দুগ্ধবতী গাভীর জাত নির্বাচন , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৪ , পাঠ – ১৪.১ ,ভূমিকা আমাদের দেশে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধিতে, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও দারিদ্র দূরীকরণে দুগ্ধ খামারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দুগ্ধ খামার স্থাপনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপই একই সুতোয় গাঁথা। খামার স্থাপনের পূর্বে যেমন বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা করে কাজ করতে হয় ঠিক তেমনি খামার স্থাপনের পর খামারের বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সজাগ দৃষ্টি দিতে হয়। দুগ্ধ খামারের মূল উৎপাদিত দ্রব্য হচ্ছে দুধ। তাই দুধ বাজারজাতকরনের ব্যবস্থা সম্পর্কেও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। খামার স্থাপনের উদ্দেশ্যই হলো তা থেকে মুনাফা অর্জন করা। সুতরাং দুগ্ধ খামারের আয় ব্যয়ের হিসেব সম্পর্কেও জানা আবশ্যক।
দুগ্ধবতী গাভীর জাত নির্বাচন , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৪ , পাঠ – ১৪.১
এ ইউনিটের বিভিন্ন পাঠে দুগ্ধবতী গাভী ও মহিষের জাত নির্বাচন, গর্ভকালীন ও প্রসবকালিন গাভীর যত্ন, দুগ্ধবতী গাভীর যত্ন ও খাদ্য, নবজাত বাছুরের যত্ন, দুধ উৎপাদনে প্রভাবক বিষয়বসমূহ। বিশুদ্ধ দুধ উৎপাদন ও দুধ পরীক্ষা, দুধ সংরক্ষণ পদ্ধতি, বাণিজ্যিক ডেইরি ফার্ম পরিদর্শন ও প্রতিবেদন তৈরি, গর্ভবতী গাভী শনাক্তকরন নিয়ে তাত্বিক ও ব্যাবহারিকভাবে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

উন্নত জাতের গাভীর লক্ষণ (Sign of Hybrid Cow) একটি উন্নত জাতের দুধালো গাভীর লক্ষণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হল:
১. উন্নত জাতের গাভী সামঞ্জস্যপূর্ণ নিখুঁত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং সুন্দর ও আকর্ষণীয় চেহারার অধিকারী হবে ২. পিছনের অংশ বেশি চওড়া এবং দাঁড়ানো অবস্থায় পিছনের পা দুটি বেশি ফাঁক থাকে।
৩. দেহের আকার অনুপাতে বুকের ও পেটের বেড় গভীর হয়।
৪. ভালজাতের গাভীর পাঁজরগুলো আলাদা এবং স্ফীত দেখায় ।
৫. দেহ বেশ বড় এবং দেহের আকার সামনের দিকে সরু এবং পিছনের দিকে ভারী হয়।
৬. চামড়া পাতলা ও মসৃণ প্রকৃতির হয়।
৭. ভালজাতের গাভীর শরীর ঢিলেঢালা ও নাদুশ-নুদুশ হয়।
৮. ওলান সুগঠিত নরম, আকারে বড়, চওড়া এবং ওলান শক্তভাবে শরীরের সাথে আটকানো থাকে ।
৯. ওলানের বাট চারটি সমান আকৃতির ও সমান দূরত্বে অবস্থিত হবে।
১০. দুধ দোহনের আগে ওলান শক্ত থাকে এবং দোহনের পর চুপসে যায়।
১১. ওলানের সামনে নাভীর দিকে সুস্পষ্ট ও উন্নত দুগ্ধশিরা স্পষ্ট দেখা যায়।
১২. উন্নত জাতের গাভীর নাকের ছিদ্র বড় ও খোলা হয়।
১৩. একটি উন্নত ও স্বাস্থ্যবান গাভীর স্বভাব অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির হয়।

সারসংক্ষেপ
দেশী গাভী সংকরায়নের মাধ্যমে উন্নত জাতের গাভীর উদ্ভাবন করা হয়েছে। সুষম খাদ্য প্রদান ও স্বাস্থ্যসম্মত পালন ব্যাবস্থার মাধ্যমে একটি সংকর বা উন্নত জাতের গাভী হতে দৈনিক ২৫ লিটার পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়। উন্নত জাতের গাভী সাধারনত ত্রিকোনাকৃতির হয়। এদের দেহের আকার অনুপাতে বুকের ও পেটের বেড় গভীর হয়।
আরও দেখুন :
- ছাগলের রোগ ব্যবস্থাপনা , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৩ , পাঠ – ১৩.৬
- গবাদি প্রাণির অপুষ্টিজনিত রোগ , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৩ , পাঠ – ১৩.৫
- গবাদি প্রাণির পরজীবীজনিত রোগ (Parasitic disease) , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৩ , পাঠ – ১৩.৪
- গৃহপালিত প্রাণির ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৩ , পাঠ – ১৩.৩
- গৃহপালিত প্রাণির ভাইরাসজনিত রোগ , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৩ , পাঠ – ১৩.২
- বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের ভূমিকা