ছাগলের জাত ও জাতের বৈশিষ্ট্য – কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র বিষয়ের এই পাঠটি ১১ নং ইউনিটের ১১.৫ নং পাঠ। এই পাঠে আমরা বিভিন্ন ধরণের ছাগলের জাত ও তদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করবো।
Table of Contents
ছাগলের জাত ও জাতের বৈশিষ্ট্য
ছাগলের জাত ও বৈশিষ্ট্য ছাগল গৃহপালিত প্রাণি । বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ছাগল পালন বেশ লাভজনক। গ্রামে-গঞ্জে প্রায় ৬০% পরিবার ছাগল পালন করে থাকে। ছাগলকে গরিবের গাভী বলা হয়। এরা ছোট প্রাণি বলে দাম কম, তাই অল্প খরচে পালন করা যায়। তাছাড়া মূলধন বিনিয়োগ কম।
এরা ছোবড়া ও নিকৃষ্ট মানের খাদ্য গ্রহণ করে পুষ্টিসাধন করে থাকে। যার গাভী কেনার ও পালনের সামর্থ নেই সে অল্প পুঁজিতে দুটি ছাগল কিনে অধিক লাভবান হতে পারে। যে বেকার সেও ছাগল পালন করে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। গাভী থেকে একটি বাহুর পেতে এক বছরের বেশি সময় লাগে। কিন্তু ছাগল হুমাসে একই সঙ্গে কমপক্ষে দুটি বাচ্চা দেয়। এ হিসেবে দুটি ছাগল থেকে বছরান্তে ন্যূনতম আটটি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। এদের লালন-পালন খরচ অনেক কম। ছাগলের মাংস ও চামড়া দুই ই উৎকৃষ্ট। শুধু চামড়া রপ্তানি থেকে বছরে আয় হয় কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। আমাদের দেশে বর্তমানে ২৫.১২ মিলিয়ন ছাগল আছে। (এআইএস, ২০১৩)।
ছাগলের জাতের শ্রেণীবিভাগ:
ছাগলের জাতকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিভাগ করা যায়। যেমন—
১. উৎপত্তি অনুসারে শ্রেণীবিভাগ
২. দেহের আকৃতিভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ
৩. উৎপাদনভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ
৪. জন্মগত ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ
৫. শিংয়ের গঠনের ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ
এদের আকার, আকৃতি, স্বভাব ও উৎপাদন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে বেশ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। ছাগলকে সাধারণত দুধ, মাংস, চামড়া ও লোম উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। তাই এগুলোর ওপর ভিত্তি করে পশু বিজ্ঞানীরা ছাগলকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছেন। যেমন-
- দুধ উৎপাদনকারী জাতের ছাগল- এরা অধিক দুধ উৎপাদন করে। যেমন- সানেন, বারবারি, টোগেনবার্গ ইত্যাদি।
- বাচ্চা উৎপাদনশীল জাতের ছাগল- এরা অধিক বাচ্চা উৎপাদন করে। যেমন- ব্ল্যাক বেঙ্গল, কাজাং ইত্যাদি।
- চামড়া উৎপাদনকারী জাতের ছাগল- এরা উত্তমমানের চামড়া উৎপাদন করে। যেমন- ব্ল্যাক বেঙ্গল, মারাডি ইত্যাদি।
- মাংস উৎপাদনকারী জাতের ছাগল- এরা উন্নতমানের মাংস উৎপাদন করে। যেমন- ব্ল্যাক বেঙ্গল, মা-টু ইত্যাদি।
উৎপাদন বৈশিষ্ট্য, উৎপত্তি ও আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে ছাগলের জাতের শ্রেণিবিন্যাস
উৎপত্তি অনুসারে শ্রেণিবিভাগ :
১। দেশি জাতের ছাগল ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল :
বাংলাদেশ, ভারতের আসাম ও মেঘালায়ে এ ছাগল দেখতে পাওয়া যাায়। এটি বাংলাদেশের নিজস্ব জাত। এ জাতের ছাগলের মাংস সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। ছাগল সাধারণত কালো রঙের হয়ে থাকে, তবে সাদা ও বাদামি রঙের ছাগলও দেখা যায়।
