আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-বাচ্চা ফোটানোর জন্য ডিম নির্বাচন ও সংরক্ষণ
Table of Contents
বাচ্চা ফোটানোর জন্য ডিম নির্বাচন ও সংরক্ষণ
সব ডিম থেকে বাচ্চা হয় না। তাই বাচ্চা উৎপাদনের জন্যসঠিক ভাবে বাছাই করে ভালো মানের ডিম নির্বাচন করতে হয়। ডিমের আকার, ওজন ও গুণাগুণ পরীক্ষা করে ডিম বাছাই করা যায়। ভালো মানের বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ডিম সঠিকভাবে সংরক্ষণও করতে হয়। বাচ্চা ফোটানোর ডিম নির্বাচন ও সংরক্ষণ সম্পর্কে নিম্নে বর্ণনা করা হলো :
বাচ্চা ফোটানোর উপযোগী ডিম নির্বাচন
ডিম বাছাই করার সময় নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে :
১। সুস্থ হাঁস-মুরগির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন উর্বর বা নিষিক্ত ডিম ফোটানোর জন্য ব্যবহার করতে হয়।
২। বাচ্চা উৎপাদনের জন্য মাঝারী আকারের ডিম বাছাই করে নিতে হয়। অস্বাভাবিকভাবে বড় বা ছোট, বিকৃত আকারের ডিম বাচ্চা ফোটানোর উপযোগী নয়।
৩। ফোটানোর ডিমের ওজন হাঁসের ক্ষেত্রে ৬০-৭০ গ্রাম এবং মুরগির বেলায় ৫০-৬০ গ্রামের মধ্যে হতে হয়।
৪। বাচ্চা ফোটা, ভাঙ্গা, অমসৃণ বা পাতলা খোসা বিশিষ্ট ডিমে বাচ্চা হয় না।
৫। ডিমের ভিতরের অংশ স্বচ্ছ এবং কুসুম মাঝখানে থাকলে সে ডিম বাচ্চা ফোটানোর জন্য উত্তম।
৬। বিভিন্ন জাতের মুরগির খোসার রং বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। ডিমের খোসার রং সাদা, বাদামি রঙের হয়ে থাকে। তাই যে জাতের মুরগি যে রংগের ডিম দেয় সে অনুযায়ী ডিম বাছাই করতে হয়।
৭। বেশি পুরাতন ডিমে বাচ্চা ফুটার ক্ষমতা কমে যায়। তাই গ্রীষ্মকালে ৩-৪ দিন এবং শীতকালে ৭-১০ দিনের বেশি পুরাতন ডিম ফোটানোর জন্য ব্যবহার না করা ভালো।
৮। দূরবর্তী স্থান থেকে ডিম সংগ্রহ করলে তা কিছু সময় রাখার পর ফোটানোর জন্য বসাতে হয়।
বাচ্চা ফোটানোর ডিম সংরক্ষণ
১। ডিম সঠিকভাবে সংরক্ষণের উপর বাচ্চা ফোটার হার নির্ভর করে। ডিম সাধারণত ১০- ১৫.৬° সেঃ (৫০-৬০০ ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় এবং ৬০-৭০% আপেক্ষিক আর্দ্রতায় সংরক্ষণ করতে হয়। গ্রামের বাড়ীতে ঘরের ঠান্ডা স্থান বা ঠান্ডা পাত্রে ডিম রাখা যায়।
২। ডিমের মোটা অংশ উপরের দিকে রাখতে হয়। কারণ মোটা অংশে বায়ুকুঠুরি থাকে।
৩। ডিমে যেন ঝাঁকি না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়।
৪। সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে ডিম সংরক্ষণ করতে হয়।
৫। ফোটানোর জন্য গ্রীষ্মকালে ৩-৪ এবং শীতকালে ৭-১০ দিনের বেশি ডিম জমা করে না রাখা ভালো।
৬। ফোটানোর ডিম ৭ দিনের বেশি সংরক্ষণ করলে দিনে ৩-৪ বার উল্টিয়ে দেয়া ভালো।
ডিম অনুবর বা নিষিক্ত না হওয়ার কারণ
১। হাঁস-মুরগি দুর্বল এবং রুগ্ন হলে।
২। হাঁসা হাঁসী বা মোরগ-মুরগি কমপক্ষে ৭ দিন একসাথে না রাখলে।
৩। হাঁসা হাঁসী বা মোরগ-মুরগি সংখ্যা আনুপাতিক হারে না হলে।
৪। ডিম অনেক দিনের পুরাতন হলে এবং সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে।
৫। হাঁস-মুরগির বয়স দুই থেকে আড়াই বছরের বেশি হলে।
৬। সুষম খাদ্য প্রদান না করা হলে।
৭। আবহাওয়াজনিত কারণে অত্যধিক গরম বা ঠান্ডায় ডিম অনুর্বর হয়ে থাকে।
৮। মুরগির ঘর স্বাস্থ্যসম্মত না হলে এবং ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু না হলে।
সারমর্ম
• বাচ্চা উৎপাদনের ডিম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সঠিক আকার ও ওজন বিশিষ্ট, মসৃণ ও নিষিক্ত বা উর্বর হতে হয়। ডিম সাধারণত ১০০- ১৫.৬০ সে. তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।
• বেশি পুরাতন ডিমে বাচ্চা ফোটার ক্ষমতা কমে যায়। ডিম গ্রীষ্মকালে ৩-৪ দিন এবং শীতকালে ৭-১০ দিনের বেশি জমা করে রাখা ঠিক নয়।