আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ব্যবহারিক:বাছুরকে বাদলা রোগের টীকা দান। বাদলা রোগ Clostridium chauvoei নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা গাবদিপশুর এক ধরণের মাংসপেশিতে পচন ধরণো এর রকমের রোগ হয়। এই রোগকে বাদলা বা Black Quarter বলা হয়। এই রোগ সাধারণত বর্ষাকালে ও ২ মাস থেকে ২ বছর বয়সের প্রাণির বেশি হয়ে থাকে । খাদ্য ও পানির মাধ্যমে সচরাচর এ রোগ সংক্রমিত হয়। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ একটি রোগ।
এ রোগে পশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ মৃত্যুর হার ১০০ ভাগই। প্রতি বছর বিশেষত বর্ষার পরে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় অনেকাংশে। বাংলাদেশের অনেক গরুই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। আজ এই রোগের টিকা দানের ব্যবহারিক নিয়ে আলোচনা করবো।
Table of Contents
বাছুরকে বাদলা রোগের টীকা দান [ ব্যবহারিক ]
বাদলা রোগের টীকা দানে প্রয়োজনীয় উপকরণ:
১। ৪-৫ মাস বয়সের একটি বাছুর;
২। ১ বোতল বাদলা টাকা
৩। সিরিঞ্জ ও সুচন
৪। গরম পানি
৫। তুলা ও স্পিরিট:
৬। খাতা ও কল
বাদলা রোগের টীকা দানে কাজের ধাপ:
১। সিরিঞ্জ ও সুচ গরম পানিতে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিন।
২। বোতলের মুখের অ্যালুমিনিয়াম ঢাকনা ভেঙ্গে নিন।
৩। সিরিঞ্জ ও সুঁচের সাহায্যে রাবার কর্ক ছিদ্র করে বোতল হতে ৫ মিলি, টীকা সিরিঞ্জে উঠিয়ে নিন 1
৪। বাছুরটিকে আদর করে একজনে শক্ত করে ধরুন।
৫। গলার চিলা চামড়া এক হাতে ধরে অন্য হাত দিয়ে চামড়ার নিচে সুচ ফুটা করে দিন ।
৬। সিরিঞ্জের টাকা সূচের মধ্য দিয়ে ইনজেকশন দিন ।
৭। সুচ বের করে জায়গাটি মালিশ করে নিন। স্পিরিট মিশ্রিত তুলা দিয়ে জায়গাটি ঘষে দিতে পারেন।
৮। একই নিয়মে অন্যান্য পশুকে টাকা দিয়ে ১০০ মিলি টাকা ব্যবহার করে ফেলুন।
৯। খাতায় ধারাবাহিকভাবে লিখুন।
বাদলা রোগের টীকা দানে সাবধানতা:
১। টাকা সিরিঞ্জে উঠানোর পূর্বে প্রতিবারই বোতল ঝুকিয়ে নিতে হবে।
২। বোতলের টাকা ব্যবহার করা আরম্ভ করলে ১ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে। কিছু ব্যবহার করে কিছু পরে ব্যবহারের জন্য রাখা যাবে না।
৩। গৰু যেন লাফালাফি না করে সে ব্যাপারে সাবধান হবেন।
গবাদিপশুর মারাত্মক রোগগুলোর মধ্যে বাদলা বা ব্লাক কোয়াটার (Black Quarter) একটি অন্যতম। এ রোগে পশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ মৃত্যুর হার ১০০ ভাগই। প্রতি বছর বিশেষত বর্ষার পরে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় অনেকাংশে।
বাংলাদেশের অনেক গরুই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ।কারণ ঘাতক এ রোগটির জন্য দায়ী ক্লোস্টোডিয়াম চোউভি (Clostridium chauvoei) নামক ব্যাকটেরিয়া। এটা গ্রাম পজিটিভ, অবায়ুরোধী, স্পোর সৃষ্টিকারী দ-াকৃতির ব্যাকটেরিয়া। এ জীবাণু সহজেই সংক্রামিত হতে পারে।
রোগতত্ত্ব-এপিডেমিওলজি :
মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা প্রায় সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে আছে। তবে কিছু কিছু দেশে তাদের উন্নত ব্যবস্থাপনা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে কম। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ রোগের প্রকোপ বেশি। বিশেষত বর্ষাকালে পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর পরই এর প্রভাব বেশি লক্ষ করা যায়।
এটি এমন রোগ যা সাধারণত হৃষ্টপুষ্ট পশুতেই বেশি হয়ে থাকে। যাদের বয়স ৬ মাস থেকে ১/২ বছরের মধ্যে। এ সময় গরুর মাংস পেশি অনেক ভালো থাকে। যার ফলে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলেই খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে রোগের পরিণাম ঘটিয়ে থাকে।
ছাগল ও ভেড়ার ক্ষেত্রে এ রোগ যে কোনো বয়সে হতে পারে। তবে এর সংখ্যা তুলনামূলক খুবই কম থাকে। চিকন পশুর চেয়ে মোটা পশুতেই এর প্রকপ বেশি লক্ষণীয়। গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ১০ বছর পর এ রোগের সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। বাদলা রোগ যেসব ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে তা হলো বয়স বাদলা রোগের ক্ষেত্রে বয়সের হিসাব নিকাশ খুবই বেশি। সাধারণত এ রোগে গরুর ক্ষেত্রে ৩ মাস থেকে ২ বছরেই বেশি হয়।
খাদ্য : বেশি পুষ্টি সম্পন্ন পশুর ক্ষেত্রে এ রোগ বেশি হয় ।
যেসব প্রাণী আক্রান্ত হয় : বাদলা বা ব্লাক কোয়াটার সাধারণত গরু, ছাগল, ভেড়া মহিষসহ অন্যান্য প্রাণীতেও হয়ে থাকে।