ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

এই পাঠ শেষে আপনি-

  • উলের গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করে ছক আকারে ভেড়ার নামের তালিকা তৈরি করতে পারবেন।
  • ভারত ও পাকিস্তানের কয়েকটি ভেড়ার জাতের নাম বলতে পারবেন।
  • বাংলাদেশের ভেড়ার বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারবেন।
  • ছক আকারে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জাতের ভেড়ার নাম, উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে পারবেন।

 

ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

 

ছাগলের মতো পৃথিবীতে ভেড়ারও বহু জাত রয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এই জাতগুলোকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

  • উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে, যেমন- মাংস ও উল উৎপাদকারী।
  • মুখমন্ডলের রঙের ওপর ভিত্তি করে, যেমন- কালে বা সাদা মুখমণ্ডল।
  • শিংয়ের ওপর ভিত্তি করে, যেমন- শিং আছে বা শিং নেই।
  • লেজের আকৃতির ওপর ভিত্তি করে, যেমন- লম্বা লেজ, মোটা লেজ বা খাটো লেজ।
  • উলের গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করে, যেমন- সূক্ষ্ণ উল, মাঝারি উল, লম্বা উল, কার্পেট উল, ফার টাইপ ইতাদি।
  • উৎপত্তিস্থান অনুযায়ী, যেমন- পাহাড়ি জাত, সমতলভূমির জাত বা নিম্নভূমির জাত।

গৃহপালিত পশুর মধ্যে উল উৎপাদনের জন্য ভেড়ার গুরুত্ব সর্বাধিক আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ভেড়ার পশম থেকে উৎপাদিত শীতবস্ত্রের চাহিদা বিশ্ববাজারে ব্যাপক। এই কারণে উলের গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করে ভেড়ার শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। সারণি ১২-এ চার্ট আকারে তা তুলে ধরছে।

সারণি ১২ : উলের গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করে ক্রেয়ার শ্রেণিবিন্যাস

 

ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ভেড়ার জাতসমূহ

অঞ্চলভিত্তিতে ভারতীয় ভেড়াকে মোট তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। য হিমালয় অঞ্চলের ভেড়া, যেমন- ওরেজ, কার্নাল, বাখরওয়াল, গাদি ইত্যাদি শুষ্ক পশ্চিমাঞ্চলীয় ভেড়া, যেমন- লোহি, কাচ্চি, মারওয়ারি, চোকলা, নালি, কাথিওয়ারি ইত্যাদি। দক্ষিণাঞ্চলীয় ভেড়া, যেমন- সেলারি, মান্দা, দামাস্কাস, বেলোরি, সোনাদি ইত্যাদি৷ পূর্বাঞ্চলীর ভেড়া, যেমন- শাহবাদি।

পাকিস্তানি জাতসমূহ

পাকিস্তানে ভেড়ার প্রায় ১৫টি জাত রয়েছে। এরা প্রধানত কার্পেট উল উৎপাদন করে। যেমন- ভাওয়ালপুরি, বিত্রিক, বলছি, দামানি, হর্নাই, হস্তানগরি, কাগনি, কাজলি, কোকা, লোহি, খাল, আফ্রিদি, ওয়াজিরি ইত্যাদি।

বাংলাদেশী ভেড়া

বাংলাদেশী ভেড়া অনুন্নত এবং দেশী ভেড়া হিসেবে পরিচিত। এদের নির্দিষ্ট বা স্থায়ী কোনো বৈশিষ্ট্য নেই। এদেরকে অধিক সংখ্যায় নোয়াখালীর চরাঞ্চলের ভূমি, সন্দীপ, ঢাকা, টাঙ্গাইল, চাপাইনবাবগঞ্জ নওগা প্রভৃতি অঞ্চলে দেখা যায়।

দৈহিক বৈশিষ্ট্য

এদের গায়ের রঙ সাদা, কালো, বাদামি বা মিশ্র হয়ে থাকে। এরা আকারে ছোট, চুট পর্যন্ত উচ্চতা ৪৪ সে.মি। বুকের বেড় প্রায় ৬৫ সে.মি। মাথা, ঠোঁট, নাক সোজা; কান খাটো, গলা চিকন, পিঠ সোজা, পশ্চাদভাগ মোটামুটি গড়নের ও উন্নত। ভেড়া ও ভেড়ার ওজন যথাক্রমে ২০-২৫ ও ১৫- ১৮ কেজি।

গুণগত বৈশিষ্ট্য

এদেরকে প্রধানত মাংসের জন্য পালন করা হয়। বছরে গড়ে প্রায় ৫০০ গ্রাম মোটা পশম (উল) পাওয়া যায়। সামান্য পরিমাণ দুধও দেয়। কিন্তু এরা খুবই উর্বর ও ঘন ঘন বাচ্চা দেয়। ভেড়ী প্রতি ১৫ মাসে অন্তত দু’বার বাচ্চা দিয়ে থাকে। প্রতিবারে ২টি করে বাচ্চা দেয়।

এদের পশম দিয়ে মোটা কম্বল, কার্পেট, মাফলার ইত্যাদি তৈরি করা যায়। কার্পেট তৈরির জন্য এই পশম খুবই ভালো। তবে, পরিধেয় বস্ত্র তৈরির জন্য এটা খুবই নিম্নমানের। এখানে সারণি ১৩-এর মাধ্যমে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জাতের ভেড়ার উৎপত্তি, দৈহিক ও গুণগত বৈশিষ্ট্যাবলী বর্ণনা করা হয়েছে।

সারণি ১৩ : কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জাতের ভেড়ার উৎপত্তি, দৈহিক ও গুণগত বৈশিষ্ট্য

 

ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

 

ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

ভেড়ার জাত ও বৈশিষ্ট্য

Leave a Comment