এরা সাধারণত আকারে ছোট হয়। এদের কান সোজা ও খাড়া। শিং পিছনের দিকে বাঁকা থাকে। গায়ের রং সাধারণত কালো, তবে ধুসর, বাদামি বা সাদা বা কালো মিশ্রিতও হয়ে থাকে।
গায়ের লোম ছোট ও মসৃণ। এ জাতের ছাগলের মাংস ও চামড়া অত্যন্ত উন্নতমানের। এদের দুধ খুবই অল্প হয়। তবে এরা বছরে দুই বার এবং প্রতিবারে অন্তত দুইটি বাচ্চা দেয়। এদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এ জাতের একটি পুর্ণ-বয়স্ক পাঠার ওজন ২৫-৩০ কেজি এবং ছাগীর ওজন ১৫-২০ কেজি হয়ে থাকে।
অর্থনৈতিক দিক থেকে এই জাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উৎকৃষ্টমানের চামড়া ও মাংস উৎপাদন, অধিক সংখ্যক বাচ্চা দেয়া এবং প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার ক্ষমতার জন্য এরা সুপরিচিত। বছরে দু’বার এবং একরে ২- ৬টি বাচ্চা দেয়ার দৃষ্টান্ত এদের রয়েছে। দ্রুত বংশ বিস্তারে এই ছাগলের জুড়ি নেই। এদের চামড়া বিশ্ববাজারে সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়।
চামড়ায় তৈরি জুতো ও অন্যান্য সামগ্রী অত্যন্ত আকর্ষণীয়, আরামদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী বলে স্বীকৃত। এদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে বেশি। এরা আকারে ছোট, ছুট বরাবর উচ্চতা মাত্র ১৫ সেমি। পূর্ণব্যস্ত ছাগল ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে গড়ে ১৩ ও ৯ কেজি। দেহের লোম খাটো, সুবিন্যাস্ত্র, রেশমি ও কোমল। এরা দ্রুত বয়প্রাপ্ত হয়। এদের পা খাটো, কান খাড়া। শিং আকারে ছোট ও কালো এবং ৫-১০ সে.মি. লম্বা হয়।
১৫ মাস বয়সে প্রথমবার বাচ্চা দেয়। এদের দুধ উৎপাদন ক্ষমতা খুবই কম, দুয়ের অধিক বাচ্চা হলে দুধের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে বাচ্চা অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগে ও মারা যায়। এদের উৎপত্তি সম্বন্ধে তেমন কোনো তথ্য জানা যায় নি। তবে, স্মরণকাল থেকেই এরা বাংলাদেশে আছে। বাংলাদেশে এরা কালো ছাগল বলে পরিচিত। এক মাসের দোহনকালে ছাগী ২৫-৩০ লিটার দুধ দেয়। এই দুধ শিশু ও দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য খুবই উপকারী।
বৈশিষ্ট্য:
১. ছাগী বছরে দুবার এবং প্রতিবারে দুই বা ততোধিক বাচ্চা দেয়।
২. দেহের গড়ন আঁটোসাঁটো, পা খাটো।
৩. কান ছোট, সোজা এবং কিছুটা উপরের দিকে থাকে।
৪. ছাগলের মাংস এবং চামড়া উন্নত মানের হয়।
৫. শিং ছোট ও কালো এবং ৫—১০ সেমি লম্বা হয়।
৬. শিং ওপর দিক হতে পিছনে বাঁকানো থাকে।
৭. পুরুষ ও স্ত্রী ছাগলের ওজন যথাক্রমে ২৫—৩৫ কেজি এবং ২০— ৩০ কেজি।
৮. সুষম খাদ্য ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ০.৫—১.০ লিটার দুধ পাওয়া যায়।
৯. প্রথম বাচ্চা প্রসব করার বয়স হচ্ছে ১৩—১৪ মাস।
১০. লোম মসৃণ এবং মোলায়েম।
২। বিদেশি জাতের ছাগল :
বাংলাদেশে যেসব বিদেশি জাতের ছাগল পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে— যমুনাপাড়ি, বিটল, সানেন, টোগেনাবার্গ, অ্যালপাইন ও অ্যাংলোনোবিয়ান উল্লেখযোগ্য। বিটল জাতের ছাগল পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে। অ্যাংলোনোবিয়ান জাতের ছাগল ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ থেকে আনা হয়েছে। সানেন ও অ্যালপাইন এর উৎপত্তিস্থল সুইজারল্যান্ড।
