মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১

মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যাবলী মৃত্তিকার কণা (Soil seperates), বুনট, সংযুক্তি, ঘনত্ব, রন্ধ্র পরিসর, বর্ণ, তাপমাত্রা ইত্যাদি হলো মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্য। এসব বৈশিষ্ট্যের ওপর মৃত্তিকার উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতা নির্ভরশীল। মৃত্তিকা বিজ্ঞানের যে শাখায় মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে মৃত্তিকা পদার্থ বিদ্যা (Soil Physics) বলা হয়। মৃত্তিকা পদার্থবিদ্যা মৌলিক ও ব্যবহারিক মৃত্তিকা বিজ্ঞানে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া প্রযুক্তিবিদ্যায় মৃত্তিকা পদার্থবিদ্যার গুরুত্ব অনেক বেশি।

মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান

কৃষিতে মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যাবলীর গুরুত্ব

মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিম্নবর্ণিত কার্যাবলী সম্পন্ন করে :

১। মৃত্তিকা তাপমাত্রা ও বায়ুচলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।

২। পানি চলাচল এবং ভূমিক্ষয়ের হ্রাস বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।

৩। মৃত্তিকায় বীজের অংকুরোদগম হার ও গতি নিয়ন্ত্রণ করে।

8। উদ্ভিদের শিকড়ের অনুপ্রবেশ, প্রতিষ্ঠা ও বিস্তৃতি নিয়ন্ত্রণ করে।

৫। উদ্ভিদের ধারণ ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে।

৬।মৃত্তিকাস্থ অণুজীবের কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে।

৭। মৃত্তিকা পানি ও পুষ্টি উপাদান ধারন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।

৮। সেচ ও নিকাশ এর কার্যকারিতার ওপর প্রভাব বিস্তার করে।

মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান

মৃত্তিকা কণা (Soil particles or Soil seperates )

মৃত্তিকা খনিজ পদার্থের মধ্যে তিনটি অংশ রয়েছে। ২ মিলিমিটারের কম ব্যাস বিশিষ্ট খনিজ কণাকে মৃত্তিকা কণা বলে। ২ মিলিমিটারের চাইতে বড় পদার্থকে গ্রাভেল বা নুড়ি বলা হয়। কিন্তু 0.0005 মি.মি. এর চাইতে ক্ষুদ্র খনিজকে কোলয়ডাল কে বলে। মাটিতে প্রধানত তিন ধরনের মৃত্তিকা কণা দেখা যায়। এগুলো হলো বালি, পলি ও কর্দম কণা। মৃত্তিকা খনিজ (অজৈব) অংশ থেকে মৃত্তিকা কণার সৃষ্টি। যেমন : কোয়ার্টজ (SiO2) থেকে বালি কণা, ফেল্ডস্পার থেকে পলিকণার সৃষ্টি ইত্যাদি। তালিকা : আকার অনুযায়ী মৃত্তিকা খনিজ পদার্থের শ্রেণিবিন্যাস

Capture 13 মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১

মৃত্তিকা কণার শ্রেণিবিন্যাস ( Classification of soil particles ) মৃত্তিকা কণাসমূহকে তাদের কাজের ওপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে। একে মৃত্তিকা কণার বিভক্তিকরণও বলা হয়। বালি, পলি ও কর্দম কণাসমূহকে তাদের ব্যাসের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিভাগের জন্য তিনটি পদ্ধতি রয়েছে।

পদ্ধতিগুল হলো :

১। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিভাগের পদ্ধতি বা ইউ এস ডি এ পদ্ধতি (United States Department of Agriculture System)
২। আন্তর্জাতিক পদ্ধতি (ISSS System International Society of Soil Science System)
৩। মোহরের দশ ভগ্নাংশ পদ্ধতি (Mohr’s 10 Fractions System)

মৃত্তিকা কণার শ্রেণিকরণ

১। ইউ এস ডি এ পদ্ধতি (USDA System )

Capture 14 মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১

Capture 15 মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১

বালু কণা (Sand particles )

বালু কণায় সাধারণতঃ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ পরিলক্ষিত হয়

১। বালুকণা স্বল্প ক্ষয়ীভূত শিলাদ্রব্যের ক্ষুদ্রাকার চূর্ণ এবং ইহাতে উদ্ভিদের জন্য অত্যাবশকীয় খাদ্যোপাদান থাকে না বললেই চলে।

