বীজের বিশুদ্ধতা কৃষি উৎপাদনে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একটি মানসম্পন্ন ও বিশুদ্ধ বীজ সরবরাহ কৃষকের উৎপাদনশীলতা, ফলনের পরিমাণ এবং ফসলের গুণগত মানে সরাসরি প্রভাব ফেলে। বিশুদ্ধ বীজ বলতে বোঝায়—বীজের মধ্যে কেবলমাত্র কাঙ্ক্ষিত (desired) জাতের বীজ থাকবে, যেখানে অন্য কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বা ভিন্ন জাতের বীজের উপস্থিতি থাকবে না। এর ফলে কৃষক নির্ভরযোগ্য ফলনের নিশ্চয়তা পায় এবং উপযুক্ত জাতের গুণাগুণ বজায় থাকে।
Table of Contents
বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয়
এই পাঠটি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএজি-এড ডিসিপ্লিনের “বীজ ও বীজ প্রযুক্তি (Course Code: ১১০২)” বিষয়ের চতুর্থ ইউনিটের ‘মৃত্তিকার জৈবিক বৈশিষ্ট্য’ অংশের অন্তর্ভুক্ত।
বীজের বিশুদ্ধতার গুরুত্ব
বীজ বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা না হলে—
- ফসলের জাতের বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে,
- উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে,
- রোগবালাই প্রতিরোধে সমস্যা দেখা দিতে পারে,
- বাজারে ফসলের মান ও গ্রহণযোগ্যতা কমে যেতে পারে।
বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয়
বীজের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য তার বিশুদ্ধতার হার নির্ধারণ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জানা যায়, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বীজে কাঙ্ক্ষিত জাতের বীজ কত শতাংশ রয়েছে এবং কতটা ভেজাল বা অনুপযুক্ত জাত মিশ্রিত হয়েছে।
বিশুদ্ধতার হার নির্ণয়ের মাধ্যমে কৃষক—
- সঠিক বীজ নির্বাচন করতে পারেন,
- ফলন বৃদ্ধির পরিকল্পনা নির্ভরযোগ্যভাবে করতে পারেন,
- উচ্চমানসম্পন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে সক্ষম হন।
এই পাঠে আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে বীজের বিশুদ্ধতার হার কীভাবে নির্ণয় করা হয়, তার ধাপ ও ব্যাখ্যা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা:
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়—কোনো বীজ নমুনায় ওজনের ভিত্তিতে শতকরা কত ভাগ মূল শস্য বীজ বিদ্যমান। এই পরীক্ষা কৃষিতে মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং ফলনের গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়তা করে।
একটি বীজ নমুনায় প্রধানত চারটি উপাদান থাকে:
উপাদানের ধরন | বর্ণনা | উদাহরণ |
(১) বিশুদ্ধ প্রজাতির বীজ | এটি কাঙ্ক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য জাতের বীজ যা উচ্চ ফলনশীল ও কৃষির জন্য উপযোগী। | যেমন: উন্নত জাতের ধান, গম, টমেটো, পালং ইত্যাদি |
(২) অন্যান্য প্রজাতির বীজ | ভিন্ন জাত বা অবাঞ্ছিত শস্যের বীজ যা উদ্দেশ্য ফসলের সাথে অপ্রাসঙ্গিক। | যেমন: প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ভিন্ন শস্য বীজ |
(৩) আগাছার বীজ | এ ধরনের বীজ থেকে উৎপন্ন গাছ ফসলের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে এবং জমির উর্বরতা নষ্ট করে। | যেমন: পুঁইশাক, গাঁদা, নালিশ, মঞ্জরি ইত্যাদি |
