ব্যবহারিকঃ গোল কাঠ বা তক্তা পরিমান

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ব্যবহারিকঃ গোল কাঠ বা তক্তা পরিমান – যা বনায়ন এর অন্তর্ভুক্ত। গাছ কর্তনের পর সর্বপ্রথমে ডালপালা ছেটে চাহিদা মোতাবেক কান্ডকে কেটে টুকরো টুকরো করতে হবে। এ ধরনের টুকরোকে সাধারণত লগ বা গোল কাঠ বলা হয়। এ দৈর্ঘ্য প্রায় ২.৫ হতে ৪ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। গোল কাঠকে অনেক সময় বাকল হেঁটে চারকোনা করা হয়। কিন্তু এখানে কিভাবে কাঠ চিরাই করলে সর্বাপেক্ষা কম কাঠ অপচয় হয়, সে বিষয়ের লক্ষ্য রাখা আবশ্যক ।

ব্যবহারিকঃ গোল কাঠ বা তক্তা পরিমান

 

ব্যবহারিকঃ গোল কাঠ বা তক্তা পরিমান

 

গোল কাঠ পরিমাপের উপায়

একটি গাছে কতটুকু কাঠ আছে তা নির্ণয়ের সবচেয়ে সঠিক পন্থা হল কান্ডের সিলিন্ডারের সাথে তুলনা করে সিলিন্ডারের পরিমাণ নির্ণয় করে কাঠের পরিমাণ নির্ণয় করা। প্রতিটি গাছের কান্ড গোড়ার দিকে মোটা এবং উপরের দিকে সরু। আবার সব গাছের কান্ড একই রকম গরু নয়। ফলে সরাসরি সিলিন্ডারের সূত্র প্রয়োগ করে সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে কাঠের পরিমাপ নির্ণয় করা কষ্টসাধ্য এবং ব্যবহার্য না। যদি কান্ড সিলিন্ডার আকৃতির হতো তবে খুব সহজে একটি লগে বা টুকরো কান্ডে কাঠের পরিমাণ নির্ণয় করা যেত। নিয়ে তা দেখানো হল:

আমরা জানি,

একটি সিলিন্ডারের আয়তন = 21

এখানে,

r = ব্যাসার্ধ

I= উচ্চতা

A= ধ্রুর সংখ্যা (যার মান ৩.১৪১৬)

উদাহরণ স্বরূপঃ একটি সিলিন্ডার আকৃতির কাঠের লগের ব্যাস ২০ সে.মি. এবং এর উচ্চতা বা দৈর্ঘ্য ৩ মিটার হলে, কাঠের পরিমাণ কত ঘনমিটার ।

কাজের ধারা

১। নির্বাচিত গাছের কান্ডের কাঠের পমিাণ করার জন্য কান্ডের দৈর্ঘ্যা প্রথমে ফিতা সাহায্যে মাপা হল।

২। এবার কান্ডের দুই প্রান্তের ব্যাস মেপে তাদের গড় বের করা হয়।

৩। সর্বশেষে উপরের সূত্র দ্বারা কাঠের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়।

এখানে, কান্ডের দৈর্ঘ্য = ৩ মিটার

কান্ডের ব্যাস d = ২০ সে.মি.

সুতরাং কান্ডের ব্যাসার্ধ, R=D/2=20CM/210cm = ০.১০ মিটার

অতএব, কাঠের পরিমাণ Ari

= (৩.১৪১৫ × (-১০)× ৩) ঘনমিটার

=০.০৯৪২ ঘনমিটার

দাঁড়ানো গাছে কাঠের পরিমাণ নির্ণয়

দাঁড়ানো গাছের কাঠের পরিমাণ সূত্র ব্যবহার করে সাধারণত নির্ণয় করা  যায় ।

সূত্রঃ কাঠের পরিমাণ (ঘনমিটার) = ০.০৮X বেড় ১+ (বেড় ২২৪) + বেড় ৩ – x দৈর্ঘ্য

প্রয়োজনীয় উপকরণ :

ক) নির্বাচিত গাছ
খ) পরিমাপক ফিতা
গ) কাগজ, কলম ইত্যাদি

কাজের ধারা

১. নির্বাচিত গাছের কান্ডের কাঠের পরিমাণ করার জন্য চিত্রর মত করে কাজের দৈর্ঘ্য প্রথমে ফিতা ভরা মাপতে হবে।
২. এবার কান্ডের মোটা, মাঝারি ও চিকল প্রান্তের বেড় ফিতা দ্বারা মেপে নিতে হবে। ৩. সবশেষে উপরের সূত্র প্রয়োগ করতে হবে।

উদাহরণ : ধরে নেই,

কান্ডের দৈর্ঘ্য = ২০ মিটার

চিকন প্রাপ্তের বেড় (বেড় ১) = ১ মিটার

মাঝের প্রান্তের বেড় (বেড় ২) = ১.৫ মিটার

মোটা প্রান্তের বেড় (বেড় ৩) = ২ মিটার

ভক্তার পরিমাণ নির্ণয়

ভক্তার পরিমাণ নির্ণেয়ের ক্ষেত্রে তক্তার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা প্রথমে ফিতার সাহায্যে বের করে দিতে হবে। কাঠের পরিমাণ করার জন্য এ ক্ষেত্রে তিন মাত্রিক পরিমাণ নিম্নোক্ত চিত্রানুসারে ফিতার সাহায্যে মেপে নিতে হবে।

 

ব্যবহারিকঃ গোল কাঠ বা তক্তা পরিমান

ধরে নেই,

তক্তার দৈর্ঘ্য x = ৩ মিটার

তভার প্রস্থ y = ১ মিটার

তক্তার উচ্চতা h = ০.৫মিটার

অতএব, ভক্তার আয়তন= দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x উচ্চতা

= 0 x 10.5 ঘন মিটার

= ১.৫ ঘন মিটার

 

ব্যবহারিকঃ গোল কাঠ বা তক্তা পরিমান

 

চূড়ান্ত মূল্যায়ন

সৃজনশীল প্রশ্ন

১. নোমান বাংলাদেশের কা সম্পর্কে তার শিক্ষক ড. রহিম সাহেব এর কাছে জানতে চাইলেন। তিনি প্রথম প্রকার বন সম্পর্কে বলেলন, ‘এ বন বাংলাদেশের মোট বনভূমির বেশি এলাকাজুড়ে আছে এবং এখানে বেশ কয়েকটি শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে।’ তারপর দ্বিতীয় প্রকার বন সম্পর্কে বলেলন, ‘শীতকালে এ বনের পাতা ঝরে যায়। এ দুই প্রকার বন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ?

ক) বনভূমির কাকে বলে?
(খ) বনভূমি কমে যাওয়ার কারণে কী?
গ) প্রথম প্রকার বনে কীভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর ।
ঘ) বর্ণিত দুটি বনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করুন।

২। কিশোরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা জনাবা রহিমা সামাজিক বনায়নের সাথে সম্পর্কিত। এ উদ্দেশ্যে তিনি সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইনের পাশে বৃক্ষ রোপন করে থাকেন। তাছাড়া তিনি তার এলাকাবাসীদের বনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করে থাকেন।

ক) গ্লোয়িং স্টক কাকে বলা হয় ?
খ) সামাজিক বনায়ন ও ম্যানগ্রোগ্রোভ বনায়নের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
গ) উপকূলীয় বনের অধিকাংশ প্রজাতির শ্বাসমূল থাকে কেন?
ঘ) রহিমা বেগমের মতো তার এলাকাবাসী এ কর্মসূচিতে এগিয়ে আসলে বনায়নের অভাব পূরণ হবে”-উক্তিটি বিশ্লেষণ করে বনায়নের গুরুত্ব লিখ।

৩। রেহেনা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ মতে তার বাড়ির দক্ষিণ দিকে পুকুর পাড়ে উঁচু ৮ শতক জমিতে মেহগনি বীজ রোপন করেন। এ জন্য তিনি ১৫ সে.মি. x ১০ সে.মি. আকারের পলি ব্যাগ ব্যবহার করেন। এতে করে রেহেনা ব্যাপক সফলতা লাভ করেন ।

ক) । বীজ নিষ্কাশনের প্রধান কয়টি পদ্ধতি?

খ) নার্সারি স্থাপনের একটি প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করুন ।

গ) রেহেনার নার্সারির চারার সংখ্যা নির্ণয় করুন ।

ঘ) রেহেনার সফলতার কারণ বিশ্লেষণ করুন।

 

Leave a Comment