মাটির বুনট

আজকের আলোচনার বিষয় মাটির বুনট। এটি ইউনিট-২ এর ২.৩ নং পাঠের অংশ। মৃত্তিকার একটি মৌলিক ও স্থায়ী ভৌত ধর্ম হলো বুনট। মৃত্তিকায় মূলত বালি, পলি ও কর্দম—এই তিন ধরনের কণা উপস্থিত থাকে। এই তিন কণার তুলনামূলক অনুপাত বা শতকরা হারকে মাটির বুনট বলা হয়। অন্যভাবে বললে, মৃত্তিকায় বালি, পলি ও কর্দম কণার পারস্পারিক অনুপাত হলো মাটির বুনট। এটি মৃত্তিকার প্রধান ভৌত ধর্মগুলোর একটি এবং এর উপর মৃত্তিকার অনেক ভৌত ও কৃষি সম্পর্কিত গুণাবলী নির্ভর করে।

মাটির বুনট

 

মাটি

 

মাটির বুনট সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে মাটির উপযুক্ত ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা সহজ হয়। উদাহরণস্বরূপ, যে মাটি অধিক পলিকণা ধারণ করে, তা শস্য চাষের জন্য উপযুক্ত। কারণ পলিমাটি সহজলভ্য পানি এবং পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণে সক্ষম। সুতরাং সেচ ব্যবস্থা, পানি নিস্কাশন, শস্য নির্বাচন ও উৎপাদন—all কিছুই মূলত মাটির বুনটের উপর নির্ভর করে।

 

মাটির বুনট শ্রেণীবিন্যাস :

মাটির বুনটকে প্রধানত বালি, পলি ও কর্দম কণার আনুপাতিক হারের ভিত্তিতে শ্রেণীবিন্যস্ত করা হয়। এই শ্রেণীবিন্যাসের দুটি প্রধান পদ্ধতি আছে—আন্তর্জাতিক পদ্ধতি এবং যুক্তরাষ্ট্র পদ্ধতি। উভয় পদ্ধতিতেই মাটিকে কণার অনুপাতের ভিত্তিতে ১২টি বুনট শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। এই শ্রেণীগুলি হলো:

ক্র. নংবুনট শ্রেণীসাধারণ গুণাবলী / বৈশিষ্ট্য
বালিবড় কণার উপস্থিতি বেশি, পানি ধারণ কম, দ্রুত শুকনো হয়, শস্যের বৃদ্ধির জন্য কম পুষ্টি উপাদান ধরে রাখে
দোআঁশ বালিবালির সাথে সামান্য পলি ও কর্দম কণা থাকে, মাঝারি পানি ধারণ ক্ষমতা, আকারে নরম ও খাস্তা
বেলে দোআঁশদোআঁশ এবং বালির সমন্বয়, মাঝারি স্থূলতা, পুষ্টি ধরে রাখার ক্ষমতা কিছুটা বেশি
দোআঁশবালি, পলি ও কর্দম কণার প্রায় সমান অনুপাত, ভারসাম্যপূর্ণ স্থূলতা ও সূক্ষ্মতা, চাষাবাদে ভালো
পলি এটেল দোআঁশদোআঁশের সাথে পলি ও কর্দমের মিশ্রণ, পানি ও পুষ্টি ধারণ ভালো, শস্য চাষে সহায়ক
পলিসূক্ষ্ম কণার আধিক্য, পানি ধারণ খুব ভালো, সহজে ক্ষয়প্রবণ, নরম ও লালনযোগ্য
বেলে এটেল দোআঁশএটেল মাটির সাথে বালির মিশ্রণ, ভারসাম্যপূর্ণ স্থূলতা, পানি ধারণ ও বায়ুচলাচল ভালো
এটেল দোআঁশএটেল ও দোআঁশের সংমিশ্রণ, শস্য চাষে সহায়ক, পর্যাপ্ত পুষ্টি ও পানি ধারণ
পলি এটেল দোআঁশপলি ও এটেল মিশ্রিত দোআঁশ, পানি ও পুষ্টি ধারণ ভালো, নরম ও চাষযোগ্য
১০বেলে এটেলএটেল কণার আধিক্য সহ বালি, পানি ধারন ক্ষমতা মধ্যম, স্থূল ও সুসংগঠিত
১১পলি এটেলএটেল কণার সাথে পলির মিশ্রণ, নরম, উর্বর, পানি ও পুষ্টি ভালোভাবে ধরে রাখে
১২এটেলকর্দম কণার আধিক্য, পানি ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক, নরম ও উর্বর, কৃষি চাষের জন্য উত্তম