(৪) জড় পদার্থ | মাটি, পাতা, পাথর বা অন্য কোনো অনাবশ্যক বস্তু যা বীজের সঙ্গে মিশে থাকে। | যেমন: পাথর, শুকনো পাতা, ধুলাবালি ইত্যাদি |
এই চারটি উপাদানকে আলাদা করে ওজন করে দেখা হয় কত শতাংশ বিশুদ্ধ প্রজাতির বীজ রয়েছে। এই শতকরা হারই বীজের বিশুদ্ধতার হার হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশুদ্ধতার হার যত বেশি, বীজ তত বেশি মানসম্পন্ন ও ফলপ্রসূ।
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি:
বীজের বিশুদ্ধতা নির্ধারণ একটি সূক্ষ্ম ও মনোযোগসাপেক্ষ প্রক্রিয়া, যার জন্য নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্রপাতি অপরিহার্য। নিচে এই যন্ত্রপাতিগুলোর নাম ও ব্যবহার সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো:
(১) পিউরিটি বোর্ড (বা বীজ বোর্ড):
এটি একটি সাদা, মসৃণ ও সমতল পৃষ্ঠবিশিষ্ট বোর্ড, যা বীজ বিশুদ্ধতা পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়। বীজ ছড়িয়ে পরীক্ষার সময় বিভিন্ন উপাদান যেমন — বিশুদ্ধ বীজ, ভেজাল বীজ, ময়লা, খোসা, মৃত বীজ ইত্যাদি সহজে শনাক্ত করা যায়। রঙিন বা অমসৃণ পৃষ্ঠ বিশ্লেষণকে ব্যাহত করে, তাই সাদা পৃষ্ঠ ব্যবহার করা হয়।
(২) মাপক নিক্তি (দশমিক গ্রাম স্কেল, যথা: ±০.০০১ গ্রাম):
বীজের ওজন সঠিকভাবে নির্ধারণের জন্য এই সূক্ষ্ম মাপযন্ত্র ব্যবহার করা হয়। বিশেষত বিশুদ্ধতা পরীক্ষার সময় মোট ওজন ও বিশুদ্ধ অংশের ওজন নিরূপণ করতে এটি অপরিহার্য।
(৩) সাদা কাগজ:
বিকল্প পৃষ্ঠ হিসেবে, বিশেষ করে পোর্টেবল পরীক্ষার ক্ষেত্রে, সাদা কাগজ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি পরীক্ষার সময় পিউরিটি বোর্ডের কাজ করে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত উপাদান আলাদা করতে সুবিধা দেয়।
(৪) পেট্রি ডিস (মাঝারি ও বড় আকার):
বীজ বিশ্লেষণের সময়, বিশেষ করে অঙ্কুরোদগম বা জীববৈজ্ঞানিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে, পেট্রি ডিস ব্যবহার করা হয়। এতে বীজ সহজে পর্যবেক্ষণযোগ্য অবস্থায় রাখা যায়।
(৫) চিমটা (টুইজার):
ছোট ও সূক্ষ্ম বীজ বাছাই বা পৃথক করার সময় চিমটা ব্যবহার করা হয়। এটি বীজকে আঘাত না করে আলাদা করতে সহায়তা করে।
(৬) স্ট্যান্ডযুক্ত ম্যাগনিফাইং গ্লাস (আয়তন বাড়ানো কাচ):
ক্ষুদ্র বা সূক্ষ্ম গঠনের বীজ বা ভেজাল উপাদান বিশ্লেষণের জন্য এই যন্ত্রটি অত্যন্ত কার্যকর। স্থির স্ট্যান্ডের মাধ্যমে দুই হাত মুক্ত রেখে কাজ করা যায়, যা দীর্ঘ সময় ধরে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণে সহায়ক।
বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার ধাপ:
বীজের বিশুদ্ধতা নির্ধারণ একটি সঠিক কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়, যাতে বীজের মধ্যে অন্য কোনো প্রজাতির বীজ, আগাছা, বা জড় পদার্থ মিশে না থাকে। নিচে বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার বিস্তারিত ধাপ উপস্থাপন করা হলো:
১। ওজন মাপুন
প্রথমে, মাপক নিক্তি ব্যবহার করে কার্য সম্পাদন নমুনার সঠিক ওজন নিন। এটি নিশ্চিত করবে যে, আপনার কাছে সঠিক পরিমাণ বীজ রয়েছে যা পরীক্ষা করতে হবে।
২। বীজ ছড়িয়ে দেয়া
ওজন নেওয়ার পর, সমস্ত বীজ পিউরিটি বোর্ডে ছড়িয়ে দিন। তারপর, বীজগুলোকে নিম্নলিখিত উপকরণের ভিত্তিতে পৃথক করুন:
(ক) বিশুদ্ধ বীজ: সঠিক জাতের বীজ যা ফসল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত।
(খ) অন্য প্রজাতির বীজ: যেগুলো অন্য কোনো জাত বা প্রজাতির, যা সাধারণত উপযুক্ত নয়।
(গ) আগাছা বীজ: যেগুলো কৃষিকাজের জন্য অবাঞ্ছিত এবং ফসলের ক্ষতি করতে পারে।
(ঘ) জড় পদার্থ: মাটি, পাথর বা অন্য কোনো অবাঞ্ছিত উপাদান, যা বীজের সঙ্গে মিশে থাকে।
এই উপাদানগুলো সঠিকভাবে আলাদা করার জন্য, বিস্তারিতভাবে তাদের বৈশিষ্ট্য জানুন এবং সঠিকভাবে শনাক্ত করুন।
৩। বীজ পৃথক করা
বাছাই করা প্রতিটি অংশ পৃথক পৃথক পেট্রি-ডিসে রাখুন। এই সময়ে, বীজ শনাক্তকরণের জন্য যদি কোনো সন্দেহ থাকে, তবে স্ট্যান্ডযুক্ত ম্যাগনিফাইং গ্লাস ব্যবহার করুন। এটি আপনাকে বীজের বিস্তারিত গঠন এবং তার প্রকৃতি বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করবে।
৪। ওজন নির্ধারণ ও হিসাব করা
এরপর, প্রতিটি অংশের সঠিকভাবে (প্রয়োজনীয় সংখ্যক দশটি ঘর পর্যন্ত) পৃথক ওজন নির্ধারণ করুন এবং নিম্নলিখিত সূত্র ব্যবহার করে হিসেব করুন:
কার্য সম্পাদনের নমুনার ওজন (G গ্রাম)
নির্ধারিত অংশের মোট ওজন (W গ্রাম)
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, পরীক্ষার পর যদি G ও W এর মধ্যে ৫% এর বেশি পার্থক্য থাকে, তাহলে আবার পরীক্ষা করুন।
৫। বিশুদ্ধতা গণনা
প্রস্তুত করার পর, আপনি বীজের বিশুদ্ধতা নির্ধারণ করতে পারবেন। বিশুদ্ধতা হিসাব করার জন্য, নিম্নলিখিত সূত্র অনুসরণ করুন:
বীজের বিশুদ্ধতা (শতকরা হার)=(বিশুদ্ধ বীজের ওজনমোট নমুনার ওজন)×100\text{বীজের বিশুদ্ধতা (শতকরা হার)} = \left( \frac{\text{বিশুদ্ধ বীজের ওজন}}{\text{মোট নমুনার ওজন}} \right) \times 100
উদাহরণ:
মনে করুন, কার্য-সম্পাদন নমুনার ওজন ১০০ গ্রাম এবং এর মধ্যে বিশুদ্ধ বীজ পাওয়া গেছে ৯২ গ্রাম। তাহলে বিশুদ্ধতার হার হবে—
৯২১০০×১০০=৯২%\frac{৯২}{১০০} \times ১০০ = ৯২\%
এটি নিশ্চিত করবে যে, আপনার নমুনার মধ্যে কত শতাংশ বীজ বিশুদ্ধ। মনে করি, সম্পাদনের নমুনার ওজন এ গ্রাম, তখন অন্যান্য ওজন ও বীজের বিশুদ্ধতার সূত্র নিম্নরূপ হবে:
কার্য সম্পাদনের নমুনার ওজন G গ্রাম কার্য সম্পাদনের নমুনা বিভিন্ন অংশে পৃথক করার পর মোট ওজন W গ্রাম এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে হিসেব শেষ করার পর যদি কার্য সম্পাদন নমুনা G ও W এর মধ্যে ৫% এর বেশি পাথক্য থাকে তাহলে পূনরায় পরীক্ষা করুন।
এখন আমরা বিশুদ্ধ বীজ, অন্য প্রজাতির বীজ, আগাছা বীজ ও জড় পদার্থ সম্পর্কে আলোচনা করব।
বিশুদ্ধ বীজ অংশ:
বীজের বিশুদ্ধতা নির্ধারণে বিভিন্ন উপাদান পর্যবেক্ষণ করা হয়। এটি নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট প্রজাতির বৈশিষ্ট্য ও গুণগত মানের উপর। নিচে বিশুদ্ধ বীজ, অন্য প্রজাতির বীজ, আগাছার বীজ ও জড় পদার্থ চিহ্নিত করার বৈশিষ্ট্যগুলি তুলে ধরা হলো:
১. সম্পূর্ণ অক্ষত ও সুস্থ বীজ:
একটি বিশুদ্ধ বীজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি সম্পূর্ণ অক্ষত, দাগহীন ও সুস্থ হতে হবে। অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা সম্পন্ন এই বীজগুলোই পরবর্তীতে সুস্থ ও উৎপাদনক্ষম গাছের জন্ম দেয়।
২. ভ্রণসমৃদ্ধ ভাঙা বীজ:
