বীজের সংজ্ঞা, প্রকৃত ও কৃষি বীজের মধ্যে পার্থক্য এবং বীজের গুরুত , বীজ ও বীজ প্রযুক্তি ,বীজ কাকে বলে বা বীজের সংস্ঞা কী তা আপনার জানা দরকার। বীজ উদ্ভিদের বংশ বিস্তারের মাপাম হিসেবে কাজ করে। উত্ভিদতান্তিক বৈশিষ্ট্যাবলী এবং কৃষি কাজের বৈচিত্রাময় ব্যবহার অনুসারে বীজের সংজ্ঞা দু’রকম হতে পারে। প্রথমত, উত্ভিদতত্তানুসারে ফুলের পরাগরেণু দ্বারা ডিন্গক নিষিক্ত হবার পর পরিপক্ক ডিম্বককে বীজ বলে। যেমন ৪ পান, গম, পেপে বীজ।
Table of Contents
বীজের সংজ্ঞা, প্রকৃত ও কৃষি বীজের মধ্যে পার্থক্য এবং বীজের গুরুত , বীজ ও বীজ প্রযুক্তি
দ্বিতীয়ত, কৃষিতত্তানুসারে গাছের যে অংশ (শারীরিক বা জাননিক) বংশ বিস্তারের জন্য ব্যবহৃত হয় পাথরকুচির পাতা, বিভিন্ন ফুল গাছের শাখা-প্রশাখা, পান, গম ইত্যাদি। উপরিউক্ত সংজ্ঞা দ্বারা প্রকৃত বীজ ও কৃষি বীজের পার্থক্য নিরূপণ করতে পারি। প্রকৃত বীজ বা ধৌন বীজ হচ্ছে বীজত্বকদ্বারা আবৃত এক সুপ্ত ভ্রণপারী পরিণত ও নিষিক্ত ডিন্ক। আর গাছের যে কোন অংশ বিশেষ, যা উপযুক্ত পরিবেশে একই রকম গাছের বংশ বিস্তারের জন্য ব্যবহার হয়ে
থাকে, তাকে কৃষি বীজ বলে।
আলুর টিউবার বলতে আমরা যে আলু খাই তাকে বোঝায়। কলার সাকার বলতে কলার চারা বোঝায় যা মুখ্য বা তেউড় নামেও পরিচিত। আনারসের চারাকেও সাকার বলে। কচুর চারাকে কন্দ বা গুঁড়িকন্দ বলে।
বীজের গুরুত্ব
বীজ থেকে গাছ জন্মায় যা পৃথিবীকে ধূসর বিবর্ণ মরুভূমিতে পরিণত হতে না দিয়ে আচ্ছাদিত করে সবুজ বৃক্ষরাজিতে এবং পরিবেশকে বাসপোযোগী করে। বীজ মানুষের জন্য একটি সর্বোত্তম কল্যাণকর শক্তি। অতি ক্ষুদ্র একটি বীজ মাটিতে বপন করার পর তা সুন্দর, সতেজ ও বৃহৎ একটি গাছে রূপান্তরিত হওয়া নিঃসন্দেহে একটি শক্তি। মানুষ যখন আবিষ্কার করল বীজ থেকে গাছ জন্মায়, মানব সভ্যতার উন্মেষ তখন থেকেই শুরু। কৃষিতে বীজের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ বীজ কেবল ফসলের ফলন বৃদ্ধিই করে না, এর মান উন্নয়ন, কীট ও রোগাক্রমণ প্রতিরোধ, ভালো বাজার প্রাপ্তি এবং নির্দিষ্ট ভূ-প্রাকৃতিক অবস্হায়
কম খরচ করে অদিক ফলন পাওয়া কৃষকের একটি অন্যতম লক্ষ্য থাকে। রোগজীবাণু, পোকামাকড় ও আগাছা মুক্ত সে জক্ষারটি অর্জন করতে পারে। কৃষি ও পলাটী উন্নয়ন স্কুল জন্মানোর উপযোগিতা ইত্যাদি গুণাগুণও নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ফসল উৎপাদনে বীজকে একটি মৌলিক উপকরণ বলা যেতে পারে। অতএব কৃষি কাজে সম্পৃক্ত সকলেরই বীজের গুরুত্ব সম্পর্কে সমাক পারণা থাকা প্রয়োজন। নিমোক্ত বিষয়সমূহ সংক্ষেপে বীজের গুরুত্ব তুলে পরে।
১। বীজ ফসল উৎপাদনের প্রান মৌলিক উপকরণ।
২। উন্নত মানের বীজে উচ্চ ফলন হয়।
৩। ভালো বীজ পোকামাকড় ও গাছের রোগবালাই প্রতিরোপ করে।
৪। ভালো বীজ পরোক্ষভাবে উৎপাদন ব্যয় কমায়।
৬। বীজের মাপামে সংকরায়ন করে উন্নত জাতের বীজ উদ্ভাবন করা হয়।
৭। বীজ ব্যবসা খুবই লাভজনক।
৮। বীজের মাপানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
ঈ। বীজ প্রজাতি টিকিয়ে রাখার অনাতম প্থা।
১০। বীজের খামার বা বীজ বর্ণন খামার করে জীবিকা নির্বাহ করা খুবই লাভজনক।
১১। বীজের মাপ্যমে সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়ন করা যায়।