তবে, কৃষি ব্যবহারের সুবিধার জন্য বুনট শ্রেণীকে প্রধানত ৩টি ভাগে সরলীকৃত করা হয়—বেলে মাটি, দোআঁশ মাটি এবং এটেল মাটি

১. বেলে মাটি

যেসব মাটিতে ৭০% বা তার বেশি বালি কণা থাকে, সেগুলো বেলে মাটি নামে পরিচিত। এর মধ্যে দুটি প্রধান শ্রেণী রয়েছে—১. বালি এবং ২. দোআঁশ বালি

২. দোআঁশ মাটি

এই ধরনের মাটিতে বালি, পলি ও কর্দম কণার অনুপাত এমনভাবে থাকে যে মাটির স্থূলত্ব এবং সূক্ষ্মতা প্রায় সমান হয়। দোআঁশ মাটির মধ্যে বিভিন্ন বুনট শ্রেণী অন্তর্ভুক্ত।

৩. এটেল মাটি

যে মাটিতে কমপক্ষে ৩৫% কর্দম কণা থাকে, তাকে এটেল মাটি বলা হয়। এটেল মাটির প্রধান তিনটি শ্রেণী হলো—১. বেলে এটেল, ২. পলি এটেল, এবং ৩. এটেল মাটি

 

মাটি

 

মাটির বুনটের গুরুত্ব :

মাটির বুনট শুধুমাত্র মৃত্তিকার একটি ভৌত ধর্মই নয়, বরং এটি কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাটির বুনট বোঝার মাধ্যমে নিন্মলিখিত সুবিধা পাওয়া সম্ভব:

  • মৃত্তিকার শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায় কোন মাটিতে কোন ফসল সেরা উৎপাদন দিবে।

  • মৃত্তিকার উপযুক্ত ব্যবহার ও সঠিক ব্যবস্থাপনা সহজ হয়।

  • মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা জানা যায়, ফলে সেচ ও নিকাশের সময় নির্ধারণ সহজ হয়।

  • ভূমি কর্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে পূর্বধারণা পাওয়া যায়।

  • শিলাক্ষয়ের পর্যায় ও মৃত্তিকার ক্ষয়প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

  • ক্রমান্বয়ে পলির স্তর জমা হওয়ার ফলে নতুন বুনটের মাটি গঠিত হয়, যা ফসলের উর্বরতা বাড়ায়।

সুতরাং, কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মাটির বুনটকে সঠিকভাবে বোঝা ও মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।

 

মাটির বুনট রূপান্তরকরণ :

কৃষিকাজের প্রয়োজনে অনেক সময় মাটির প্রাকৃতিক বুনট পরিবর্তন করতে হয়। বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে মাটির বুনট উন্নত বা রূপান্তর করা যায়, যাতে ফসলের চাষোপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়।

কেন রূপান্তর প্রয়োজন?