যমুনাপাড়ি ভারতের গঙ্গা, যমুনা ও চম্বল নদীর মধ্যবতীর্ এটাওয়া জেলায় এ জাতের ছাগলের আদি বাসস্থান। এরা রামছাগল নামেই বেশি পরিচিত। এটি দুধ উৎপাদনকারী জাত। আমাদের দেশের সীমান্তবতীর্ এলাকায় এ জাতের ছাগল দেখা যায়। এরা খোলা জায়গায় থাকতে পছন্দ করে।
বৈশিষ্ট্য:
১. গায়ের রঙ সাদা, কালো, হলুদ, বাদামি বা বিভিন্ন রঙের মিশ্রণযুক্ত হয়।
২. শরীরের গঠন বেশ হালকা—পাতলা ও লম্বাকৃতির।
৩. পা লম্বাটে এবং পিছনের পায়ে লম্বা ঘন লোম থাকে।
৪. পুরুষ ছাগলের দাড়ি থাকে, স্ত্রী ছাগলের কদাচিৎ থাকে।
৫. এরা মাঠে চরে জীবনধারন করতে পছন্দ করে।
৬. পেছনের পায়ের দিকটায় লম্বাটে চুল থাকে।
৭. লেজ ছোট ও সরু এবং কান লম্বা, চ্যাপ্টা, বাঁকা ও ঝুলন্ত।
৮. শিং ছোট ও চ্যাপ্টা এবং লেজ ছোট ও পাতলা।
৯. বছরে একবার এবং ১টি করে বাচ্চা দেয়।
১০. দৈনিক ১.৫—২.০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। চিত্র ১১.৫.২ : যমুনাপাড়ি
১১. পূর্ণবয়স্ক ছাগল ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে ৬৫—৯০ কেজি এবং ৪০—৬০ কেজি।
১২. ঘাড় ও মুখমন্ডলে হালকা বাদামি বর্ণের ছোপ থাকে।
১৩. ওলান বেশ বড় এবং বাটগুলো মোটা, লম্বা, সুসজ্জিত এবং সম আকারের।
১৪. দুধে চর্বির পরিমাণ ৫%।
যমুনা পাড়ি ছাগল বা রামছাগল
ভারতের যমুনা ও চম্বল নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে এদের উৎপত্তি। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এবং শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় এ ছাগল পালন করা হয়। এদের শরীরের রঙ সাদা-কালো, তামাটে বা বাদামী রঙের হয়। এর আকারে বেশ বড়।
এদের শরীরের গঠন হালকা ও লম্বাটে। কান লম্বা ঝুলানো ও বাঁকা। এদের শরীরের লোম লম্বা হয়। এ ছাগল বছরে একবার এবং একটি করে বাচ্চা দেয়। এ জাতের ছাগল দুধের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এরা দৈনিক ২-৩ লিটার পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে। এ জাতের একটি পূর্ণ বয়স্ক পাঠা ৫০-৬০ কেজি এবং ছাগী ৪০-৫০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে ।
এরা ভারতের একটি জনপ্রিয় ছাগল যা দুধের জন্য ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিচিত। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাসমূহে আজকাল এই জাতের কিছু ছাগল দেখা যায়। এরা আকারে বড়, কান লম্বা ও ঝুলন্ত। এদের দেহের রঙ সাদা, কালো, হলুদ, বাদামি বা বিভিন্ন রঙের মিশ্রণযুক্ত হতে পারে। ওলোনগ্রন্থি সুবিন্যস্ত এবং বড় ও লম্বা বাটমুক্ত।
পা খুব লম্বা; পেছনের পায়ের পেছন দিকে লম্বা লোম আছে। দেহের অন্যান্য স্থানের লোম সাধারণত ছোট। এরা অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু ও চঞ্চল বছরে একবার এবং একটির বেশি বাচ্চা দেয় না। পূর্ণবয়স্ক ছাগল ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে ৬৮-৯১ ও ৩৫-৬০ কেজি। এদের শিং খাটো, চ্যাপ্টা ও ২৫-৩০ সে.মি. লম্বা।
