জীব জগত ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট

জীব জগত ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট – পাঠটি “কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ” বিষয়ের, পরিবেশ বিভাগের ৩ নং ইউনিটের পাঠ ৩.৩ নং পাঠের অংশ।

এ কথা আজ সর্বজন স্বীকৃত যে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই—অ*াইড, মিথেন, নাইট্রাস অ*াইড, সি.এফ.সি প্রভৃতি গ্রীন হাউজ গ্যাসের বৃদ্ধিজনিতকারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। কিন্তু বায়ুমন্ডলে কী পরিমাণ তাপের বৃদ্ধি ঘটেছে বা ভবিষ্যতে ঘটবে তা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে সম্প্রতি যে চিত্র ফুটে ওঠেছে তা থেকে এটা নিশ্চিত যে, বিগত ১০০ বছরে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা ০.৫  ০.১ সেঃ বৃদ্ধি পেয়েছে বায়ুমন্ডলের গড়পড়তা তাপ ১৯৪০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি পেলেও পরবর্তী তিন দশকে প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। কিন্তু ৭০ এর দশকের পর থেকে তা হঠাৎ করে আবার বাড়তে থাকে এবং ৮০ দশকে তা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে। এর মধ্যে ১৯৮৮ সালের তাপমাত্রা গত ১৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল।

জীব জগত ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট

তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বায়ুমন্ডলের গড় তাপমাত্রা আরও ১.৫ থেকে ৪.৫ সেঃ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে আবহাওয়া ও পরিবেশ বিজ্ঞানীদের ধারণা। কিন্তু আবহাওয়াবিদদের মতে তাপমাত্রার গড় অপেক্ষা সাময়িক চরম বৃদ্ধিই বেশি বিপদজনক।

 

আবহাওয়াগত পরিবর্তন

গ্রীন হাউজ গ্যাস দ্বারা ভূ—পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুগত পরিবর্তনে নানা ধরনের জটিল প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি, মারাÍক খরা, বৃহৎ দাবানল স্থান বিশেষে শৈত্য প্রবাহ, অধিক হারে অপ্রত্যাশিত বন্যা ইত্যাদি। তবে বায়ুমন্ডলে গ্রীন হাউজ গ্যাসজনিত উত্তাপ বৃদ্ধির প্রভাব পৃথিবীর সর্বত্র একইভাবে হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন না। পৃথিবীর মধ্য অক্ষাংশে অবস্থিত দেশসমূহ যেমনঃ অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ স্থান, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মতো দেশসমূহের তাপমাত্রা জনিত আবহাওয়া পরিবর্তন প্রক্রিয়া সর্বাধিক অনুভূত হবে। আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির একটি বড় বিপদ এই যে, এটি কখন ঘটবে তা নিশ্চিতভাবে অনুধাবন করা যায় না।

হ্যারিকেনের তীব্রতা সম্পন্ন মাত্র কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানীর কারণ হতে পারে। আফ্রিকার অধিকাংশ স্থানে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে লাগাতার দুই তিনটি খরা—বৎসর লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনাহার ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। ফলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় ঘটবে যা কেবলমাত্র আণবিক যুদ্ধের ভয়াবহতার সাথে তুলনীয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।

জীব জগত ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ ,

 

বৃষ্টিপাতে প্রভাব

আবহাওয়ার পরিবর্তন হেতু বৃষ্টিপাতের ধরনেও বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। ফলে উর্ধ্ব—অক্ষাংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত, গ্রীস্মমন্ডলীয় অঞ্চলে ঘন ঘন বৃষ্টিপাত এবং মধ্য অক্ষাংশে গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে শীতকালে হবে আর্দ্র এবং গ্রীস্মকাল হবে শুষ্ক। পক্ষান্তরে উপ—গ্রীস্মীয় অঞ্চল যা ইতোমধ্যেই শুষ্ক তা আরও শুষ্ক হয়ে যাবে।

গ্রীন হাউজ প্রভাবের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আগামী ৫০ বৎসরের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ হ্রাস পাবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। বিজ্ঞানীরা আরও মনে করেন যে আফ্রিকার নিরক্ষীয় অঞ্চলের বৃষ্টিপাত বেষ্টনী  উত্তর দিকে সরে গিয়ে সাহেল এলাকা আর্দ্রতাযুক্ত করবে এবং মধ্য চীনের প্রান্তীয় কৃষি ভূমিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটাবে। কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারতের বৃহত্তর অংশ হবে খরা কবলিত।