২। কণাগুলো সহজে একটা আর একটার সাথে লেগে থাকে না।

৩। এদের দ্বারা গঠিত রন্ধগুলো বড় হওয়ায় বায়ু ও পানি সহজেই চলাচল করতে পারে।

৪।  ইহাদের জৈব ও অজৈব পদার্থের ধারন ক্ষমতা কম।

৫। এরা ভূমিক্ষয় ত্বরান্বিত করে এবং মরুভূমি গঠনে সহায়তা করে।

৬।  যে সমস্ত ফসল ভূনিম্নস্থ কান্ড বা শিকড়ের জন্য চাষ করা হয় বা গভীরমূলী, সেগুলো বেলে মাটিতে ভাল হয়। যেমন : গোলআলু, মিষ্টি আলু প্রভৃতি।

৭। এদের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল খুবই কম।

৮। এদের ক্যাটায়ন বিনিময় ক্ষমতা ( CEC ) 0-5 me / ১০০ গ্রাম মাটি।

৯। এদের কণার ব্যাস ২.০০ ০.০২ মিলিমিটার।

পলি কণা (Silt particles )

পলি কণায় সাধারণতঃ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ পরিলক্ষিত হয়

১। পলি মাটি হাতে নিলে অনেকটা ময়দার গুঁড়ার মত মনে হয় এবং উক্ত মাটির মাঝে কিছু বড় রন্ধ থাকে।

২।  বালি হতে পলিমাটির পানির ধারণ ক্ষমতা বেশি।

৩। ইহাদের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল মধ্যম যা বালি কণার ক্ষেত্রফল হতে বেশি, প্রায় ২০ গুণ কিন্তু কর্দম কণা হতে কম।

৪।  পলি মাটির উদ্ভিদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যোপাদান ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি। এ কণার ব্যাস ০.০২-০.০০২ মিলিমিটার।

কর্দম কণা (Clay particles)

কর্দম কণার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ—

১। কর্দম কণা মাটি কণার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র খনিজ দ্রব্য। ফলে খালি চোখে এদের একক কণা দৃষ্টিগোচর হয় না।

২। এদের পানি শোষণ ক্ষমতা খুবই কম কিন্তু পানি ধারণক্ষমতা খুবই বেশি।

৩। এরা শুকালে শক্ত হয়ে যায় কিন্তু ভিজা অবস্থায় আঠার মত মনে হয়।

৪।  কর্দম কণা মাটির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাবলীতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে এবং উদ্ভিদের খাদ্যোপাদান সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫। এদের পৃষ্টতলের ক্ষেত্রফল খুব বেশি।

মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান

৬। এ কণার ব্যাস ০.০০২ মিলিমিটারের চাইতে কম।

মাটি কণার আকার বিশ্লেষণ (Particle size analysis )
কোন মাটিতে বালি, পলি ও কর্দম কণার পরিমাণ যে পদ্ধতিতে নির্ণয় করা হয় তাকে মাটি কণার আকার বিশ্লেষণ বলে। মৃত্তিকা বুনট জানাই মৃত্তিকা কণার আকার বিশ্লেষণের প্রধান উদ্দেশ্য।

মাটির কণার আকার বিশ্লেষণ নিম্নলিখিত দুটি ধাপে করা হয় :

১। মৃত্তিকার দলার পূর্ণ বিচ্ছুরণ করে পৃথক পৃথক কণায় বিভক্তিকরণ।
২। বিচ্ছুরিত মৃত্তিকা কণার আকার ভিত্তিক পরিমাণ নির্ণয়।

১। মৃত্তিকা দলের বিচ্ছুরণ : মৃত্তিকার কণাগুলো একসাথে লেগে থেকে মৃত্তিকা দলার সৃষ্টি করে। মাটিতে অধিক পরিমাণ জৈব পদার্থ, আয়রন (Fe2O3) ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (A12O3), ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেট (CaCO3, M, CO3) থাকে। আর এদের বন্ধন গুণাবলী থাকায় মৃত্তিকা দলার সৃষ্টি হয়। ফলে কণাগুলো বিচ্ছুরণে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এদেরকে সিমেন্টিং পদার্থ বলে। তাই বিশ্লেষণের পূর্বে এ সকল দ্রব্য দ্রবীভূত করার প্রয়োজন হয়। রাসায়নিক পরিশোধন দ্রবা প্রয়োগ করে এগুলো নষ্ট করা হয়। বিচ্ছুরণের সাহায্যে শুধুমাত্র মৃত্তিকা দলাকে ভাঙ্গা যায় কিন্তু পৃথক পৃথক কণায় পরিণত করা যায় না।