ছাগল ও ছাগীর উচ্চতা যথাক্রমে ১১-১২৭ ও ৭৬-১০৭ সেমি। দুধ উৎপাদন ২১৬ দিনে সর্বোচ্চ ১৩৫ লিটার। দৈনিক উৎপাদন গড়ে ৩২ লিটার। ভারতে এদেরকে গরীবের গাडী বলা হ থাকে। এই ছাগলের মাংস ও চামড়া তেমন উন্নতমানের নয়। এরা চরে খাওয়ার জন্য খুবই উপযোগী। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া তাদের নিজস্ব ছাগলের সঙ্গে সংকরায়নের জন্য ভারত থেকে যমুনাপারি ছাগল আমদানি করেছে।
সানেন ছাগল :
সানেন জাতের ছাগলের উৎপত্তি সুইজারল্যান্ডের পশ্চিমাংশে। পৃথিবীর যেকোন দেশের আবহাওয়া এবং পরিবেশ এ জাত খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

এদের দেহ সাদা বা উজ্জ্বল সাদা খাটো লোমে আবৃত। গলা, কান ও ওলানে কালো দাগ থাকে। সাধারণত শিং থাকে না। এদের পা ছোট, কান সোজা ও সম্মুখমুখী এবং ওলান বড়। ছাগলের বিভিন্ন জাতের মধ্যে এরা সর্বোচ্চ পরিমাণ দুধ দেয়। পৃথিবীর বহু দেশ, যেমন- অস্ট্রেলিয়া, ওয়েষ্ট ইন্ডিজ, ভারত, ফিজি, ঘানা, কেনিয়া, কোরিয়া, ইসরাইল, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে এই জাতের ছাগল আমদানি করা হয়েছে। পৃথিবীর যে কেনো অঞ্চলের আবহাওয়ার সাথে এরা নিজদের খাপ খাওয়াতে পারে। এরা দৈনিক ৩.০-৩.৫ লিটার দুধ দেয়। এক দোহনকালের ৩৩৬ দিনে ১৯০ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে সক্ষম।
জাতের ছাগল সুইজারল্যন্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাওয়া যায়। এরা আকারে বেশ বড়। গায়ের রঙ বাদামি বা চকোলেট হয়। দু’পায়ের হাটুর নিচ ও মুখমণ্ডলে সাদা দাগ থাকে। গলা লম্বা, হালকা ও সোজা, কান কালো রঙের কিন্তু ঘাড়ের দিকে সাদা। ছাগল ও ছাগী কারোই শিং থাকে না। ছাগী দৈনিক ৩ লিটার পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে। ভারত, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ভেনেজুয়েলা, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে দুধের জন্য এদের পালন করা হয়। এরা মাঠে চরে খেতে পছন্দ করে। পূর্ণবয়স্ক ছাগল ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে ৬০-৬৫ ও প্রায় ৭০ কেজি হয়।
বৈশিষ্ট্য:
১. দেহ সাদা বা উজ্জল সাদা লোমে আবৃত।
২. গলা, কান ও ওলানে কালো দাগ থাকে।
৩. সাধারণত শিং থাকে না থাকলেও ছোট।
৪. এদের পা ছোট, কান সোজা এবং ওলান বড়।
৫. ছাগলের বিভিন্ন জাতের মধ্যে এরা সবোর্চ্চ পরিমাণে দুধ দেয়।
৬. পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলের আবহাওয়ার সাথে এরা খাপ খাওয়াতে পারে।
৭. এরা দৈনিক ৩.০—৩.৫ লিটার দুধ দেয়।
৮. ওলান গ্রন্থি বেশ বড় হয়।
৯. দুধে চর্বির পরিমাণ ৩.৫%।
১০. পূর্ণবয়স্ক ছাগল ৬০—৭০ কেজি।
১১. কান সোজা এবং সম্মুখ মুখি।
১২. বছরের দুধ উৎপাদন ক্ষমতা কমবেশি ৯৯০ লিটার।
বিতাল / বিটল ছাগল :
বিটল ভারত ও পাকিস্তানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ছাগলের জাত। এরা দেখতে অনেকটা যমুনাপাড়ির মতো। এটি দুগ্ধ উৎপাদনকারী জাত। এ জাত আবদ্ধ ঘরে পালনের জন্য উপযোগী এবং এরা সহজেই বিভিন্ন পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারে। ভারতের পাঞ্জাব, শিয়ালকোট, গুরুদাসপুর পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোর এবং বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে পালন করা হয়।
এ জাতের ছাগল কালো, সাদা, বাদামি বা একাধিক রঙের হতে পারে। এদের কান লম্বা হয়। শিং পিছনের দিকে বাঁকা। পূর্ণ বয়সে পাঁঠার ওজন ৫০-৭০ কেজি এবং ছাগী ৪০-৫০ কেজি হয়ে থাকে। এ জাতের ছাগল থেকে দৈনিক ৪-৫ লিটার পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়।