 

কৃষিতে গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া

কৃষিতে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটে থাকলেও বিশ্ব খাদ্য উৎপাদন আজও আবহাওয়া ও জলবায়ুগত উপাদানের উপর একান্তভাবে নির্ভরশীল। তাই জলবায়ুগত যে কোন্ পরিবর্তনে কৃষি তথা শস্য উৎপাদন, পশু পালন, বন ও মৎস্য চাষের উপর প্রত্যক্ষভাবে যে প্রভাব পড়বে তাতে কোন্ সন্দেহ নেই। কিন্তু বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ঋঅঙ) মতে বায়ুমন্ডলের তাপ বৃদ্ধি পেলে আজ যেখানে তীব্রশীত সেসব স্থানে শস্য উৎপাদন সম্ভব হবে। আগামী ১০০ বৎসরে মধ্য অক্ষাংশের জলবায়ু স্তর ি বজ্ঞানীদের ধারণা আগামী ৫০ থেকে ১০০ বৎসরের মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা ২—৫সেঃ বৃদ্ধি পেলে মেরু অঞ্চলের অধিকাংশ বরফ গলে  ি গয়ে সাগরের পানিতে যোগ হবে। তাছাড়া উত্তাপ বৃদ্ধিজনিত কারণে সাগরের পানির আয়তনও বৃদ্ধি পাবে।

ফলে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ০.৩ থেকে ১ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আশংকা করা হচ্ছে। এবং এর সাথে সম্পৃক্ত ইকোসিস্টেম ২০০ থেকে ৭০০ কিমি পর্যন্ত মেরুর দিকে স্থানান্তরিত হবে। এতে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের দেশসমূহ উপকৃত হবে। কিন্তু শুষ্ক ও উপশুষ্ক অঞ্চলের (অৎরফ ধহফ ংবসর ধৎরফ ুড়হব) দেশসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সাহারা মরুভূমি যদি ২০০ কি. মি. দক্ষিণ দিকে সরে যায় তবে সেখানকার সম্পদ শতকরা ৩০ জন লোকের খাদ্য সংস্থান দিতে অসমর্থ হবে।

উদ্ভিদের খাদ্য ও অন্যান্য উপকরণ যথার্থ বজায় থাকলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই—অ*াইড বৃদ্ধি জনিত কারণে ফসলের উৎপাদন ১০ থেকে ৮০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি উৎপাদনে দু’টি উৎকণ্ঠাজনক উপাত্ত হচ্ছে উŽচ তাপমাত্রা ও স্থানীয় বৃষ্টিপাত বা সেচের ঘাটতি। গ্রীন হাউজ প্রভাবের কারণে সৃষ্ট উচ্চ তাপমাত্রা ভুট্টা ও সয়াবিনের মতো কিছু কিছু উদ্ভিদ চাষের বিস্তৃতি ঘটালেও পৃথিবীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল ধানের পুষ্পায়নের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। উদ্ভিদের খাদ্য ও অন্যান্য উপকরণ যথার্থ বজায় থাকলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই—অ*াইড বৃদ্ধি জনিত কারণে ফসলের উৎপাদন ১০ থেকে ৮০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কার্বন ডাই— অ*াইডের উর্বরতা সাধন ক্ষমতা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত। ফলে উন্নত বিশ্বে গ্রীন হাউজে ফসল উৎপাদনে CO2 কে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটা ধারণা করা হয় যে বর্তমান সময়ে ফসলের বর্ধিত উৎপাদনের পিছনে আংশিকভাবে হলেও বায়ুমন্ডলে বর্ধিত কার্বন ডাইঅ*াইডের একটি ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।