আসুন এসব বিষয়সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
বীজ ফসল উৎপাদনের প্রধান মৌলিক উপকরণ
ফসল উৎপাদনের জনা অন্যান কৃষি উপকরণ, যেমন $ঃ সার, সেচ, ও বালাইনাশকের ন্যায় বীজ একটি অন্যতম মৌল উপকরণ। কারণ বীজ বপন না করে অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করলে কোন ফসল আসবে না। কিন্তু বীজ বপন করে তন্যান্য যত্ত না নিলেও কিছু ফলন পাওয়া সম্ভব৷ ততএব উপরোক্ত বিষয়াদি বিবেচনা পূর্বক বীজকেই প্রপান মৌলিক উপকরণ বলা যায়।
উচ্চ ফলনশীল বীজে অধিক ফলন হয়
যেখানে জমি সীমিত এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে খাদ্যোৎপাদন বাড়ানোর জন্য উচ্চ কিছুটা সফলতা পাওয়া গিয়েছে। পূর্বে দেশী পান জাতের (যেমন ঃ ধারিয়াল, দুলার, কটকতারা ইত্যাদি) হেক্টর প্রতি ফলন ছিল ১.০-১৫ টন বর্তমানে উফশী বীজ ব্যবহার করে (বরি-পান ৩০, ৩১ ৩২ ইত্যাদি) হেক্টর প্রতি ৪-৬ টন ফলন পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া দেশী আলুর উৎপাদন যেখানে হেক্টর প্রতি ছিল ৮_-১০ টন সেখানে আপুনিক জাত (ডায়মন্ড, পেট্রোনিজ, মুলটা প্রভৃতি) বাবহার করে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ২৫৩০ টন।
ভালো বীজ রোগবালাই ও পোকামাকড় প্রতিরোধী
অনেক রোগের জীবাণু বীজবাহিত। তাছাড়া, বীজের স্তুপে পোকা, রোগজীবাণু ও আগাছার বীজে মিশ্রিত থাকতে পারে। বর্তমানে বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাপামে এগুলো দূর করা সম্ভব হচ্ছে এবং প্রত্যায়িত ভালো বীজ কৃষকের মগ বিতরণ করা যাচ্ছে।
ভালো বীজ উৎপাদন ব্যয় কমায়
কম খরচ করে অপিক ফলন পাওয়া কৃষকের একটি অনাতম লক্ষা থাকে। রোগজীবাণু পোকামাকড ও আগাছা মুক্ত ভালো বীজ বাবহার করে কৃষক সে লক্ষি অন করতে পারে। সেক্ষেত্রে কীটনাশক, বালাইনাশক এবং আগাছা দমনের জনা শ্রমিক বায় কমে আসবে।
বীজ উন্নত জাত উদ্ভাবনের মাধ্যম
বিজ্ঞানের একটি অন্যতম অবদান হলো উদ্ভিদের বিভিন্ন জাতের মধ্যে বিদ্যমান বৈশিষ্টাসমৃহকে সংকরায়নের মাপামে একটি জাতে সংযোগ করা সম্ভব। এ প্রক্রিয়াটি যে সমস্ত ফসল উদ্ভিদতান্তিক বীজ উৎপন্ন করে কেবল সেক্ষেত্রে সম্ভব। যেমন ঃ বি আর-৩ পান দুইটি জাতের পানের বীজের সাথে সংকরায়ন পদ্ধতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে।
বীজ ব্যবসার উপাদান
বর্তমানে বীজ ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। বিভিন্ন বীজের ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করেছে এমন নজিরও এদেশে আছে। বিশেষ করে তরমুজ, বীপাকপি, ফুলকপি ও আলু বীজের ব্যবসা খুবই লাভজনক।
বীজের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব
উন্নত জাতের বীজ ও হাইবরীড বীজ উৎপাদন করে তান্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাজার তৈরি করে বৈদেশিক ঘুদ্রা অর্জন করা যায়। বীজ রপ্তানি করে জাপান, তাইওয়ান, ডেনমার্ক, হল্যান্ড উন্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।
বীজ প্রজাতি টিকিয়ে রাখার অন্যতম পশ্থা
গাছ থেকে যে বীজ উৎপন্ন হয়, সেই বীজ অনুরূপ গাছ উৎপাদনে সন্দম। সুতরাং যুগ যুগ পরে বীজ তার প্রজাতি টিকিয়ে রাখছে।
আরও দেখুন: