ছত্রাকজনিত রোগ

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ছত্রাকজনিত রোগ

ছত্রাকজনিত রোগ

সাধারনভাবে স্বাদু পানির বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ চাষের ক্ষেত্রে ছত্রাকঘটিত রোগের সংক্রমণ যথেষ্ট পরিমাণে লক্ষ্য করা যায়। তবে ছত্রাকের তীব্রতার মাত্রা এবং এসব ছত্রাকঘটিত রোগের কারণে জৈব পদার্থের উপস্থিতি এবং বেশি তাপমাত্রার কারণে জলাশয়ে জৈব পদার্থসমূহের যে পচন সংঘটিত হয়, মূলত তা-ই জলাশয়ে বেশ কয়েক ধরনের ছত্রাকঘটিত রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার ঘটায়। তবে নিচে বর্ণিত রোগটি বাংলাদেশে বেশি দেখা যায়।

 

ছত্রাকজনিত রোগ

 

(ক) স্যাপরোল্যাগনিয়াসিস

নিচে এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

স্যাপরোল্যাপনিয়াসিস ছত্রাকজনিত এ রোগটি মাছের তন্তু রোগ নামে সমধিক পরিচিত। রোগের জীবাণু : এ রোগের জন্য তিনটি পরজীবী দায়ী। এগুলো হলো

স্যাপরোল্যাপনিয় প্যারাসইটিকা (Saprolegnia parasitica),

স্যাপরোল্যাগনিয়া ফেরাক্স (Saprolegnia ferax) এবং

স্যাপরোল্যাগনিয়া ডিকলিনা (Saprolegnia diclina)।

 

ছত্রাকজনিত রোগ

 

রোগের বিস্তার:

সাধারণত দেশি ও বিদেশী সবধরনের কার্প জাতীয় মাছেই এই রোগের যথেষ্ট প্রাদুর্ভাব রয়েছে। তবে ডিম প্রসবকারী মাছ এবং সদ্য ডিম থেকে বের হওয়া পোনা থেকে শুরু করে কার্প জাতীয় মাছের সকল জীবদ্দশাতেই স্যাপরোল্য গনিয়া রোগের জীবাণু বিস্তার লাভ করতে পারে।

তবে পরিবেশগত পীড়ন বা ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দিয়ে পরীক্ষা করার পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছত্রাক মাছের দেহে খুবই দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ করে এবং ১০ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাছের দেহটিকে সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ ছত্রাক মাছের চোখ, ফুলকা, পাখনা এবং মাছের পৃষ্ঠদেশ ও লেজ সংক্রমিত করে।

 

ছত্রাকজনিত রোগ

 

রোগের লক্ষণ :

স্যাপরোল্যাগনিয়া মাছের দেহে যে রোগ সৃষ্টি করে, তা নিচে উল্লেখিত  লক্ষণ দ্বারা বোঝা যায়।

(ক) মাছের ডিম, পোনা এবং বড় মাছের দেহে মিহি সূতার ন্যায় তন্তু দেখা দেয়।

(খ) মাছের দেহে অতিরিক্ত পিচ্ছিল পদার্থের উপস্থিতি দেখা দেয়।

(গ) মাছ অস্থিরভাবে চলাফেরা করতে থাকে এবং শক্ত কিছুতে গা ঘেষতে থাকে।

(ঘ) সংক্রমণ বেশি হলে মাছে ব্যাপকহারে মড়ক দেখা দেয়।

সারমর্ম

মাছ চাষের বিভিন্ন পর্যায়ে নানা ধরনের ছত্রাক রোগের সংক্রমণ দেখা দেয়। এসব রোগ চাষ প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে দিতে পারে কারণ এসব রোগে মাছের ব্যাপকভাবে মড়ক দেখা দেয়। স্যাপরোল্যাগনিয়াসিস রোগ ছত্রাক রোগের মধ্যে অন্যতম।

Leave a Comment