এই ছাগলের গায়ের রঙ প্রধানত লাল; তবে, লালের মধ্যে সাদা দাগ দেখা যায়। তাছাড়া কালো রঙের ছাগলও ভারতের উত্তর প্রদেশ এবং অন্ধ্র প্রদেশে প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায়। এদের নাক বাঁকা ও কান লম্বা। ছাগলের দাড়ি আছে, ছাগীর নেই। শিং পেছনের দিকে বাঁকানো। ছাগী দৈনিক গড়ে ৪৫ লিটার এবং এক দোহনকালের ১৩৩ দিনে ৩২০ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে সক্ষম। এরা মাংস উৎপাদনের জন্যও বিখ্যাত। প্রতি বছর বাচ্চা দেয়। এই জাতের ছাগল খুব কষ্টসহিষ্ণু এবং প্রতিকূল পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে।
বৈশিষ্ট্য
১. গায়ের রং প্রধানত লাল, তবে লালের মধ্যে সাদা দাগ দেখা যায়।
২. আকারে বড় হয়, তবে যমুনাপাড়ির চেয়ে কিছুটা ছোট।
৩. পা লম্বা হয়, কান লম্বা এবং ঝুলানো থাকে।
৪. ছাগল বছরে একবার এবং ১ জোড়া বাচ্চা দেয়।
৫. এরা দুধ বেশি দেয়। একটি ছাগী হতে দৈনিক ৩—৪ লিটার পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়।
৬. পুরুষ ছাগলের দাড়ি থাকে কিন্তু ছাগীর দাড়ি নেই।
৭. এরা ২০—২২ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়।
৮. পূর্ণবয়স্ক ছাগল ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে ৬৫ কেজি ৪৫ চিত্র ১১.৫.৩ : বিটল কেজি।
৯. এদের নাক বাঁাকা এবং শিং পেছনের দিকে বাঁকানো।
কাশ্মীরি ছাগল :
কাশ্মীরি ছাগল ভারতের কাশ্মীর এদের আদি বাসস্থান। এরা বেশ বড় ও কষ্টসহিষ্ণ হয়। এ জাতের ছাগল লোম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এদের শরীর ১০-১২ সে.মি. লম্বা লোমে ঢাকা থাকে। এদের ওজন ৫০-৬০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের লোম দিয়ে উন্নতমানের পশমী কাপড় তৈরি হয়। ছাগলের বাসস্থান অন্যান্য প্রাণীর মত ছাগলেরও বাসস্থানের প্রয়োজন।

বৈশিষ্ট্য:
১. গরম আবহাওয়া সহ্য করতে পার না।
২. গায়ের রঙ সাধারণত সাদা, তবে ধূসর ও বাদামি বর্ণের ছাগল দেখা য়ায়।
৩. শিং লম্বা এবং পেছনের দিকে বাঁকানো। কান ছোট, খাড়া, ফানেলের মতো।
৪. দেহ মোলায়েম সিল্কজাতীয় লোমে আচ্ছাদিত থাকে। এ লোমের নিচে ছাই রঙের পশমিনা থাকে। এ পশমিনা মোটা কম্বল ও শাল তৈরির কাজে লাগে।
৫. এরা ২২ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়।
অ্যাংগোরা বা অ্যাঙ্গোরা ছাগল:
অ্যাংগোরা ছাগল এদের আদি বাসস্থান তুরস্ক। তবে কোন কোন সোর্স বলে আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়া এদের আদি বাসস্থল। লোম ও মাংস উৎপাদনের জন্য এরা সুপরিচিত। এদের শরীর লম্বা লোমে ঢাকা থাকে। এটি উন্নতমানের পশম উৎপাদনকারী জাতের ছাগল। এর পশমকে মোহেয়ার বলা হয়। এই জাতের ছাগলের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ায়। ১৩০০ শতাব্দিতে তুরস্কের অ্যাংগোরা প্রদেশে এই ছাগল আনা হয়। ফলে ঐঐ প্রদেশের নামানুসারে এর নামকরণ হয় অ্যাংগোরা। ১৮৩৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ১৮৪৯ সালে আমেরিকা এই ছাগল তুরস্ক থেকে আমদানি করে তাদের দেশে নিয়ে যায় এবং মূল্যবান মোহেয়ারের শিল্প গড়ে তোলে। তুরস্কের সুলতান ১৮৮১ সালে এই জাতের ছাগল যাতে বিদেশে রপ্তানি না হয় সেজন্য এক আইন পাশ করেন।
বর্তমানে নিজস্ব জাতের সাথে সংকরায়নের জন্য ভারত, পাকিস্তান, ফিজি, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে এই জাতের ছাগলের বিস্তৃতি ঘটেছে অ্যাংগোরা ছোট আকারের ছাগল। উচ্চতায় ৫৪ সেমি, কান কিছুটা ঝুলন্ত। ছাগল ও ছাগী উভয়ই দেখতে খুব চকচকে ও গুচ্ছ লোমযুক্ত। এরা নিয়মিত বাচ্চা দেয়; তবে, বছরে একবার এবং সাধারণত দু’টির বেশি নয়। ছাগল ও ছাগীর দৈহিক ওজন যথাক্রমে ৬৫-৮৫ ও ৪০-৪৫ কেজি। প্রতি দোহনকালে ছাগী ২০-২৫ লিটার করে দুধ দেয়। এরা বছরে ১৫-২০ কেজি পশম উৎপাদন করে। তবে, কোনো কোনো ছাগল ৩ কেজির বেশিও উৎপাদন করে থাকে। এই পশম বছরে দু’বার সংগ্রহ করা হয়।

বৈশিষ্ট্য:
১. এদের লোম বেশ বড়, প্রায় ১৩—২৫ সেমি লম্বা ও উজ্জ্বল।
২. দুধ উৎপাদন কম, গড়ে দৈনিক ৪০০মিলি।
৩. দুধে চর্বিও পরিমাণ ৫.৭%।
৪. এরা প্রতিবারে ১টি বাচ্চা দেয়।
৫. এদেরকে লোমের জন্য প্রধানত পালন করা হয়।
দেহের আকৃতিভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ:
ছাগলের স্কন্ধ পর্যন্ত উচ্চতার ভিত্তিতে ছাগলের জাতকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—
১. বড় জাতের ছাগল: যেমন— অ্যাংগোরা, বিটল, যমুনাপাড়ি ইত্যাদি।
২. ছোট জাতের ছাগল: যেমন কিলিস, ফিজি ইত্যাদি
৩. বামন জাতের ছাগল: যেমন— সুদান, ব্ল্যাক বেঙ্গল ইত্যাদি
বারবারি ছাগল :
এটি আফ্রিকা মহাদেশের ছাগল। তবে বর্তমানে ভারতীয় উপ মহাদেশেও এ জাতের ছাগল পাওয়া যায়। মাংস ও দুধের জন্য এরা যমুনা পাড়ি ছাগলের অনুরূপ।

আলপাইন ছাগল:
সানেন এটি উজ্জ্বল সাদা সাদা লোমে ঢাকা ইউরোপীয় জাতের ছাগল। এদের শিং আকারে বেশ বড় হয়। এ জাতের ছাগল দৈনিক ৪-৫ লিটার দুধ দিয়ে থাকে। এটি অধিক দুধ উৎপাদনকারী জাতের ছাগল। এদের উৎপত্তিস্থল সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতের পাদদেশে। ইউরোপের সর্বত্র এই জাতের ছাগল দেখতে পাওয়া যায়। এরা আবদ্ধাবস্থায় খামারে পালনের জন্য খুবই উপযোগী এবং যে কোনো পরিবেশের সঙ্গে সহজেই নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে।
এদের দেহের রঙ কালো তবে সাদা ডোরাকাটা দাগ বা সাদা, কালো ও বাদামি ইত্যাদি রঙের মিশ্রণও হতে পারে। বর্তমানে ভারত, মরিসাস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ঘানা, মাদাগাস্কার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রভৃতি দেশে এই ছাগল খামারে প্রতিপালিত হচ্ছে। ছাগী দৈনিক ৪-৫ লিটার দুধ দেয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এসব ছাগলের দুধ থেকে বহুবিধ দুগ্ধজাত খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হয়।

এংলো নুবিয়ান ছাগল :
এটি একটি সংকর জাতের ছাগল। যমুনা পাড়ি ও মিশরীর জেরিবাই সাথে সংমিশ্রনে এ জাতের উৎপত্তি। ভারতের যমুনাপারি ও মিশরের জারাই বাই জাতের ছাগল হতে এই জাতের উৎপত্তি। চেহারা ও দুগ্ধ উৎপাদনে এদের জুড়ি নেই। দেহের রঙ সাদা, কালো, বাদামি বা মিশ্র হতে পারে। কান ঝুলন্ত এবং সাধারণত শিং থাকে না।
পা লম্বা ও ওলান বড়। সুইজারল্যান্ডে উদ্ভাবিত নুবিয়ান ছাগলের চেয়ে এরা বেশি দুধ দিয়ে থাকে। অ্যাংলো নুবিয়ান থেকে দুধ ও মাংস দু’টোই অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়। এরা চরে খেতে ভালোবাসে কিন্তু আবদ্ধ অবস্থায় পালন করার জন্যও বিশেষ উপযোগী। এরা অতি সহজে পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে। ছাগী দৈনিক ২-৩ লিটার দুধ দেয়। বাচ্চার জন্ম ওজন ২-৪ কেজি। ছাগী ২৪৭ দিনের দোহনকালে প্রায় ২২১ লিটার দুধ দিতে সক্ষম।

মারাডি ছাগল (Maradi)
এটি আফ্রিকার একটি উন্নত জাতের ছাগল। এদের গায়ের রঙ ঘন লাল। ছাগল ও ছাগী কারোরই শিং নেই। গায়ের লোম ছোট, কান খাটো এবং সমান্তরাল। এরা ছোট আকারের, ওজন গড়ে ২৫-৩০ কেছি। এরা শুষ্ক অঞ্চলে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে। এদের বিস্তৃতি আফ্রিকার মধ্যেই। এই ছাগলের চামড়া উন্নতমানের ও মূল্যবান। অধিক মাংস উৎপাদনের জন্য এই ছাগল পরিচিত। এমনিতে দৈনিক গড়ে ৭.৫ কেজি ও উন্নত ব্যবস্থাপনায় ১৫ কেজি দুধ দেয়। সাধারণত দু’বছরে ৩- ৪ বার বাচ্চা দেয়। দোহনকালের ১০০ দিনে প্রায় ১৫০ লিটার দুধ দেয়। এরা সারাবছরই প্রজননক্ষম থাকে।
বোয়ার ছাগল:
এই জাতের পুরুষ ছাগলের ওজন ১০০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই জাতের স্ত্রী ছাগলের ওজন ৯০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এই জাতের ছাগলের ওজন প্রতি সপ্তাহে প্রায় দুই কেজি করে বাড়ে। বাংলাদেশে এই জাতের ছাগল খুব একটা দেখা যায় না। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো উন্নত দেশে এই ছাগল অধিক পরিমানে পালন করা হয়।
মা-টু ছাগল (Ma-Tou)
এটি মধ্য চীনের দুপেছ প্রদেশের একটি উন্নত জাতের ছাগল। অধিক সংখ্যায় বাচ্চা উৎপাদন এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। প্রতি ১০০টি ছাগী বছরে প্রায় ৪৫০টি বাচ্চা দিয়ে থাকে। এরা বছরে দু’বার বাচ্চা দেয়। এর মধ্যে ২১.৭% ক্ষেত্রে একটি বাচ্চা, ৭০% ২-৩টি বাচ্চা এবং ৮.৩% ৪টি বাচচা দেয়।
এই জাতের ছাগল দুধ ও মাংস উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। পূর্ণবয়স্ক ছাগল ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে ২৫-৫৫ ও ২০-৪৫ কেজি। ছাগীর দৈনিক দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ১.৫ লিটার। এদের পশমের রঙ সাদা, এগুলো লম্বা বা খাটো হতে পারে। এদের পা খুবই লম্বা এবং ছাগল বা ছাগী কারোই শিং নেই।
উৎপাদনভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ :
উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে ছাগলের জাতকে ৫ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—
১. মাংসল জাতের ছাগল: যেমন— ব্ল্যাক বেঙ্গল
২. দুধের জাতের ছাগল: যেমন— যমুনাপাড়ি
৩. পশম জাতের ছাগল: যেমন— গাড্ডি, অ্যাংগোরা
৪. দ্বৈত জাত: যেমন— ব্ল্যাক বেঙ্গল
৫. চামড়া উৎপাদক জাত: যেমন— ব্ল্যাক বেঙ্গল
জন্মগত ভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ :
জন্মস্থানের ওপর ভিত্তি করে ছাগলের জাতকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়।
১. এশিয়ান ছাগল: যেমন— যমুনাপারি
২. আফ্রিকান ছাগল: যেমন— মারাডি
৩. ইউরোপিয়ান ছাগল: যেমন— সানেন
৪. ওরিয়েন্টাল ছাগল: যেমন— মালাবার
বিভিন্ন জাতের ছাগলের বৈশিষ্ট্যগুলো জানার ব্যবহারিক পাঠ:
আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-বিভিন্ন জাতের ছাগলের বৈশিষ্ট্যগুলো জানা ও খাতায় লেখা
এই পাঠ শেষে আপনি-
- ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের আকার, আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যসমূহ বলতে পারবেন।