মাটির প্রধান তিন প্রকার বুনট হলো: বেলে মাটি, দোআঁশ মাটি, এবং এঁটেল মাটি।

  • বেলে মাটি: পানি ধারণ ক্ষমতা খুব কম (প্রায় ৫%), ফলে ফসল চাষের জন্য অনুকূল নয়।

  • এঁটেল মাটি: পানি ধারণ ক্ষমতা খুব বেশি (প্রায় ৫০%), যার কারণে বায়ুচলাচল এবং শিকড়ের বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় না।

  • দোআঁশ মাটি: পানি ধারণ ক্ষমতা (৩৫%) এবং বায়ুচলাচল ক্ষমতা মধ্যম, যা অধিকাংশ ফসলের জন্য উপযোগী।

অতএব, বেলে ও এঁটেল মাটিকে কৃষি উপযোগী দোআঁশ মাটিতে রূপান্তর করা হয়, যাতে ফসল উৎপাদন উন্নত হয় এবং মৃত্তিকার ভৌত ও জৈবিক ধর্ম যথাযথভাবে বজায় থাকে।

 

মাটি

 

বেলে মাটিকে দোআঁশ মাটিতে রূপান্তর:

বেলে মাটি পানি ধারণে দুর্বল এবং ফসলের জন্য কম উর্বর হওয়ায়, কৃষি কাজের উপযোগী করতে এটি দোআঁশ মাটিতে রূপান্তর করা প্রয়োজন। রূপান্তরের জন্য নিন্মলিখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়:

১. এঁটেল মাটি ব্যবহার:
বেলের উপরের স্তরে এঁটেল মাটি প্রয়োগ করে ভালোভাবে মিশালে বেলে মাটির বুনট পরিবর্তিত হয়। এ ক্ষেত্রে বালি, পলি ও কর্দম কণার অনুপাত প্রায় ২:১:১ হলে বেলে মাটি দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরিত হয়।

২. গভীর চাষ:
বেলের উপরের স্তরে স্থুলকণা এবং নিচের স্তরে সূক্ষ্মকণা থাকে। মাটির গভীরে চাষ করলে এই স্থুল ও সূক্ষ্ম কণার মিশ্রণ ঘটে এবং বেলে মাটি ধীরে ধীরে দোআঁশ মাটিতে পরিণত হয়।

৩. জৈব সার ব্যবহার:
কম্পোস্ট, খামারজাত সার ও সবুজ সার প্রয়োগ করে মাটির জৈব উপাদান বৃদ্ধি করা যায়। এটি বেলের পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বুনটকে দোআঁশ মাটির অনুকূলে উন্নীত করে।

৪. কেঁচো সার বা ভার্মিকম্পোস্ট প্রয়োগ:
কেঁচো সার একটি উন্নতমানের জৈব সার। বেলে মাটির সাথে এটি মেশালে বেলের দৃঢ়তা কমে, মাটি নরম হয় এবং স্থূলকণা ও সূক্ষ্মকণার মিশ্রণে দোআঁশ মাটি গঠিত হয়।

৫. পলি মাটি প্রয়োগ:
নদীর পলি বা পলিমিশ্রিত বৃষ্টির পানি জমিতে স্থাপন করে মাটিতে পলি কণার বৃদ্ধি করা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেলে মাটি ধীরে ধীরে দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরিত হয়।

 

 

মাটি

 

এঁটেল মাটিকে দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরকরণ:

এঁটেল মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ায় এটি জলাবদ্ধ হয়ে থাকে এবং শুকিয়ে গেলে অত্যন্ত শক্ত হয়ে যায়। ফলে সরাসরি কর্ষণ বা চাষ করা কঠিন হয়। কৃষিকাজের উপযোগী করার জন্য এঁটেল মাটি দোআঁশ মাটিতে রূপান্তর করতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়:

১. বেলে মাটি ব্যবহার:
এঁটেল মাটিতে পলি এবং বেলের মিশ্রণ প্রয়োগ করলে মাটি দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরিত হয়। এতে বালি, পলি ও কর্দম কণার অনুপাত প্রায় ২:১:১ হওয়া বাঞ্চনীয়। এই পদ্ধতিতে মাটির অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা কমে যায় এবং চাষযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।

২. সবুজ সার প্রয়োগ:
মাটিতে নির্দিষ্ট উদ্ভিদ চাষ করে, যখন সেগুলো ছোট ও নরম অবস্থায় থাকে, তা মাটিতে মিশিয়ে দিলে মাটির গুণাবলী উন্নত হয়। এতে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এঁটেল মাটি ধীরে ধীরে দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরিত হয়।