জীব জগত ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ ,

কার্বন ডাই অ*াইডের ইতিবাচক দিক প্রকৃতিতে উদ্ভিদের কার্বন বিপাকের জন্য ঈ৩ ও ঈ৪ জাতীয় দুইটি ভিন্নতর পদ্ধতি রয়েছে। বর্ধিত কার্বন ডাই—অ*াইডের প্রতি সাড়া প্রদানে ঈ৩ উদ্ভিদ ঈ৪ উদ্ভিদ অপেক্ষা বেশি কার্যকরী। এতে করে তুলনামূলকভাবে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ফসল যেমনঃ গম, বার্লি ইত্যাদি অধিক সুবিধা ভোগ করবে। পক্ষান্তরে, আখ, ধান প্রভৃতি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফসল কম সুবিধা পাবে। বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই—অ*াইডের আরেকটি ইতিবাচক দিক হচ্ছে সকল ফসলের জন্য উন্নততর পানি ব্যবহার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এর ফলে কম পানি ব্যবহার দ্বারা শুষ্ক ও উপ—শুষ্ক অঞ্চলে (অৎরফ ্ ংবসর ধৎরফ ৎবমরড়হং) ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধি জনিত প্রতিক্রিয়া

পৃথিবীর মোট জলরাশির শতকরা ৯৭.৫ ভাগ সাগর এবং মহাসাগরে, দুই ভাগ উŽচ পর্বত—শৃঙ্গ ও মেরু অঞ্চলে এবং বরফে আবদ্ধ। বাকি ০.৫ ভাগের মধ্যে রয়েছে নদ—নদী, খাল—বিল, হ্রদ, ডোবা—নালা, ঝরণা ও ভুগর্ভস্থ পানির আধার। বিজ্ঞানীদের ধারণা আগামী ৫০ থেকে ১০০ বৎসরের মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা ২—৫সেঃ বৃদ্ধি পেলে মেরু অঞ্চলের অধিকাংশ বরফ গলে গিয়ে সাগরের পানিতে যোগ হবে। তাছাড়া উত্তাপ বৃদ্ধিজনিত কারণে সাগরের পানির আয়তনও বৃদ্ধি পাবে। ফলে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ০.৩ থেকে ১ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আশংকা করা হচ্ছে । তবে মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, বার্মা, চীনসহ পৃথিবীর বহু নিম্নাঞ্চল এবং বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা লবণাক্ত পানির নিচে ডুবে যাবে।

হারিয়ে যাবে চাষ যোগ্য উর্বর জমি। গৃহহীন হবে লক্ষ লক্ষ জনপদ। বিনষ্ট হবে উপকূলীয় মৎস্য চাষ ও ম্যানগ্রুভ বনাঞ্চল। জলোচ্ছ্বাসের আওতায় আসবে উপকূলীয় নিম্নভূমি। ব—দ্বীপ অঞ্চলের স্বাদু পানির আধারগুলো লবণাক্ত পানিতে ভরে যাবে। এভাবেই ব্যাপক পরিবর্তন আসবে জৈব—ইকোসিস্টেমে।

 

মৎস্য চাষে প্রভাব

আবহাওয়াগত পরিবর্তনের ফলে মৎস্য স¤žদের উপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হবে, তা সে সাগর বা মিঠা পানি যেখানেই হোক। মাছের সামুদ্রিক আবাসস্থল ও প্লাংটনের স্থানান্তর ঘটবে, ব্যহত হবে উৎপাদনশীলতা। স্বাদু পানির মাছ খরা, বন্যা ও উচ্চ তাপ দ্বারা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে চিংড়ী চাষ। ফলে মৎস্য চাষ ও আহরণের সাথে সম্পৃক্ত লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন যাত্রায় পড়বে চরম টানা পোড়া।

বনসম্পদে প্রভাব পৃথিবীর কার্বন চক্র বিবর্তনে বৃক্ষরাজির ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ২০০০ বিলিয়ন কার্বন পৃথিবীর সবুজ গাছপালা ও মাটি ধারণ করে আছে, যা বায়ুমন্ডলে অবস্থিত মোট কার্বনের প্রায় তিন গুণ। বৃক্ষনিধন বা অপসারণের ফলে ধারণকৃত কার্বন জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে অথবা প্রাকৃতিক উপায়ে জারিত হয়ে পুণরায় বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ১৯৫০ থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে বন নিধনের ফলে ৯০—১৮০ বিলিয়ন টন কার্বন বায়ুমন্ডলে জমা হয়েছে যা কয়লা ও জ্বালানি
থেকে জমাকৃত কার্বনের প্রায় সমপরিমাণ।

