কুষ্টিয়া, ১২ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): দীর্ঘদিন পর কৃষকরা এবার মৌসুমের শুরুতেই গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প থেকে পানির সরবরাহ পাচ্ছেন। এর ফলে কুষ্টিয়া জেলায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পৌঁছাবে, পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার কৃষকরাও সেচ সুবিধা পাবেন। এতে কৃষকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে, কারণ এবার বোরো আবাদে বিঘাপ্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ কমবে।
কৃষকরা জানান, গত দুই-তিন মৌসুম ধরে সেচ সুবিধা না পাওয়া যাওয়ার কারণে তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে, এবার আগেভাগে পানি পাওয়ায় তারা অনেক স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের কৃষক সুমন আলী জানান, তারা প্রথমে মনে করেছিলেন জিকে সেচ প্রকল্পের পানি পাবেন না, কিন্তু এখন পানির আগমন তাদের জন্য বাড়তি সুবিধা এনে দিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এই সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকরা ভালো মুনাফা পাবে। বোরো মৌসুমে সেচ খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা উপকৃত হবেন, বিশেষ করে আউশ ধান চাষে কৃষকরা আরো বেশি লাভবান হবেন। তিনি জানান, এ বছর কুষ্টিয়ায় বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬,৪৬৪ হেক্টর জমি, কিন্তু আবাদ হয়েছে ৩৫,৯৯৬ হেক্টর জমিতে।
জিকে সেচ ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সভাপতি সাফায়েত হোসেন পল্টু বলেন, গত বছর খালে পানি সরবরাহ না হওয়ায় অনেক জমি অনাবাদি ছিল, তবে সেচ ব্যবস্থা সচল হলে ফসল উৎপাদন বাড়বে এবং পরিবেশ রক্ষা হবে। ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের পাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, ৬ মার্চ থেকে একটি পাম্প দিয়ে পানি সরবরাহ শুরু হয়েছে এবং একটি পাম্প সচল করার কাজ চলছে।
এছাড়া, কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রশিদুর রহমান জানান, জিকে সেচ প্রকল্পের খাল সংস্কারসহ পাম্প হাউজ আধুনিকায়ন করার জন্য ১,৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যা সরকারের পরামর্শ অনুযায়ী এক হাজার ৩০০ কোটি টাকায় বাস্তবায়িত হবে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।