শিমজাতীয় গাছের শিকড়ের নড়্যুল পরীক্ষা নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি বাউবি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান – ১২০৪ কোর্সের ইউনিট ৪ এর, ৪.৬ নম্বর পাঠ। বাউবি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান – ১২০৪ কোর্সের প্রতিটি অধ্যায় শেষেই এইরকম ব্যবহারিক ক্লাসের উদাহরণ রয়েছে।
Table of Contents
শিমজাতীয় গাছের শিকড়ের নড়্যুল পরীক্ষা, ব্যবহারিক
হ্যাংগিং ড্রপ বা ঝুলন্ত ফোটা পদ্ধতিতে নড্যুল (অর্বুদ) পরীক্ষা:
সাধারণত মৃত্তিকায় বায়ু চলাচল সুবিধাদি, তাপমাত্রা, স র্যালোক, ক্যালসিয়াম ও পিএইচ বা অম্লমান, মৌলিক পদার্থের পরিমাণ ইত্যাদি উপাদান এ জাতীয় ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সহায়ক। শিমজাতীয় গাছ একর প্রতি ২৫-৫০ কেজি নাইট্রোজেন সংযোজন করে থাকে, তবে মাসকলাই ১৯ কেজি, মুগ ১৭ কেজি, মসুর ২৮ কেজি, বরশিম ২৭ কেজি, বরবটি ২৫ কেজি ও মেথি ৩০-৬০ কেজি নাইট্রোজেন একর প্রতি বাতাস থেকে মাটিতে মওজুদ করে।
সাধারণত মৃত্তিকায় জৈব পদার্থ শতকরা ৫ ভাগের কম থাকে। কিন্তু গুরুত্বের ভিত্তিতে একে মাটির প্রাণ বলা হয়। লক্ষ লক্ষ জীব ও উদ্ভিদ মাটিতে বসবাস করে। এরা সবাই জৈব পদার্থ থেকে তাদের খাদ্য গ্রহণ করে। আবার জৈব পদার্থ অণুজীবের বাসস্থান ও খাদ্য যোগায়। মৃত্তিকায় সুস্থ পরিবেশ রক্ষার জন্য জৈব পদার্থের ভূমিকা অতুলনীয়। মৃত্তিকা আবার জৈবিক বৈচিত্র্যতায় পরিপূর্ণ। এখানে জৈব পদার্থের চারপাশে ভরে রয়েছে বড়জীব ও অণুজীব। মৃত্তিকায় জৈবিক কর্মকান্ড ব্যাহত হলে চাষাবাদ সম্ভব নয়। এ ইউনিটে মৃত্তিকার জৈবিক উপাদান, জৈব পদার্থের গুরুত্ব, মৃত্তিকা জীব, মৃত্তিকা অণুজীব ও মৃত্তিকা অণুজৈবিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ :
(১) তাজা নড্যুল
(২) ওয়াচ গ্লাস বা পেট্রিডিশ
(৩) পরিস্কার পানি
(৪) লুপ যুক্ত বিশেষ নিড়ল/সুই
(৫) গ্লাস রড
(৬) হলো বা গর্তযুক্ত পাইড
(৭) কভার পিপ ও
(৮) অণুবীক্ষণ যন্ত্ৰ
কাজের ধাপ:
১। মাঠ থেকে সুস্থ ও সতেজ শিম জাতীয় গাছের নড্যুলসহ শিকড় সংগ্রহ করুন।
২। নড্যুল (অর্বুদ) নিয়ে ভালভাবে পরিস্কার পানি দিয়ে ধৌত করুন।
৩। নড্যুল সমূহ তারপর ওয়াচ গ্লাস বা পেট্রিডিশে রাখুন।
8। কাঁচের রড বা দন্ড দিয়ে আস্তে চাপ দিয়ে ভাঙ্গুন।
৫ । টিউবওয়েল/পাতিত অথবা পরিস্কার পানি দিয়ে নির্যাস বা সাসপেনসন তৈরি করুন।
৬। নড্যুলের খোসা ফেলে দিনে।
৭। এবার পরিষ্কার হলো বা গর্তযুক্ত বিশেষ পাইড ও কভার পিপ নিন।
৮।কভার পিপের মাঝখানে সুইয়ের মাথার লুপ দিয়ে এক ফোটা সাসপেনসন রাখুন।
৯। কভার পিপের চার পাশে সামান্য আঠালো দ্রব্যাদি দিন ।
১০। পাইডটির গর্তের দিকটা পরীক্ষা করে গর্তটি ঠিক কভার পিপের মাঝখানে পড়ে এরূপভাবে বসান।
১১। কভার পিপে চাপ রেখে উল্টো করুন যাতে কভারশিপ পাইডের উপরের দিকে থাকে। তারপর অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কভার পিপের ভিতর ড্রপটি পর্যবেক্ষণ করুন।
পর্যবেক্ষণ:
১। ব্যাকটেরিয়ার গতি চোখে ভাসলে বুঝতে হবে জীবন্ত বা মোটাইল ব্যাকটেরিয়া।
২। ব্যাকটেরিয়ার গতি স্থির থাকলে বুঝতে হবে ননমোটাইল বা মৃত কিংবা স্থির গতিসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়া।
ফলাফল : পর্যবেক্ষণ থেকে লিখে নিন যে ব্যাকটেরিয়া মোটাইল নাকি ননমোটাইল ।
সাবধানতা:
১। আবশ্যই সতেজ ও ভাল গাছ বাছাই করুন যাতে শিকড়ে পর্যাপ্ত নড্যুল থাকে।
২। বৃদ্ধ গাছ আনবেন না।
৩। পরিস্কার পাইড ও কভার পিপ নিন।
8। বড় ড্রপ বা ২-৩ বার ড্রপ দিবেন না।
৫ ৷ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহয্যে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করুন যাতে কভার পিপ বা পাইড ভেঙ্গে না যায়।
৬ । অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রথমে কম ও পরে অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যান্স ব্যবহার করুন।
পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রয়োজনীয় উপকরণ, কাজের ধাপ, পর্যবেক্ষণ, ফলাফল ও সাবধানতা আপনার ব্যবহারিক খাতায় লিখে নিন। এবার আপনার টিউটরকে দেখিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিন।
সূত্র:
- শিমজাতীয় গাছের শিকড়ের নড়্যুল পরীক্ষা , পাঠ ৪.৬, ইউনিট ৪ , ১২০৪, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, বিএজিএড, বাউবি
আরও দেখুন: