পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব

পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব – পাঠটি বাউবির “কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র” বিষয় এর ইউনিট – ৭ , পাঠ – ৭.১। খামার পরিকল্পনা বলতে খামার তৈরির পূর্বে কিছু বিষয়ে ধারণা থাকা অথার্ৎ কি করা হবে, কিভাবে করা হবে,আদিকাল থেকেইপোল্ট্রি মানুষের জীবন—জীবিকার সাথে জড়িত, যদিও আগে পারিবারিকভাবে অল্প সংখ্যক হাঁস—মুরগিই পালন করো হতো। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও প্রাণীজ আমিষের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।পোল্ট্রি একমাত্র সহজলভ্য প্রাণীজ আমিষের উৎস। শুধু তাই নয় অল্প সময়েপোল্ট্রি পালন করে সহজেই আয় করা যায়।

পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব

আজ থেকে ২০—২৫ বছর পূর্বে বাংলাদেশে তেমন কোন বাণিজ্যিক খামার ছিল না বললেই চলে। পূর্বে সরকারী উদ্যেগে হাতেগোনা কয়েকটি খামার থাকলেও আজ তার চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। বর্তমানে পোল্ট্রি পালন বলতে পারিবারিকভাবে ২৪টি হাঁস—মুরগি পালনের ধারণা বদলে গেছে। হাঁস—মুরগি ছাড়াও এর সাথে যুক্ত হয়েছেপোল্ট্রির অন্যান্য প্রজাতি, যেমন— রাজহাঁস, টার্কি, কোয়েল, কবুতর ইত্যাদি।

পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব , ইউনিট-৭ , পাঠ - ৭.১

যেখানে দেশি মুরগি থেকে বার্ষিক গড়ে ৪০—৫০টি ডিম ও মাত্র ১ কেজি মাংস পাওয়া যেত, সেখানে বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের মুরগি থেকে বার্ষিক গড়ে ২৫০—৩০০টি ডিম এবং ৪—৫ সপ্তাহে ১.৫—২.০ কেজি মাংস পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য দেশের স্বল্প আয়ের লোক, শিক্ষিত বেকার যুবক ও অর্ধশিক্ষিত জনগোষ্ঠীপোল্ট্রি পালনের দিকে ঝুঁকছে।পোল্ট্রি খামার থেকে স্বল্প সময়ে বিনিয়োগ করে ভালো লাভ পাওয়া যাচ্ছে।

এতে কারা জড়িত থাকবে এবং এর ফলাফল কি হবে, মোট কথা কিভাবে খামারকে লাভজনক করা যায় তার নিয়ে আগে থেকেই চিন্তা করা। যে কোন কাজের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে সুষ্ঠু পরিকল্পনার উপর।পোল্ট্রি খামার পরিকল্পনায় যেসব বিষয় গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন তা নিম্নরুপ:

১. স্থান নির্বাচন

২. মূলধন

৩.পোল্ট্রির বাসস্থান নির্মাণ

৪. উন্নত জাত নির্বাচন

৫.পোল্ট্রির খাদ্য, ভ্যাকসিন ও ঔষধ

৬. বাজারজাতকরণ

৭.পোল্ট্রি পালনের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ

পোল্টি্র খামার 3 পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব

 

১০০টি ব্রয়লারের খামারের আয়—ব্যয়ের হিসাব (২৮ দিনব্যাপী পালন):

 

Capture 156 পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব

 

১০০টি লেয়ারের খামারের আয়—ব্যয়ের হিসাব (৭২ সপ্তাহব্যাপী পালন):

Capture 157 পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাবCapture 158 পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব

 

বিঃ দ্রঃ এভাবে মুরগির সংখ্যা বাড়লে আয়ও বাড়বে। খাদ্য মূল্য কমানো গেলে আয়ের পরিমাণ বাড়বে। আর অল্প পরিসরের খামারের ক্ষেত্রে কোন শ্রমিক নিয়োগ না করে একজন খামারি নিজেই নিজের খামারের কাজ করলে শ্রমিকবাবদ কোন খরচই লাগবে না ও খামারে লাভের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।

 

পোল্টি্র খামার 1 পোল্ট্রি খামারের পরিকল্পনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব

সারসংক্ষেপ

পোল্টি্র পালন আদিকালে খামার হিসাবে না থাকলেও পারিবারিক ভাবে এর লাল—পালন হবে। তবে এর সংখ্যা খুবই নগন্য। সময়ের সাথে প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি পুরনের লক্ষ্যেপোল্ট্রি খামার এখন একটি শিল্প হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এর জন্য কিছু উপকরন আবশ্যক। আমাদের লাভ—লোকসান ব্যায়ের সাথে সরাসরি জড়িত। খামারের ব্যয় কমলে আয় বাড়বে। ব্রয়লায় খামার থেকে ৩৫ দিনে আয় হলেও লেয়ার খামার থেকে আয় পেতে বেশী সময় লাগে। খামারে মুরগির সংখ্যা যত বেশি হবে আয় তত বেশি হবে।

আরও পড়ুন:

Leave a Comment