বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয় নিয়ে আজকের আলোচনা। এটা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএজিএড ডিসিপ্লিনের, বীজ ও বীজ প্রযুক্তি – ১১০২ বিষয়ের, ইউনিট-৪ এর “মৃত্তিকার জৈবিক বৈশিষ্ট্য” বিষয়ক পাঠ।
Table of Contents
বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয়
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা:
কোন বীজ নমুনায় ওজন ভিত্তিতে শতকরা কত অংশ মূল শস্য বীজ আছে তা নির্ধারণের প্রক্রিয়াকে বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা বলে। একটি বীজের নমূনার মধ্যে প্রধানত ৪টি অংশ থাকে ।
বীজের নমূনার মধ্যে প্রধানত ৪টি অংশ:
(১) বিশুদ্ধ প্রজাতির বীজ
(২) অন্য প্রজাতির বীজ
(৩) আগাছা বীজ
(৪) জড় পদার্থ বীজের এই চারটি ভাগের মধ্যে বিশুদ্ধ বীজের অর্থ্যাৎ মূল শস্য বীজের শতকরা হার কত রয়েছে তা বের করাই হলো বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয়।
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি:
(ক) পিউরিটি বোর্ড বা বীজ বোর্ড
(খ) মাপক নিক্তি (+.০০১ গ্রাম)
(গ) সাদা কাগজ
(ঘ) পেট্রি—ডিস— মধ্যম ও বড় আকারের
(ঙ) চিমটা
(চ) স্ট্যান্ডযুক্ত ম্যাগনেফাইং গ্লাস পরীক্ষা পদ্ধতি:
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার ধাপ:
১। সর্বপ্রথম মাপক নিক্তি দ্বারা কার্য সম্পাদন নমুনার সঠিক ওজন নিন।
২। ওজন নেওয়ার পর সমস্ত বীজ পিউরিটি বোর্ডে ছড়িয়ে দিন। তারপর নিম্নলিখিত উপকরণ অংশের পৃথক পৃথক হিসেব করুন:
(ক) বিশুদ্ধ বীজ
(খ) অন্য প্রজাতির বীজ
(গ) আগাছা বীজ
(ঘ) জড় পদার্থ
এসব উপাদান যথাযথভাবে পৃথক করার জন্য এদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানার জন্য এ পাঠের শেষ দিকের আলোচনা মনোযোগ সহকারে পড়–ন।
৩। বাছাই করা প্রতিটি অংশ পৃথক পৃথক পেট্রিডিসে রাখুন। পৃথক করার সময় বীজ শনাক্তকরণের যেকোন সন্দেহের ক্ষেত্রে ম্যাগনিফাইং গ্লাস ব্যবহার করুন।
৪। তারপর প্রতিটি অংশের সঠিকভাবে (প্রয়োজনীয় সংখ্যক দশটি ঘর পর্যন্ত) পৃথক ওজন নিয়ে নিম্ন তালিকানুসারে হিসেব নির্ণয় করুন।
৫। মনে করি, সম্পাদনের নমুনার ওজন এ গ্রাম, তখন অন্যান্য ওজন ও বীজের বিশুদ্ধতার সূত্র নিম্নরূপ হবে:
কার্য সম্পাদনের নমুনার ওজন G গ্রাম কার্য সম্পাদনের নমুনা বিভিন্ন অংশে পৃথক করার পর মোট ওজন W গ্রাম এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে হিসেব শেষ করার পর যদি কার্য সম্পাদন নমুনা G ও W এর মধ্যে ৫% এর বেশি পাথক্য থাকে তাহলে পূনরায় পরীক্ষা করুন।
এখন আমরা বিশুদ্ধ বীজ, অন্য প্রজাতির বীজ, আগাছা বীজ ও জড় পদার্থ সম্পর্কে আলোচনা করব।
বিশুদ্ধ বীজ অংশ:
বিভিন্ন প্রজাতিভেদে বিশুদ্ধ বীজের সংজ্ঞা ভিন্নতর। সাধারণভাবে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বিশুদ্ধ বীজ অংশ শনাক্ত করা যাবে।
(১) সম্পূর্ণ অক্ষত ও সুস্থ বীজ
(২) ভাঙ্গা বীজের যে অংশে ভ্রণসহ বা ব্যতীয় ৫০% এর বেশি অবশিষ্ট আছে।
(৩) আংশিকভাবে অপূর্ণ বীজ ও সম্পূর্ণ চিটা বীজ বিশুদ্ধ বীজের অন্তভূক্ত হবে না। এ পরীক্ষার জন্য ম্যাগনিফাইং গ্লাস ব্যবহার করতে হবে।
- অন্য প্রজাতির বীজ অংশ: মূল প্রজাতির শস্য বীজ ব্যতীত সকল প্রকার বীজ অন্য প্রজাতির বীজের মধ্যে গণ্য হবে।
- আগাছা বীজ: পূর্ণ, অপূর্ণ, ফাটল ধরা বা ভাঙ্গা সকল শনাক্তকৃত আগাছা বীজ এ অংশে অন্তভুর্ক্ত হবে।
- জড় পদার্থ: উপরোল্লিখিত নিয়মে শনাক্তকৃত বিশুদ্ধ বীজ ও অন্য প্রজাতির বীজ, আগাছা বীজ ব্যতীত অবশিষ্ট অংশটুকু জড় পদার্থ বলে গণ্য হবে।
জড় পদার্থ নিম্নরূপ হবে:
১) মূল শস্য বা অন্য শস্য বীজে ৫০% এর কম অংশ অবশিষ্ট রয়েছে।
২) মুল শস্য বীজের বা অন্য শস্য বীজের বাইরে বা অভ্যন্তরে ছাতাগুটি বা কৃত্রিম গুল উৎপন্ন রয়েছে।
৩) মূল শস্যের বা অন্যান্য শস্যেও চিটা অংশ।
৪) খড়কুটা, পাতা, কান্ড ইত্যাদি।
৫) মাটি কণা, নুড়ি, ইটের টুকরা, ধুলাবালি, মৃত ও জীবিত কীটপতঙ্গ ইত্যাদি।
সূত্র:
- বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয় , বীজ উৎপাদন , ইউনিট-৪ , পাঠ-৪.৪
আরও দেখুন :