আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-খামার ব্যবস্থাপনা
খামার ব্যবস্থাপনা
লাভজনকভাবে খামার স্থাপনে খামার ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যবস্থাপনা এক প্রকার কলাকৌশল যার মাধ্যমে খামারের সম্পদ, সুযোগ ও সময়ের সমন্বয় ঘটিয়ে খামারকে লাভজনক করা যায়। সুস্ট ব্যবস্থাপনা বলতে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও মিতব্যয়িতার মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করা বুঝায়।
খামারের গবাদি পশুকে সুস্থ সবল ও নিরোগ রেখে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়াই খামার-ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য। খামারের সঠিক ব্যবস্থাপনায় নিম্নে বর্ণিত দৈনন্দিন বিষয়ের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হয়।
১। আলো-বাতাস পূর্ণ উঁচু জায়গায় খামারের স্থান নির্বাচন করা। বাসস্থান স্বাস্থ্যসম্মত এবং প্রয়োজনমত হতে হবে।
২। রোজ সকালে গোয়ালঘর এবং গবাদি পশুর শরীর পরিষ্কার করা। সপ্তাহে ২ দিন জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে ঘর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
৩। প্রতিদিন একই সময়ে সকাল ও বিকালে গাভীর দুধ দোহন করা। দুধ দোহনের সময় স্বাস্থ্য সম্মত বিষয়গুলো পালন করা। বাছুরকে প্রয়োজনমত দুধ খাওয়ানো।
৪। গাভীর প্রয়োজনমত দানাদার ও আঁশ জাতীয় খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। কমপক্ষে ১৫ দিনের খাদ্য সর্বদা মজুদ রাখা। সবুজ ঘাস চাষের জন্য বাড়ির আঙ্গিনা বা পতিত জমি ব্যবহার করা।
৫। গাভীকে দৈনিক ৩-৪ কেজি সুষম দানাদার খাদ্য ও ১২-১৫ কেজি কাঁচা ঘাস ও ৩ কেজি খড় খেতে দেওয়া।
৬। পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার পানি খেতে দেয়া।
৭। খাবার ও পানির পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করা।
৮। সময়মত প্রজনন করানো।
৯। গাভীকে নিয়মিত গোসল করানো।
১০। নিয়মিত টীকা প্রদান। গাভী অসুস্থ হলে সংগে সংগে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
১১। অনুৎপাদনশীল গবাদি পশু বিক্রি করে তার স্থলে উৎপাদনশীল ভালো জাতের গাভী। পালন করা। বাছুরের সঠিকভাবে যত্ন নেয়া।
১২। দৈনিক খরচের হিসাব রেজিস্ট্রারে লিখে রাখা। ১৩। বিভিন্ন খাত হতে দৈনিক আয়ের হিসাব রেজিস্ট্রার লিখে রাখা।
১৪। যথাসময়ে খামারে উৎপাদিত পণ্য যুক্তিসংগত অর্থাৎ লাভজনক মূল্যে বাজারজাতের ব্যবস্থা করা।
সারমর্ম
• লাভজনকভাবে খামার স্থাপনের জন্য সুষ্ঠুভাবে খামার-ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।
• খামার-ব্যবস্থাপনা সম্পদের সুষ্ঠ এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে সর্বোচ্চ উৎপাদনে সহায়তা করে।
• খামারের সঠিক ব্যবস্থাপনায় দৈনন্দিন করণীয় বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে সম্পন্ন করতে হয়।