয়ে গোড়া থেকে কেটে নিতে হবে। এরপর পাতা ছাড়িয়ে গুড় বা চিনির জন্য মাড়াই করতে হবে। আখ পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথেই মাড়াই করতে হবে তা না হলে গুড় বা চিনির পরিমাণ কম হবে।

ফলন আখের ফলন ৪০—৫০ টন/হেক্টর মুড়ি আখ প্রথমবার আখ কেটে নেওয়ার পর পরিত্যক্ত মাথা বা মুড়ি থেকে ঐ একই জমিতে আবারও আখ উৎপাদনকে মুড়ি আখ চাষ বলে। বিনা চাষে এবং বিনা বীজে এই চাষ করা যায় এবং অল্প খরচে কৃষক অতিরিক্ত ফসল ফলাতে পারে। তবে একবার মুড়ি ফসল করার পর হয় যা ঐ একই জমিতে মুডি ফসল করা উচিত নয় কারণ তাতে রোগ ও পোকামাকড়র আক্রমণ বেড়ে যায় এবং জমির মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

আরও দেখুন :

Leave a Comment