বর্ধনশীল গাছপালা সালোক—সংশে­ষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাই—অ*াইড শোষে নেয় এবং আত্তীকরণ করে রাখে। অধিক হারে বৃক্ষ নিধনের অর্থ হবে একদিকে কার্বন আত্তীকরণ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়া, অন্য দিকে কর্তিত বৃক্ষরাজির জারণ প্রক্রিয়া থেকে বায়ুমন্ডলে আরও কার্বন জমা হওয়া। ফলে গ্রীন হাউজ প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পাবে।

গ্রীন হাউজ প্রভাবজনিত উত্তাপ বৃদ্ধিতে বৃক্ষরাজি ও অন্যান্য উদ্ভিদের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। অধিকাংশ বৃক্ষই স্বল্প পরিসর তাপমাত্রার মধ্যে (ঘধৎৎড়ি ৎধহমব ড়ভ ঃবসঢ়বৎধঃঁৎব) অভিযোজিত। বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি সে: বৃদ্ধি পেলে তা হবে বনভুমির জন্য বিপর্যয়কর। কারণ এতে বর্তমান জলবায়ু অঞ্চলগুলো শত শত কি. মি. মেরু অঞ্চলের দিকে সরে যাবে। কিন্তু বনাঞ্চল সরে যাবার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান হার তার চেয়েও অধিক। তাই সময়মত বনাঞ্চল অভিবাসন প্রক্রিয়া জোরদার করা না হলে বনাঞ্চলের জীব বৈচিত্র্য মারাÍকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

জীব জগত ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট , কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ , পরিবেশ ,

 

গ্রীন হাউজ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে করণীয়

গ্রীন হাউজ প্রভাব মানব সৃষ্ট একটি বিশ্ব—ব্যাপি সমস্যা। “মানব সভ্যতা অদ্যাবধি যতগুলো সমস্যা “মানব সভ্যতা অদ্যাবধি যতগুলো সমস্যা মোকাবেলা করেছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যাটি হলো এর ভিতর সবচেয়ে মারাত্বক” মোকাবেলা করেছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যাটি হলো এর ভিতর সবচেয়ে মারাত্বক” (আল গোর, উপরাষ্ট্রপতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট, এপ্রিল ১৯৯৪)। সুতরাং আঞ্চলিকভাবে এর কোন্ সমাধান সম্ভব নয়। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে বর্তমান দূষণ হার এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ব—ব্যাপি যে পদক্ষেপগুলো নেয়া উচিত তা হলোঃ

* জীবাশ্ম জ্বালানি যথাসম্ভব নিম্নমাত্রায় রাখতে হবে এবং বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপদ জ্বালানির উৎস খঁুজতে হবে।

* পুনঃব্যবহারযোগ্য শক্তি যা সাধারণভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটায় না যেমনঃ বায়ু, পানি, সৌরশক্তি, পারমানবিক শক্তি ইত্যাদি ব্যবহারের প্রতি বেশি নজর দিতে হবে।

* স্বল্প তেল ব্যবহার উপযোগী মটরযান উদ্ভাবন করে জ্বালানি ব্যবহার কমাতে হবে।

* প্রাকৃতিক বন সম্পদ সংরক্ষণ ও নতুন করে বনায়নের ব্যবস্থা নিতে হবে।

* কৃষিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

* সস্তা বিকল্প আবিস্কারের মাধ্যমে ঈঋঈং ব্যবহার কমাতে হবে বা প্রয়োজনে বন্ধ করে দিতে হবে।

* মটরযান ও শিল্প কারখানা থেকে নির্গত ধূঁয়া থেকে গ্রীন হাউজ গ্যাস অপসারণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।

* শিল্প কারখানা গুলো নিরাপদ রাখার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।

* ধানের জমি থেকে অল্প মিথেন নির্গত হয় এমন সব ধানের জাত উদ্ভাবন করতে হবে।

* গ্রীন হাউজ প্রভাব দূরীকরণে উন্নত বিশ্বকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।

* গণ—মাধ্যম ও অন্যান্য মাধ্যমের মাধ্যমে গ্রীন হাউজ প্রভাবের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

* স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে।

* যেহেতু জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত কারণেও পরিবেশের দূষণ হচ্ছে সে কারণে জনসংখ্যা বিস্ফোরণরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

আরও দেখুন :

Leave a Comment