চুয়াডাঙ্গা, ৩ মার্চ ২০২৫ (বাসস): বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার জিকে সেচ খালে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে পানি না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে সেচ পাম্প মালিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খরচে পানি কিনতে হচ্ছে, ফলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতে, পদ্মা নদীতে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় এবং পলি অপসারণ না হওয়ায় জিকে সেচ খালে দীর্ঘদিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলার কৃষকরা এই সেচ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান, ভুট্টা, গম, মসুরি, সরিষা চাষ করেন। কিন্তু ১৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ জিকে সেচ খালে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় কৃষকদের বাড়তি দামে সেচ পানি কিনতে হচ্ছে, তবুও প্রয়োজনীয় সময়ে তা পাচ্ছেন না।
আলমডাঙ্গার জিকে খাল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পানির অভাবে খাল শুকিয়ে ফেটে গেছে, শিশু-কিশোররা সেখানে খেলাধুলা করছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত বছরও ঠিকমতো পানি পাননি, এবার জানুয়ারিতে পানি সরবরাহের কথা থাকলেও এখনো খাল শুকনো পড়ে আছে। খালের পানি দিয়ে সেচ দিতে যেখানে প্রতি বিঘায় খরচ ৩০০ টাকা, সেখানে শ্যালো মেশিন ব্যবহারে ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার জানিয়েছেন, জিকে ক্যানেলের আওতায় ৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, এছাড়া ৮৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা ও সরিষার চাষ হয়েছে। পানির অভাবে বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে পানি পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ জানান, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গার প্রধান ও সেকেন্ডারি ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ খালে পানি সরবরাহ করা হয়। তবে পদ্মার পানির স্তর নেমে যাওয়া এবং পলি জমে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ড্রেজিং ও পাম্প মেরামতের কাজ চলছে, যা শেষ হলে পুনরায় পানি সরবরাহ শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।