যেসব ভাঙা বীজে অন্তত ৫০% অংশ, বিশেষত ভ্রণ অংশ অক্ষত থাকে, সেগুলোকে অনেক সময় বিশুদ্ধ বীজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এসব বীজের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে ম্যাগনিফাইং গ্লাস ব্যবহার করে পরীক্ষা করা আবশ্যক।
৩. চিটা বা আংশিক বিকৃত বীজ অন্তর্ভুক্ত নয়:
চিটা, অপরিপূর্ণ বা অর্ধ-গঠিত বীজকে বিশুদ্ধ বীজ হিসেবে গণ্য করা যায় না। এদের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা নেই এবং এগুলো উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
❌ অবিশুদ্ধ উপাদানসমূহ
১. অন্য প্রজাতির বীজ:
মূল ফসল ছাড়া অন্য যেকোনো প্রজাতির বীজ এই অংশে পড়ে। এদের উপস্থিতি চাষের কাঙ্ক্ষিত ফলন ব্যাহত করতে পারে, কারণ তারা অনাকাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য বহন করে।
২. আগাছার বীজ:
পরিচিত বা অজানা সব ধরনের আগাছার বীজ—যা সম্পূর্ণ, ভাঙা বা চিটা হতে পারে—বিশুদ্ধতার বাইরে বিবেচিত। এগুলো ফসলের পুষ্টি গ্রহণে প্রতিযোগিতা তৈরি করে এবং ক্ষেত্রকে আগাছা আচ্ছাদিত করে ফেলে।
৩. জড় পদার্থ:
যেসব উপাদান বীজ নয়—যেমন মাটি, ধুলো, পাথর, শুকনো শিকড়, খোসা, খড়কুটা ইত্যাদি—তারা জড় পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এসব পদার্থ বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে।
জড় পদার্থ নিম্নরূপ হবে:
বীজের বিশুদ্ধতা নির্ণয়ে জড় পদার্থের উপস্থিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। জড় পদার্থ বলতে বোঝায়—বীজ ছাড়াও অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয়, অবাঞ্ছিত ও অজৈব বস্তু যা বীজের গুণগত মান ও অঙ্কুরোদগমে বাধা সৃষ্টি করে। এইসব উপাদান বীজের ভৌত গঠনকে নষ্ট করে এবং কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
জড় পদার্থের ধরন ও তাদের প্রভাব
১. মূল শস্য বা অন্যান্য শস্য বীজের ৫০% এর কম উপস্থিতি:
যখন বীজের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত জাতের উপস্থিতি ৫০% এর কম হয়, তখন তা অদক্ষ বা নিম্নমানের বীজ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর ব্যবহার কৃষকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
২. ছাতাগুটি বা কৃত্রিম গুলের উপস্থিতি:
ছত্রাকজনিত ছাতাগুটি বা রোগাক্রান্ত অংশ কিংবা কৃত্রিমভাবে গঠিত গুল বীজের গুণগত মান নষ্ট করে দেয়। এটি বীজের সংক্রমণ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্ষেত্রেও রোগ ছড়িয়ে দিতে পারে।
৩. চিটা বীজের উপস্থিতি:
চিটা বা অপুষ্ট বীজ বীজতলার বা ক্ষেতে অঙ্কুরিত হয় না, ফলে এটি উৎপাদন হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. খড়কুটা, পাতা ও কান্ড:
এসব জৈব অবশিষ্টাংশ সংরক্ষণের সময় পচে যেতে পারে, যার ফলে বীজের আর্দ্রতা বাড়ে ও ছত্রাক জন্মায়, যা বীজের সংরক্ষণে বাধা সৃষ্টি করে।
৫. মাটি কণা, নুড়ি, ইটের টুকরা, ধুলাবালি ও মৃত/জীবিত কীটপতঙ্গ:
এ ধরনের অনুজৈব বস্তু বীজের ওজন বাড়িয়ে দেয়, পরীক্ষায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং সংক্রমণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষত মৃত বা জীবিত কীটপতঙ্গ শস্যের ক্ষতি করে ও গুদামে সংরক্ষণের সময় ঝুঁকি বাড়ায়।
সূত্র:
- বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয় , বীজ উৎপাদন , ইউনিট-৪ , পাঠ-৪.৪