নিম্নলিখিত কয়েকটি ধাপে পরিশোধন কাজ সমাধা করা হয়

১। মাটি গুঁড়া করে ২ মি.মি. ব্যাসযুক্ত চালুনী দ্বারা চেলে নেওয়া হয়।

২। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড প্রয়োগ করে জৈব পদার্থ দূর করা হয়। H₂O₂+O.M→ CO2 [O.M.= Organic matter]

৩। হাইড্রোক্লোরিক এসিড প্রয়োগ করে আয়রন ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড এবং ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনোশিয়াম দূর করা হয়।

Fe₂03+6HC1 → FeCl3+3H20,
A1203+6HC1 2A1C13 + 3H2O
CaCO3+2HC1 → CaCl2 + CO2 + H20
MgCO3 + 2HC1 → MgCl2 + CO2 + H20

৪।  কাদা কণার বিচ্ছুরণের জন্য সোডিয়াম হেক্সামেটা ফসফেট (NaPO3), সোডিয়াম কার্বনেট (Na2CO3), সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (N, OH), সোডিয়াম অক্সালেট (Na2CO3), লিথিয়াম কার্বনেট (Li2CO3) ইত্যাদি যোগ করা হয়।

৫। যান্ত্রিক মিশ্রণ সহযোগে মাটি কণা বিচ্ছুরণ করা হয়।

বিচ্ছুরিত মৃত্তিকা কণার আকারভিত্তিক পরিমাণ নির্ণয়

এ পদ্ধতিতে বালি, পলি ও কর্দম কণার পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। বালি পলি ও কর্দম কণার পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য তলনীকরণ ও চালুনীকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।

তলানীকরণ

বিচ্ছুরিত মৃত্তিকা কণা ১০০০ সি.সি সিলিন্ডারে নিয়ে পানি ভর্তি করে উহার মুখে ছিপি আটকিয়ে উপর ও নিচে ঝাকিয়ে মৃত্তিকা কণার তলানী পড়তে দেওয়া হয়।

দুটি প্রক্রিয়ায় তলানীকরণ পদ্ধতির সাহায্যে মৃত্তিকা কণার পরিমাণ নির্ণয় করা যায়

১। হাইড্রোমিটার পদ্ধতি, ও
২। পিপেট স্যাম্পলিং পদ্ধতি৷

মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান

মৃত্তিকা কণার আকার বিশ্লেষণের মূলনীতি বা হাইড্রোমিটার পদ্ধতির মূলনীতি

কোন মাধ্যমে মৃত্তিকা কণার পতনের গতি নির্ভর করে উহার আকার, আয়তন, ঘনত্ব ও তলের ওপর। কোন মাধ্যম যেমনঃ পানিতে একই ঘনত্ব বিশিষ্ট বড় মৃত্তিকা কণাগুলো ছোট মৃত্তিকা কণা অপেক্ষা অতি দ্রুত নিচে জমা হয়। ইহার পর সময়ের ব্যবধানে তুলনামূলকভাবে ক্ষুদ্রকার কণাগুলোর তলানী পড়তে থাকে। পতন গতির ওপর ভিত্তি করে মৃত্তিকা কণা পৃথক করা হয়।
একটি তরলে নিক্ষিপ্ত বা পতিত মত্তিকা কণার ক্ষেত্রে
Capture 16 মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১Capture 17 মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১

উপরের সূত্র হতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, একটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থের ভিতর দিয়ে একই ঘনত্বের কঠিন কণাসমূহের পতনের গতি তাদের ব্যাসার্ধের বর্গমানের সাথে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ Var কেননা Pp. PL ও n ধ্রুব থাকে।
চালুনীকরণ এ প্রক্রিয়ায় মাটি গুঁড়া করে ২ মি.মি হতে ০.০০২ মি.মি ব্যাসের ছিদ্রযুক্ত চালুনী দ্বারা ঢেলে নেওয়া হয় এবং আকার অনুযায়ী মৃত্তিকা কণাগুলো পৃথক করা হয়।