- ব্ল্যাক বেঙ্গল এবং যমুনাপারি ছাগলের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবেন।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্যসমূহ
প্রাসঙ্গিক তথ্য
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বাংলাদেশের একটি অমূল্য সম্পদ। উন্নতমানের মাংস ও চামড়া উৎপাদন এবং ঘন ঘন ও অধিক সংখ্যায় বাচ্চা উৎপাদনের জন্য এই ছাগলের সুনাম বিশ্বজোড়া। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের কান খাড়া, শিং ছোট ও কালো, চামড়া মোটা, লোমের গোড়া চামড়ার কম গভীরে প্রবিষ্ট।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, কলম, পেন্সিল, রাবার, ব্যবহারিক খাতা ইত্যাদি।
কাজের ধাপ
- একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দেখে প্রথমে এর দেহের বিভিন্ন অংশ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নাম জেনে নিন।
১. মাথা, ২. গলা ও ঘাড়, ৩ পিঠ, ৪. পাজর, ৫. পেছনের পার্শ্বদেশ বা ফ্ল্যাঙ্ক, ৬. পাছা, ৭ ওলানগ্রন্থি, ৮. পেছনের পা ও হাঁটু, ৯. দুধের বাট, ১০. ওলানের সম্মুখভাগ, ১১. দুগ্ধশিরা, ১২. সামনের পা, ১৩ চোয়াল।
- এই নামগুলো পাঠ্যবইয়ে উল্লেখিত ছবির সাথে মিলিয়ে নিন।
- এই জাতের ছাগলের আকার, আকৃতি, ওজন, বয়স প্রভৃতি প্রত্যক্ষ করুন ও খাতায় লিখুন।
- ব্যবহারিক খাতায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ছবি এঁকে এর দেহের বিভিন্ন অংশ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চিহ্নিত করুন।
- ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্যসমূহ ও পুরো পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়াটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখুন এবং শিক্ষককে দেখান।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ও যমুনাপারি ছাগলের মধ্যে পার্থক্যকরণ
প্রাসঙ্গিক তথ্য যমুনাপারি ছাগল দুধ উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এই জাতের ছাগলের কান লম্বা ঝুলন্ত, পা খুব লম্বা, পেছনের পায়ে লম্বা লোম আছে, শরীরের অন্যান্য স্থানের লোম ছোট।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
একটি যমুনাপারি ও একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, কলম, পেন্সিল, রাবার, ব্যবহারিক খাতা ইত্যাদি।
কাজের ধাপ
প্রথমে একটি যমুনাপারি ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দেখে এদের দেহের বিভিন্ন অংশ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নাম জেনে নিন।
- এই দু’জাতের ছাগলের আকার, আকৃতি, ওজন, বয়স প্রভৃতি প্রত্যক্ষ করুন ও খাতায় লিখুন।
- যমুনাপারি ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্যসমুহের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য যাচাই করুন। ব্যবহারিক খাতায় পাশাপাশি যমুনাপারি ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ছবি এঁকে এদের দেহের বিভিন্ন অংশ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চিহ্নিত করুন।
- দু’জাতের ছাগলের বৈশিষ্ট্যসমূহ ও পুরো পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়াটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখুন এবং শিক্ষককে দেখান।