আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়- ব্যবহারিক: বাচ্চা ছাগলের ১০ কেজি দানাদার খাদ্য তৈরি।
Table of Contents
ব্যবহারিক: বাচ্চা ছাগলের ১০ কেজি দানাদার খাদ্য তৈরি
বিষয়-১: বাচ্চা ছাগলের ১০ কেজি দানাদার খাদ্য তৈরি।
উপকরণ
১। দানাদার খাদ্যের উপকরণ
ছোলা: ২ কেজি
ভুট্টা বা গম ভাঙ্গা: ২.২ কেজি
তিল বা চীনাবাদামের খৈল: ৩.৫ কেজি
গমের ভুষি: ২ কেজি
খনিজ মিশ্রণ ২৫০ গ্রাম
লবণ ৫০ গ্রাম
মোট ১০ কেজি
মাপার যন্ত্রপাতি
২। দাঁড়িপাল্লা এবং ওজন
৩। ট্রে বা বালতি;
৪। পলিথিন কাগজ এবং পলিথিন ব্যাগ, অ্যালুমিনিয়াম ডিশ / বোল।
কাজের ধাপ
১। প্রথমে নমুনা অনুযায়ী ১০ কেজি খাদ্য তৈরির একটি তালিকা তৈরি করুন।
২। সমতল ও পরিষ্কার জায়গায় পলিথিনটি বিছিয়ে নিন।
৩। খনিজ মিশ্রণ ও লবণ বাদে অন্যান্য উপকরণগুলো মেপে পলিথিনের উপর রাখুন।
৪। খনিজ মিশ্রণ ও লবণ দিয়ে একসাথে উপকরণগুলো ভালো করে মিশিয়ে নিন।
৫। তৈরি খাদ্য ১ কেজি করে ১০টি পলিথিনের ব্যাগে ভরে শুকনা জায়গায় রাখুন।
দানাদার খাদ্য
যেসব খাদ্যে আয়তনের তুলনায় খাদ্যমান অপেক্ষাকৃত বেশি এবং সহজপাচ্য তাকে দানাদার খাদ্য বলা হয়। দানাদার গোখাদ্যগুলো হলো চালের কুঁড়া গমের ভুসি, ভুট্টা, বিভিন্ন প্রকার খৈল, কলাই, ছোলা, খেসারি, সয়াবিন ও শুকনো মাছের গুঁড়া এসব।
আমিষের পরিমাণ ভিত্তিতে দানাদার খাদ্যগুলো তিন ভাগে করা যায়। ক. কম আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন- কুঁড়া, ভুসি (৫-১৫% আমিষ)। খ. মধ্যম আমিষসমৃদ্ধ খাদ্য যেমন- খৈল, কলাই, ছোলা ২০-২৫% আমিষ। গ. উচ্চ আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য শুকনো মাছের গুঁড়া, কসাই খানার মাংসের কণা, রক্তের গুঁড়া ৩৫-৪৫% আমিষ।
বাছুরের খাদ্য
বাছুর প্রসবের পরেই বাছুরকে তার মায়ের প্রথম দুধ অর্থাৎ কাচলা দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ রোগ প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে। বাছুরের প্রধান খাদ্য দুধ কারণ জন্মের পর পর প্রথম সপ্তাহে বাছুর দুধ ছাড়া কিছুই খেতে পারে না।
বাছুরের ওজনের প্রতি ১০ কেজির জন্য ১ কেজি দুধ প্রতিদিন খেতে দিতে হবে। গরুর বাচ্চা ৩০ কেজির ওপর ওজন হলেও ৩ কেজি দুধ সরবরাহ করতে হবে। দুই সপ্তাহ থেকে বাছুরকে সামান্য কিছু ঘাস ও দানাদার খাবার দেয়া যেতে পারে। বাছুরের বয়স ৭-৮ মাস হওয়ার পরে যথেষ্ট পরিমাণে আমিষ জাতীয় দানাদার খাদ্য দিতে হবে। প্রথমত, ছোবড়াজাতীয় খাদ্য না দিয়ে সহজপাচ্য সবুজ ঘাস দিতে হবে। বাছুরের শারীরিক বৃদ্ধি প্রধানত পরিপাকযোগ্য আমিষ সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। বয়স বাড়ার সাথে খাদ্যের পরিমাণও বাড়বে।
দুধালো গাভীর খাদ্য
সাধারণত দুধালো গাভীর প্রতি ১০০ কেজির জন্য ২ কেজি খড় সরবরাহ করতে হয়। ১ কেজি খড় ৩ কেজি তাজা সবুজ ঘাসের সমতুল্য। গাভীকে প্রতি ১০০ কেজি ওজনের জন্য ১ কেজি শুকনো আঁশযুক্ত খাদ্য (খড়) এবং ৩ কেজি তাজা সবুজ আঁশযুক্ত খাদ্য ঘাস দেয়া প্রয়োজন।
অর্থাৎ ৫০০ কেজি ওজনের একটি দুগ্ধবতী গাভীকে ৫ কেজি শুকনো খড় এবং ১৫ কেজি সবুজ ঘাস সরবরাহ করতে হবে। দানাদার খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা দুধ উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। দুধ উৎপাদনের প্রথম ৩ কেজির জন্য প্রয়োজন ৩ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্য এবং পরবর্তী প্রতি ৩ কেজির জন্য প্রয়োজন ১ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্য। অবশ্য যদি দুধে স্নেহ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ৪ ভাগ বা তার নিচে থাকে।
দুধে স্নেহ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ৪ ভাগের বেশি হলে প্রতি ৩ কেজি দুধের পরিবর্তে প্রতি আড়াই কেজি দুধের জন্য ১ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এ হিসাবে দেশি ও সংকর জাতের গাভীকে সর্বোচ্চ ৬ কেজি এবং বিশুদ্ধ বিদেশি গাভীকে সর্বোচ্চ ৮ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হয়।