অসুবিধা

২-০.০০২মিঃ ব্যাসের চালুনী পাওয়া খুবই দুরহ। কণাগুলোর আকারে বিভিন্নতা জনিত অসুবিধা দেখা দেয়।
স্টোকস এর সূত্র (Stokes’ law)
বিজ্ঞানী স্টোকস (Stokes’) (১৮৫১) সর্বপ্রথম বলেন যে, তরল পদার্থের মধ্যে কণার বা দ্রব্যের পতনের গতি পতন কণাটির বা দ্রব্যটির ব্যাসার্ধের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সূত্রটি হচ্ছে : কোন একটি কণা তরল পদার্থের ভিতর দিয়ে পতনের সময় তরল পদার্থটি কণার পতনে যে বাধা সৃষ্টি করে তা কণাটির ব্যাসার্ধের ওপর নির্ভরশীল, পৃষ্ঠতলের উপর নয়। এ সূত্রানুসারে,

Capture 17 মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যের ধারনা ও গুরুত্ব , মৃত্তিকা বিজ্ঞান , ইউনিট ২ , পাঠ ২.১

উপোরোক্ত সমীকরণ হতে বুঝা যায় যে, একটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থের ভিতর দিয়ে একই ঘনত্বের কঠিন কণাসমূহের পতনের গতি তাদের ব্যাসার্ধের বর্গমানের সাথে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ Var কারণ dp ও N ধ্রুবক থাকে।

স্টোকস (Stokes) এর সূত্রের অনুমিত শর্তাবলী

স্টোকস (Stokes) এর সূত্রের সত্যতা কতকগুলো মৌলিক শর্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত। শর্তাবলী নিম্নরূপ

১। তরল পদার্থের অণুর চেয়ে মৃত্তিকা কণার আকার অবশ্যই বড় হতে হবে যাতে ব্রাউনিয়ান গতি কণার পতনে বাধা সৃষ্টি না করে।

২। পতন নলে পতন দ্রব্যের তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণে তরল দ্রব্য থাকতে হবে যাতে কোন কণার পতন অন্য কোন কণার দ্বারা বিঘ্নিত না হয় অথবা পাত্রের প্রাচীরের নৈকট্য দ্বারা কণার পতন প্রভাবিত না হয়।

৩। কণাগুলো অবশ্যই দৃঢ় ও মসৃন হতে হবে। অন্যথায় গলে যাবে।

৪। তরল পদার্থ ও কণাগুলোর মধ্যে কোন পিচ্ছিলতা থাকবে না।

৫।  কণার পতনের গতি নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি হবেনা। তরলের সান্দ্রতা কণার পতনে বাধা সৃষ্টি করবে।

স্টোকস (Stokes’) এর সূত্রের সীমাবদ্ধতা

সকল মৃত্তিকা কণা একই আকৃতির নয়, যেমনঃ বালি কণা গোলাকার অন্যদিকে কর্দম কণা প্লেট আকৃতির। বিভিন্ন আকৃতির কণা বিভিন্ন গতিতে পড়বে। সুতরাং ইহা স্টোকস (Stokes) এর সূত্রের একটি বড় বাধা। কণার পতনের গতি মাধ্যমের সান্দ্রতার পরিবর্তনের বিপরীতভাবে পরিবর্তিত হয় অর্থাৎ

 

এজন্য বিশ্লেষণের সময় একটি জানা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক। যেমন : ১৫°C তাপমাত্রায় চেয়ে ৩০°C তাপমাত্রায় একটি কণার পতন গতি ১২% বৃদ্ধি পায়। তা মৃত্তিকা কণার ঘনত্ব স্টোকস (Stokes) এর সূত্র প্রয়োগের আরও একটি বড় বাধা। কণা সমূহের ঘনত্ব খনিজ ও রাসায়নিক উপাদান এবং পানিযোজনের মাত্রার ওপর নির্ভর করে। এমনকী কোন কণার ঘনত্ব সঠিকভাবে নির্ণয় করাও কঠিন।

যেমন : একটি পানিযোজিত কণা অপানিযোজিত কণা অপেক্ষা তাড়াতাড়ি পড়বে। যেহেতু কণার পতনের গতি একটি নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি হবে না এজন্য পলিকণার চেয়ে বড় কণার গতি যেমনঃ বালি কণার পতন গতি এ সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা যাবে না।

আরও দেখুন:

Leave a Comment