৩. জৈব সার প্রয়োগ:
খামারজাত সার, কম্পোস্ট বা অন্যান্য জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির স্থূল ও সূক্ষ্ম কণার অনুপাত সমান হয়। এর ফলে মাটির ভৌত ও রসায়নগত গুণাবলী উন্নত হয় এবং এঁটেল মাটি দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরিত হয়।

৪. কেঁচো সার বা ভার্মিকম্পোস্ট প্রয়োগ:
কেঁচো সার বা ভার্মিকম্পোস্টে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও জৈব পদার্থ মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। এটি মাটিকে নরম ও হাওয়াযুক্ত করে, ফলে এঁটেল মাটি সহজেই দোআঁশ মাটিতে রূপান্তরিত হয়।

 

মাটির গঠন

 

ব্যবহারিক: মাটির বুনট শনাক্তকরণ

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ব্যবহারিক: মাটির বুনট শনাক্তকরণ

বিষয়- ১:মাটির বুনট শনাক্তকরণ

এ পরীক্ষণ শেষে আপনি-

  • মাটির বুনট শনাক্তকরণের উপকরণ সংগ্রহ করতে পারবেন।
  • মাটির বুনট শনাক্ত করতে পারবেন।

উপকরণ

নমুনা মাটি, পাত্র ও পানি।

কাজের ধাপ

১। কোন নির্দিষ্ট স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করুন।

২। সংগৃহীত নমুনা মাটিতে ঢেলা থাকলে, একটি পাত্রে রেখে তা গুঁড়া করে নিন।

৩। নমুনার একমুঠ গুঁড়া মাটি হাতে নিয়ে পানি মিশান।

৪। হাতের ভিতরে মাটির দলা বানাতে চেষ্টা করুন।

৫। মাটি দলা না হয়, তবে সংগৃহীত নমুনাটি বেলে মাটি।

৬। যদি দলা বানানো যায় এবং চ্যাপ্টা করা যায়, তবে নমুনাটি এঁটেল মাটি।

৭। যদি চ্যাপ্টা করতে গেলে ভেঙ্গে যায়, তবে নমুনাটা দো-আঁশ মাটি ।

৮। নমুনা মাটির পরীক্ষণ শেষে, আপনার বাড়ির পার্শ্ববর্তী মাঠের যে কোন মাটি নিয়ে পরীক্ষণটি বারবার করুন। কি ধরনের মাটি তা শনাক্ত করুন ।

৯। সবশেষে ব্যবহারিক খাতায় / নোটবুকে পরীক্ষণের সমস্ত তথ্য ধারাবাহিকভাবে লিখুন এবং শিক্ষকের স্বাক্ষর নিন।

 

চৈত্রের দিনে বাংলাদেশের ফেটে যাওয়া মাটি

 

বিষয়- ২: সার পরিচিতি

এ পরীক্ষা শেষে আপনি-প্রদত্ত সারের নমুনাগুলো শনাক্ত করতে পারবেন।

উপকরণ

নমুনা সার, পাত্র, পলিব্যাগ, কাগজ ও ব্যবহারিক নোটবুক।

কাজের ধাপ

১। প্রদত্ত নমুনা সারগুলোর বর্ণ, গন্ধ, আকার আকৃতি অনুসারে সনাক্ত করুন।

২। শনাক্তকৃত সারগুলোর নাম লিখুন।

৩। শনাক্তকৃত সারগুলোর যাবতীয় তথ্য ব্যবহারিক নোটবুকে লিখুন এবং শিক্ষকের স্বাক্ষর নিন।

 

বিষয়-৩ : কমপোস্ট সার তৈরিকরণ

এ পরীক্ষাণ শেষে আপনি-

  • কম্পোস্ট সার তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করতে পারবেন।
  • কম্পোস্ট তৈরির জায়গা নির্বাচন করতে পারবেন। কম্পোস্ট সার তৈরি করে দেখাতে পারবেন।

উপকরণ

১. আবর্জনা ২. পানি ৩ গোবর ৪, ইউরিয়া ৫. টি এস পি ৬. কাদামাটি ৭. পচনকারী দ্রব্য (যদি থাকে)।

কাজের ধাপ

১. বাড়ির পাশে একটা উঁচু জায়গা নির্বাচন করুন। খেয়াল রাখবেন নির্বাচিত স্থানে যেন বর্ষার পানি না জমে।

২. ৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১.২৫ মিটার প্রস্থ জায়গা ফিতা দিয়ে মেপে নিন।

৩. আবর্জনা, খড়কুটা, কচুরিপানা, আগাছা ইত্যাদি পচনশীল দ্রব্য ফেলে ৩০ সে.মি. উঁচু স্তর তৈরি করুন।

৪. প্রথম স্তর সম্পন্ন হলে আবর্জনার উপর ১ কেজি গুঁড়া খৈল, ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ২০০ গ্রাম টি এসপি ছিটিয়ে দিন। অথবা প্রতি স্তরে তাজা গোবর, পয়ঃপ্রণালীর আবর্জনা। প্রভাবক হিসাবে ব্যবহার করুন।

৫. এরপর পানি দিয়ে স্তরটি ভিজিয়ে দিন।

৬. এরপর ৩ সে.মি. পুরু করে গোবরের প্রলেপ দিন।

৭। এমনিভাবে পরপর সাতটি স্তর সাজান। প্রতিটি স্তরের উপরে একই হারে ইউরিয়া ও টি.এস.পি বা গোবরের প্রলেপ দিন।

৮. উপরিভাগের স্তরটি কুঁড়েঘরের চালার মত বানান এবং পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিন।

৯. গাদা তৈরি শেষ হলে সপ্তাহখানেক পর একটা শক্ত কাঠি গাদার মাঝখানে ঢুকিয়ে দেখুন যে গাদাটি অতিরিক্ত ভেজা কি না।

 

ব্যবহারিক: মাটির বুনট শনাক্তকরণ

 

১০. গাদা অতিরিক্ত ভেজা হলে মাঝে মাঝে কাঠি ঢুকিয়ে ভিতরে বাতাস প্রবেশ করতে দিন।

১১. গাদা অতিরিক্ত শুকিয়ে গেলে মাঝে মাঝে কাঠি ঢুকিয়ে ছিদ্র করে সেখানে পানি ঢালুন।

১২. তাড়াতাড়ি পচনের জন্য একমাস পর কমপোস্ট উল্টে দিন। স্তূপ উল্টানোর সময় স্তরে স্তরে মোট ১০ কেজি এক্টিভেটর দিন।

১৩. দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে কমপোস্ট তৈরি হবে।

১৪. কম্পোস্ট তৈরি হলে স্তূপ ভেঙ্গে শুকিয়ে গুঁড়া করে বস্তায় ভরে রাখুন।

১৫. কম্পোস্ট তৈরির ধাপগুলো অনুশীলন করুন এবং ব্যবহারিক নোটবুকে যাবতীয় তথ্য লিখুন এবং শিক্ষকের স্বাক্ষর নিন।

ব্যবহারিক: মাটির বুনট শনাক্তকরণ

 

সারাংশ

মৃত্তিকা বুনট মৃত্তিকার একটি অন্যতম ভৌত ধর্ম। মৃত্তিকার অন্যান্য ভৌত ধর্মগুলোও মৃত্তিকা বুনটের উপর নির্ভর করে। মৃত্তিকার কণাসমূহ বিভিন্ন অনুপাতে মিশ্রিত হয়ে বুনট শ্রেণীর মাটির সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন বুনট শ্রেণীর মাটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ সকল বৈশিষ্ট্যগত কারণে এক এক শ্রেণীর মাটির এক এক ফসলের জন্য উপযোগী। জমির উৎপাদন শক্তির উপর মৃত্তিকার বুনট ও সংযুতির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।

Leave a Comment