টমেটো চাষে বিপ্লব : হাবিপ্রবি’র গবেষণায় নতুন সম্ভাবনা

দিনাজপুর, ১৪ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): টমেটো চাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। কৃষি অনুষদের প্লান্ট প্যাথলজি বিভাগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ট্রাইকোডার্মার বায়োফান-জাইসাইড ব্যবহার করে টমেটোর রোগ দমন এবং উচ্চ ফলন নিশ্চিত করা সম্ভব।

গবেষণা ও ফলাফল

গবেষণা পরিচালনা করেছেন হাবিপ্রবি’র প্লান্ট প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মহিদুল হাসান ও পিএইচডি গবেষক মো. শরিফুল ইসলাম। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ট্রাইকোডার্মার বায়োফান-জাইসাইড প্রয়োগকৃত টমেটো গাছে অন্যান্য চাষ পদ্ধতির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ফলন হয়েছে।

গবেষণার মূল তথ্য:

বিষয়সাধারণ পদ্ধতিট্রাইকোডার্মা প্রয়োগকৃত
প্রতি গাছে টমেটোর সংখ্যা৪০-৪৫টি৯০টি
টমেটো সংরক্ষণের সময়৩-৪ দিন৪-৫ দিন
গাছের উচ্চতাস্বাভাবিকবৃদ্ধি পেয়েছে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকমবেশি
পুষ্টিগুণ (লাইকোপিন ও এসকরবিক এসিড)সাধারণউচ্চ

 

গবেষণার ধাপসমূহ

গবেষকরা ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে তিন মৌসুম ধরে গবেষণা চালান। মাঠপর্যায়ে ৬টি ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। মাটি ও বীজ পৃথকভাবে শোধন করে নির্দিষ্ট ট্রিটমেন্ট অনুযায়ী সার, কীটনাশক এবং ট্রাইকোডার্মা প্রয়োগ করা হয়।

গবেষণার প্রধান ধাপ:

  • বিভিন্ন ধরনের মাটির নমুনা সংগ্রহ ও ট্রাইকোডার্মা আইসোলেশন।
  • মলিকুলার টেস্টের মাধ্যমে ১৮টি ট্রাইকোডার্মার শনাক্তকরণ।
  • মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ ও ফলাফল বিশ্লেষণ।

 

কৃষকদের জন্য সম্ভাবনা

গবেষণার ফলে কৃষকরা জৈবিক উপায়ে ফসলের রোগ দমন করতে পারবেন। বিশেষত, টমেটোর ঢলে পড়া রোগ (কৃষকদের ভাষায় ‘স্ট্রোক রোগ’) নিয়ন্ত্রণে এই প্রযুক্তি কার্যকর হবে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমে আসবে, যা কৃষকদের লাভজনক চাষের সুযোগ করে দেবে।

 

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ড. মুহিদুল হাসান জানিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মার বায়োফান-জাইসাইড বাজারজাত করা হবে। এর ফলে প্রান্তিক কৃষকরাও সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। গবেষণা দল আশা করছে, এটি দেশের কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

টমেটো চাষে এই নতুন উদ্ভাবন কৃষকদের জন্য যেমন লাভজনক হবে, তেমনি দেশের কৃষি খাতকে আরো একধাপ এগিয়ে নেবে।