আজ দেখবো মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষা এর ব্যবহারিক ক্লাস। এই পাঠটি বাউবি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান – ১২০৪ কোর্সের ইউনিট ৩ এর, ৩.৬ নম্বর পাঠ। বাউবি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান – ১২০৪ কোর্সের প্রতিটি অধ্যায় শেষেই এইরকম ব্যবহারিক ক্লাসের উদাহরণ রয়েছে।
মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষা
মৃত্তিকা পরিবেশ ও প্রকৃতির মহামূল্যবান সম্পদ। মানুষ মৃত্তিকাকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে। ইহা গাছপালা জন্মানোর বাহক। চারদিকে মৃত্তিকার সাধারণ বিস্তৃতি, আকার, আকৃতি ও বাস্থবচিত্র দেখে ইহার রাসায়নিক গুণাবলীর কথা চোখে ভাসে না। কৃষি ক্ষেত্রেই মাটির ব্যবহার সবচেয়ে অধিক, এবং এ সর্বোত্তম ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হলে মৃত্তিকার রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যসমূহ নিয়ে জ্ঞান লাভ প্রয়োজন মৃত্তিকার রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সমূহ মাটির উর্বরতা, মৃত্তিকাস্থিত পানির গুণাবলী ও গাছপালার পুষ্টিমান নিয়ন্ত্রণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে।
শিলা ও খনিজ পরিচিতি , ব্যবহারিক , মৃত্তিকা বিজ্ঞান ,মৃত্তিকা একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাকৃতিক মিশ্র পদার্থ। ক্ষয়ীভূত শিলা ও খনিজ দ্রব্যের সাথে বিভিন্ন রকম জৈবদ্রব্য পানি ও বায়ুর মিশ্রণই মৃত্তিকা। ফলে বিভিন্ন স্থানের মৃত্তিকার গুণাবলীতে বিরাট পার্থক্য দেখা যায়। কণার আকার, বুনট, সংযুক্তি, ঘনত্ব, বর্ণ, বায়ুচলাচল, তাপমাত্রা প্রভৃতি মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্য। বুনট ও সংযুক্তি মৃত্তিকার দুটি মৌলিক ধর্ম কারণ এ দুটি উপাদান মৃত্তিকার উর্বরতা ও উৎপাদনক্ষমতা বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া মৃত্তিকার ঘনত্ব, রক্ত পরিসর, দৃঢ়তা, তাপমাত্রা, বর্ণ ইত্যাদি সামগ্রিকভাবে মৃত্তিকায় ফসল উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।
সুতরাং মৃত্তিকাকে সফলতার সাথে কৃষি কাজে ব্যবহার করতে হলে উল্লিখিত ভৌত বৈশিষ্ট্যাবলী সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। এ ইউনিটে মৃত্তিকার কণা, মৃত্তিকার গঠন ও বুনট, সংযুক্তি, ঘনত্ব, বর্ণ ও তাপমাত্রা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মৃত্তিকার কণা (Soil seperates), বুনট, সংযুক্তি, ঘনত্ব, রন্ধ্র পরিসর, বর্ণ, তাপমাত্রা ইত্যাদি হলো। মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্য।
এ ইউনিটে মৃত্তিকার রাসায়নিক উপাদান, মৃত্তিকা দ্রবণ, অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব, মৃত্তিকা কোলয়েড, আয়ন বিনিময় ক্ষমতা প্রভৃতি মৃত্তিকার রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যসমূহ সমন্ধে বিস্থারিত আলোচনা করা হয়েছে।
মাটির আর্দ্রতা দু’টি পদ্ধতিতে নির্ণয় করা যায়:
১। গ্রেভিমেট্রিক বা ওজন পদ্ধতি
২। টেনসিওমিটার পদ্ধতি
গ্রেভিমেট্রিক পদ্ধতিতে মাটির আর্দ্রতা নির্ণয় প্রয়োজনীয় উপকরণ:
১।এলুমিনিয়াম পাত্র
২।ওভেন বা চুল্লী
৩। ডেসিকেটর
8।পেন্সিল বা মার্কার কলম
৫ । নমুনা মাটি
৬। নিক্তধাপ
কাজের ধাপ:
১। একটি খালি পরিস্কার এলুমিনিয়াম পাত্র নিন।
2 । নিক্তিতে খালি পাত্রটির ওজন নিন।
৩। এবার পাত্রে নমুনা মাটি রাখুন ও নিক্তিতে ২০-৩০ গ্রাম পরিমাণ ওজন নিন।
8। পাত্রের কিনারায় কিংবা নিচে পরিচিতির নম্বর বসান।
৫ ৷ তারপর পাত্রটি ওভেন বা চুল্লীর ভিতর ঢুকান ।
৬।চুল্লীটি ১০৫° সেঃ তাপে ১৬-২৪ ঘন্টা রাখুন।
৭। পাত্রটি চুল্লী থেকে বের করুন এবং ডেসিকেটর কিংবা টেবিলে রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা করুন।
৮। এবার শুকনো মাটি সহ পাত্রটির নিক্তিতে ওজন নিন ।
ডাটা:
১ ا খালি পাত্রের ওজন = ক
২। ভিজা মাটিসহ পাত্রের ওজন = খ
৩। শুকনা মাটিসহ পাত্রের ওজন = গ
হিসাব:
মৃত্তিকায় শতকরা পানির পরিমাণ (%) =
ফলাফল : প্রাপ্ত মৃত্তিকার সঠিক আর্দ্রতার শতকরা পরিমাণ লিখে নিন।
সাবধানতা:
১। মাটির ওজন তাড়াতাড়ি নিন এবং কখনও খুব শুকনো মাটি নিবেন না।
২। পাত্রের উপর আপনাদের গ্রুপ অথবা আপনার রোল নম্বর লিখুন যাতে ঐটি না হারায়।
৩। অতিরিক্ত ভিজা মাটি কখনও নিবেন না।
8। অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পাত্রটি চুল্লীতে রাখুন।
৫ । তাপমাত্রা ১০৫° সেঃ রাখুন, কম বেশি হলে সঠিক ফলাফল পাবেন না।
উল্লেখিত সকল কার্যক্রম আপনার ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করুন ।
সূত্র:
- মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষা , ব্যবহারিক , পাঠ ৩.৬, ইউনিট ৩ , ১২০৪, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, বিএজিএড, বাউবি।
আরও দেখুন: