ওজোনস্তরের ক্ষয় ও জীব জগতে এর প্রভাব , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ , অক্সিজেনের তিন পরমাণু নিয়ে গঠিত একটি রূপভেদের নাম ওজোন (ঙ৩)। বিজ্ঞানের ভাষায় যা অলোপিক মডিফিকেশন নামে পরিচিত। সূর্যের ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘে্যর অতি বেগুনি রশ্মি অক্সিজেন অণুকে ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা রাখে। সাধারণভাবে সূর্যের ২৪০ হস এর চেয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গবিশিষ্ট অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে অক্সিজেন অণুর সালোক—বিযুক্তি ঘটে। এভাবে বেড়িয়ে আসা মুক্তঅক্সিজেন পরমাণু অক্সিজেন অণুর সাথে মিলিত হয়ে ওজোন তৈরি করে।
ওজোনস্তরের ক্ষয় ও জীব জগতে এর প্রভাব , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ , ইউনিট ৩ , পাঠ-৩.৪
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের প্রায় সর্বত্রই কম বেশি ওজোন পাওয়া যায়। তবে ভূ—পৃষ্ঠের ২৫ কি.মি. উর্ধ্বে এর ঘনত্ব সর্বাধিক ১৫ ি প.পি.এম.। বায়ুমন্ডলে ওজোনের ব্যাপ্তি পৃথিবীর বায়ুমন্ডল কতগুলি প্রধান স্তর নিয়ে গঠিত। এগুলো হচ্ছেঃ ট্রপোস্ফিয়ার, ট্রপোপোজ, স্ট্রাটোস্ফিয়ার, আয়ানোস্ফিয়ার ইত্যাদি। বায়ুমন্ডলের সব চেয়ে নিচের স্তরটির বিস্তৃতি ভূ—পৃষ্ট থেকে প্রায় ১১ কি.মি. পর্যন্ত এবং এটির নামই ট্রপোস্ফিয়ার। মেঘ, বায়ুপ্রবাহ, ঝড় প্রভৃতি এ স্তরেই সংঘঠিত হয়। ট্রপোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমাকে ট্রপেপোজ বলে। সাধারণভাবে ট্রপোপজের উপরে ধুলা—বালি ও জলীয় বাষ্প থাকে না। এ স্তরের গভীরতা খুবই কম। এর উপরে রয়েছে স্ট্রাটোস্ফিয়ার, যার বিস্তৃতি ভূ—পৃষ্ট থেকে প্রায় ৫০—৬০ কি. মি. পর্যন্ত।
এই স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যেই ভূ—পৃষ্ঠের ২০ থেকে ৩০ কি.মি. উর্ধ্বে সন্নিবেশিত আছে ওজোন গ্যাসের একটি পাতলা স্তর যা ওজোনোস্ফিয়ার নামেও পরিচিত। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের প্রায় সর্বত্রই কম বেশি ওজোন পাওয়া যায়। তবে ভূ—পৃষ্ঠের ২৫ কি.মি. উর্ধ্বে এর ঘনত্ব সর্বাধিক ১৫ পি.পি.এম.।
ওজোনস্তর ক্ষয়ের প্রতিকৃতি
মূলত মানুষের ক্রিয়া কর্মের ফলেই বর্তমানে ওজোনস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে বলে প্রকাশ। বায়ুমন্ডলে ওজোনস্তরের ক্ষয় প্রথম ধরা পড়ে ১৯৮৩ সালে যখন বৃটিশ এ্যান্টার্কটিকা সার্ভে নামে এক দল বৃটিশ গবেষক এ্যান্টার্কটিকার বায়ুমন্ডলে ওজোনস্তরে একটি বিরাট গহ্বর দেখতে পান। তখন এ গর্তের পরিমাপ ছিল ৪০ শতাংশ। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ শতাংশে। স্থানের পরিমাপে এটি প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সমপরিমাণ বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন। ১৯৭৮ সালে পরিচালিত পুনটা এরিনাস অভিযানের (চিলির দক্ষিঞ্চালীয় একটি শহর পুনটা এরিনাস) তথ্য থেকেও কুমেরুর আকাশে ওজোনস্তরের গহ্বর সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়।
এই অভিযানে আরও প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সামগ্রীকভাবে গত ১৮ বছরে ওজোন স্তরের ২—৩ শতাংশ বিলীন হয়ে গেছে। শুধু কুমেরু অঞ্চলের আকাশেই নয় পৃথিবীর বহু জনবহুল অঞ্চলের আকাশেও ওজোনস্তর ওজন কমতে শুরু করেছে। তবে তার মাত্রা কুমেরু অঞ্চলে যত নাটকীয় ভাবে ঘটেছে তেমনটি নয়।
কোন কোন বিজ্ঞানীর মতে কুমেরুর আকাশে সৃষ্ট ওজোনস্তরের গহ্বর সম্পূর্ণ ওজোন ঘাটতি জনিত কারণে নয়। বরং অনেকটা বায়ুস্তরের বিন্যাস জনিত ত্রুটির কারণে হয়ে থাকতে পারে। নিম্বাস আবহাওয়া উপগ্রহ থেকে লক্ষ করা গেছে বছরের কোন সময়ে কুমেরুর ওজোনসর হালকা হয়ে যায় Í আবার অন্য সময় তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। অধিকাংশ ওজোন তৈরি হয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের বায়ুতে। গ্রীষ্ম মন্ডল থেকে মেরু অঞ্চলে বায়ু প্রবাহের স্বাভাবিক গতি পথে অনেক সময় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ফলে কুমেরুতে ওজোন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম পৌঁছে। আর সে কারণেই মেরু অঞ্চলে বায়ুতে ওজোন ঘাটতি হয়ে থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
ওজোনস্তর সম্পর্কে অধিক তথ্য আহরণের উদ্দেশ্যে ১৯৮৯ সনে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানী ও জাপানের বিজ্ঞানীরা এক যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন উত্তর মেরুতে। তাদের তথ্যে জানা যায় জমাট নাইট্রিক এসিডের মেঘ উত্তর মেরুর ওজোনস্তর খেয়ে হালকা করে ফেলছে। ওজোনস্তর ক্ষয়ের কারণ প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয় ১৯৬০ সালে ি রফ্রিজারেটরের শীতলীকরণের কাজে। পরে অবশ্য এ ধরনের গ্যাস এয়ারকুলার, স্প্রে—ক্যান, প্লাষ্টিক ফোমের উপাদান, মাইক্রোইলেকট্রিক সার্কিট পরিষ্কার করার দ্রবণ ইত্যাদি বহুবিধ কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
সর্য থেকে আগত অতি বেগুনি রশ্মির মারাÍক ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পৃথিবীর জীবকুলকে রক্ষা করার জন্য যে ওজোনস্তর ছাকনীর মতো ব্যবহৃত হয় তা আজ মানুষের ক্রিয়া কর্মের ফলেই হালকা বা ধ্বংস প্রাপ্ত হতে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে ওজোনস্তর ক্ষয় সাধনে মুখ্য ভুমিকা রাখছে মানব সৃষ্ট ক্লোরোফ্লোরো কার্বন নামক শিল্পজাত গ্যাস, যার কোন প্রাকৃতিক উৎস নেই। ১৯২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মটর্স কোম্পানীর বিজ্ঞানীগণ ঈঋঈং গ্যাস উদ্ভাবন করেন।
তবে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয় ১৯৬০ সালে রিফ্রিজারেটরের শীতলীকরণের কাজে। পরে অবশ্য এ ধরনের গ্যাস এয়ারকুলার, স্প্রে—ক্যান, প্লাষ্টিক ফোমের উপাদান, মাইক্রোইলেকট্রিক সার্কিট পরিষ্কার করার দ্রবণ ইত্যাদি বহুবিধ কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই গ্যাস বিষবিহীন, নিষ্ক্রিয়, সহজে অন্য কোন্ পদার্থের সাথে বিক্রিয়া ঘটায় না এবং নিচু তাপমাত্রায় বাষ্পীভুত হয়। অধিকাংশ ঈঋঈং বানানো সহজ এবং দামেও সস্তা।
ওজোন ধ্বংসকারী উৎপাদন ১৯৬০ সালের পর থেকে শতকরা ৩০ ভাগ হারে বাড়ছে। ব্যবহারের উৎস থেকে ঈঋঈং গ্যাস বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করলে তা দীর্ঘ দিন অক্ষত অবস্থায় থাকে। বায়ুমন্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার থেকে ঈঋঈং পরিচালন পদ্ধতিতে প্রবাহিত হয়ে ষ্ট্রাটোস্ফিয়ারে পৌঁছে প্রতিক্রিয়া শুরু করতে সময় লাগে অন্ততঃ একযুগ। কিন্তু সেখানে পৌছামাত্র সেখানকার প্রবল সমান্তরাল বায়ুপ্রবাহের সংস্পর্শে এসে দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করে এবং অতি বেগুনি রশ্মির বিক্রিয়ার কারণে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে দূষকে পরিণত হয়। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে ঈঋঈংভেঙ্গে মুক্ত ক্লোরিন পরমাণু বেড় হয়ে আসে। বিযুক্ত ক্লোরিন পরমাণ তিন পরমাণ বিশিষ্ট ওজোন ভেঙ্গে উৎপন্ন করে ক্লোরিন মনোক্সাইড ও অক্সিজেন।
পরমুহুর্তেই ক্লোরিন মনোক্সাইড আবার মুক্ত অক্সিজেন পরমাণর সাথে যুক্ত হয়ে অক্সিজেন গ্যাস ও মুক্ত ক্লোরিন পরমাণ উৎপন্ন করে। এভাবে একটি ক্লোরিন পরমাণু ক্রমাগত চেইন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ১,০০০০০ অণ অক্সিজেনকে ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম। ফলে দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে ওজোনস্তর।
সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে ওজোনস্তর ক্ষয়ের পিছনে শুধু যে ঈঋঈং দায়ী তা নয়। ক্লোরিনযুক্ত অন্যান্য গ্যাস যেমনঃ কার্বন টেট্রাক্লোরাইড, মিথাইল ক্লোরোফরম ইত্যাদিও ওজোনস্তরের ক্ষয় সাধন করছে। শস্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত নাইট্রোজেনঘটিত সার থেকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় এবং সৌরশক্তির প্রভাবে নাইট্রাস অক্সাইড উৎপন্ন হয়। এই গ্যাস ষ্ট্রাটোস্ফিয়ারে পৌছলে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে নাইট্রোজেনের রেডিক্যালে পরিণত হয়। নাইট্রোজেনের এই রেডিক্যাল ওজোনকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে। মুক্ত ক্লোরিন পরমাণর চেয়ে নাইট্রোজেন রেডিক্যালের ওজোন বিধ্বংসী ক্ষমতা ৬ গুণ কম। তবে বায়ুমন্ডলে নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ বছরে ০.২৫ ভাগ হারে বাড়ছে এবং এর কর্মক্ষমতা সম্ভবত ১৫০ বছর পর্যন্ত বজায় থাকে। মানব সৃষ্ট কারণের পাশাপাশি সৌর—কলঙ্কের কারণেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ ওজোন ধ্বংসকারী নাইট্রোজেন রেডিক্যাল সৃষ্টি হয় বলে ধারণা করা হয়।
জীব জগতে ওজোনস্তরের প্রভাব স্ট্রাটোস্ফিয়ারের তাপ কাঠামো সংরক্ষণে ওজোনস্তরের ভুমিকা অপরিসীম।সূর্য হতে আগত অতিবেগুনীরশ্মির (টষঃৎধারড়ষবঃ ৎধু) শতকরা ৯৯ ভাগই ওজোনস্তর শোষণ করে রাখে। বাকি মাত্র ১ ভাগ এসে পৌঁছে ধরাপৃষ্ঠে। এ রশ্মি মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। অথচ তা মানুষ ও উদ্ভিদসহ সকল প্রাণীকূলের জন্যই চরম ক্ষতিকর। ওজোনস্তর সুর্যের এই ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিকে ছাকনীর মতো শুষে নিয়ে পরিচ্ছন্ন সর্যের আলো পৃথিবীকে উপহার দিেু চ্ছ। অতি বেগুনি রশ্মি শুষে নেয়ার কারণে এ স্তরের তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি(প্রায় ১৭০ ফাঃ)। আর এর বিনিময়েই ধরা—পৃষ্ঠ রক্ষা পাচ্ছে অতি উত্তাপের কবল থেকে।
ওজোন নামের গ্যাসের এ বলয় ডিমের খোসার মতো লক্ষ কোটি বছর ধরে রক্ষা করে আসছে পৃথিবীর জীবকুলকে। ওজোনস্তরের ক্ষয় বা এর ঘনত্ব হালকা হওয়া জনিত কারণে স্ট্রাটোস্ফিয়ার ও ভূপৃষ্ঠের মধ্যে তাপের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি শোষণ করে ষ্ট্রাটোস্ফিয়ার এখন যে তাপমাত্রা ধারণ করে আছে ওজোনস্তরের অভাবে তা সরাসরি ট্রপোস্ফিয়ার বা ভূ—পৃষ্ঠে এসে সেখানকার তাপের মাত্রা বাড়িয়ে তুলবে।
ওজোনস্তর বিনষ্ট হলে সূর্য থেকে আগত মহাজাগতিক অতি বেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে এসে প্রাণী ও উদ্ভিদ কুলের জন্য মারাত্বক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। এতে প্রাণীদেহে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি হবে। অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে মানুষের গায়ের চামড়ার পীতাভ রং ধারণ, চামড়ায় ভাজ পড়া, চোখে ছানি পড়াসহ নানা ধরনের জটিল রোগের সৃষ্টি হবে। বাড়বে হার্পিস ও হেপাটাইটিস রোগের প্রভাব।
তাছাড়া এর প্রভাবে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও লোপ পাবে বহুলাংশে। অতি বেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে এলে মানুষের চামড়ায় স্কুয়ামাস ও ম্যালানোমা নামে দু’ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। আমেরিকার পরিবেশ সংরক্ষণ এজেন্সির (ঊচঅ) তথ্যানুসান্ধনীদের মতে ১% ওজোন স্তরের ক্ষয় ত্বকে ৫% বেশি স্কুয়ামাস ক্যান্সার এবং ২% অধিক ম্যালানোমা ক্যান্সার সৃষ্টি করবে। ম্যালানোমা ক্যান্সার একটি জটিল রোগ, যা থেকে আরোগ্য লাভ করা প্রায় অসম্ভব।
তথ্যে আরও প্রকাশ কৃষ্ণাঙ্গদের চেয়ে শ্বেতাঙ্গরাই এর দ্বারা বেশি আক্রান্ত হবে। জনবহুল এলাকায় ওজোনস্তর ক্ষয়—প্রাপ্ত হলে তার পরিণতি হবে আরও ভয়ঙ্কর। ওজোনস্তর ক্ষয়ের আরেকটি ক্ষতিকর দিক আছে। তা হচেছ ওজোনস্তর ট্রপোস্ফিয়ারের উপরে একটি ছাতার মতো থেকে পৃথিবীকে অতি বেগুনি হাত থেকে রক্ষা করছে। কোন কারণে এটি হালকা বা কোথাও কোন ছিদ্র হলে সুর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ভূ—পৃষ্ঠে পৌঁছে বায়ুমন্ডলের নিম্নস্তরের সমস্ত অক্সিজেনকে ওজোন গ্যাসে পরিণত করতে পারে। এতে করে বিষাক্ত ওজোন গ্যাসের আধিক্যে জীবজগত মারাত্বক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।
কৃষিতে প্রভাব
ওজোন¯ র ক্ষয়জনিত কারণে পৃথিবীর জলবায়ু ও কৃষির উপরও বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। অতীতে ওজোনকে উদ্ভিদ বৃদ্ধির সহায়ক নিয়ামক হিসাবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত যে এটি আসলে পরিবেশ ও উদ্ভিদের জন্য মারাÍক ক্ষতিকর। ওজোনস্তর ক্ষয়জনিত কারণে অতিবেগুরি রশ্মির প্রভাবে উদ্ভিদ কোষ বিকৃত হওয়া, ধান, সোয়াবিন, বাঁধাকপি, স্কোয়াশ ইত্যাদি বহু ফসলের সালোকসংশ্লেষণ মাত্রা হ্রাস পাবার ফলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। পর্যাপ্ত পানি পাওয়া সত্বেও লতাগুল্ম ও চারা গাছে প্রাণের উদ্বেলতা থাকবে না। মাছের উৎপাদন, মাছের প্রজননসহ সকল ধরনের সামুদ্রিক প্রাণীও এ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ওজোনস্ত র ক্ষয় রোধে করণীয় বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে ওজোন ধ্বংসকারী প্রধান গ্যাস ঈঋঈং উৎপাদিত হলেও এর ব্যাপক ব্যবহার সর্বত্র। তাই ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধে উন্নত বিশ্বকেই এগিয়ে আসতে হবে। যেহেতু ঈঋঈং দীর্ঘ কাল বায়ুমন্ডলে অক্ষত অবস্থায় অবস্থান করে ওজোনস্তর কে ধ্বংস করে, সেহেতু এখনই এর উৎপাদন বন্ধ করা উচিত। কিন্তু বাণিজ্যিক কারণেই এ মুহুর্তে তা সম্ভব নয়। তাই বায়ুমন্ডলে যত কম ঈঋঈং নির্গত হয় সে দিকে সকলকেই সজাগ থাকতে হবে। ফ্রিজ, এয়ারকুলার, ইত্যাদি যন্ত্রপাতি (যেখানে ঈঋঈং ব্যবহৃত হয়) মেরামত/রিচার্জিং এর সময় ঈঋঈং যেন নির্গত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভব হলে পূনঃ ব্যবহারের প্রচেষ্টা নিতে হবে। এছাড়া এসব ঈঋঈং উৎপাদনকারী দ্রব্যাদির বিকল্প তৈরি করতে হবে।
আরও দেখুন:
- গ্রীন হাউজ গ্যাসসমূহ ও এদের উৎস , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ , ইউনিট ৩ , পাঠ-৩.২
- গ্রীন হাউজ ইফেক্ট , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ , ইউনিট ৩ , পাঠ-৩.১
- মৃত্তিকা দূষণ , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ , ইউনিট ২ , পাঠ-২.৫
- জনসংখ্যা ও পরিবেশ দূষণ , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ , ইউনিট ২ , পাঠ-২.৪
- বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের ভূমিকা