মৃত্তিকা অম্লত্ব – আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি ২.১ নং পাঠ। মৃত্তিকা দ্রবণের (pH) পিএইচ দ্বারা মৃত্তিকা অম্লত্ব জানা যায়। মৃত্তিকা অম্লীয় হলে তখন মৃত্তিকা পিএইচ (pH) এর মান ৭ এর কম হবে। হাইড্রোজেন আয়নের ঘনত্ব বা গাঢ়ত্ব দ্বারা পিএইচ সনাক্ত করা যায়। মৃত্তিকার (pH) পিএইচ কে মৃত্তিকা বিক্রিয়াও বলা হয়। সুতরাং মৃত্তিকা পিএইচ হলো হাইড্রোজেন আয়ন ঘনত্বের (H+) ঋণাত্মক লগারিদম।
Table of Contents
মৃত্তিকা অম্লত্ব
মৃত্তিকা দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন ঘনত্বের (H+) পরিমাণ বেশি হলে তাকে অম্লীয় মৃত্তিকা বলে। মৃত্তিকা পিএইচ (pH) হলো মৃত্তিকা দ্রবনের হাইড্রোজেন আয়ন ঘণত্বের বিপরীত রাশির লগারিদম। হাইড্রোজেন আয়ন ঘণত্বের বা গাঢ়ত্বের একক হলো গ্রাম/লিটার তবে pH এর কোন একক নেই। মৃত্তিকার ঢ়ঐ দ্বারা মৃত্তিকার অম্লত্ব বা ক্ষারত্ব নির্দেশ করে। হাইড্রোজেন আয়নের [H+] সক্রিয়তাই মৃত্তিকা অম্লত্বের জন্য দায়ী।
মৃত্তিকা অম্লত্বের শ্রেণীবিভাগ মৃত্তিকা অম্লত্বকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
১. সক্রিয় অম্লত্বঃ
সক্রিয় অম্লত্ব হলো মৃত্তিকা দ্রবণে যে পরিমাণ হাইড্রোজেন আয়ন ঢ়ঐ মুক্ত অবস্থায় থাকে।
২. পটেনসিয়াল বা প্রছন্ন অম্লত্বঃ
পটেনিয়িাল বা প্রছন্ন অম্লত্ব হলো কর্দম কণা বা কলয়েডে যে পরিমাণ হাইড্রোজেন
আয়ন (H+) আবদ্ধ বা শোষিত অবস্থায় থাকে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, মোট অম্লত্ব=সক্রিয় অম্লত্ব + প্রছন্ন অম্লত্ব
পিএইচ সমীকরণের গাণিতিক ব্যাখ্যা নিম্নের:
সমীকরণের সাহায্যে পিএইচ নির্ণয় করা যায়:
পিএইচ pH =-log[H+] বা, log [H–]
এখানে, [H+] হাইড্রোজেন আয়নের ঘনত্ব/গাঢ়ত্ব (গ্রাম/লিটার)
কোন দ্রবণে সক্রিয় হাইড্রোজেন আয়নের ঘনত্ব [H] যত বেশি হবে তার পিএইচ (pH) মান তত কম হবে এবং অম্লত্ব তত বৃদ্ধি পাবে। উদাহরণস্বরূপ কোন দ্রবণের pH এর মান ৪ হলে সে দ্রবণের pH 8 এর [H+], pH ৫ এর তুলনায় দশগুণ বেশি হবে এবং pH ৩ এর চেয়ে দশগুণ প্রত্যেক ছোট এককের [H+] তার পরবর্তী বড় এককের [H] দশগুণ বেশি। তাই অম্লত্ব দশগুণ বেশি হয়। কোন দ্রবণের পিএইচ এর মান ১,২,৩,৪ ১৪ হলে সে দ্রবণে সক্রিয় হাইড্রোজেন আয়নের গাঢ়ত্ব যথাক্রমে ১০১, ১০২, ১০৩, ১০০ ১০-১৪ হবে। পিএইচ [pH] অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব নির্দেশক স্কেলের সাহায্য নির্ণয় করা যায়। অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব স্কেল ১ থেকে ১৪ একক নির্দিষ্ট থাকে।
মৃত্তিকা অম্লত্ব বৃদ্ধির কারণ :
১. মৃত্তিকায় বিদ্যমান অণুজীব ও উদ্ভিদ মূলের শ্বসনের ফলে CO2 উৎপন্ন হয়। পরে এই CO2 মৃত্তিকার পানির সাথে বিক্রিয়া করে H+ আয়ন উৎপন্ন করে H2O+ CO2 H+ + HCO3 মৃত্তিকায় বায়ুর CO, কম বাফার সম্পন্ন মাটির পিএইচ উপরোক্ত বিক্রিয়ার মাধ্যমে কমিয়ে দেয়।
২. মাটিতে প্রধানত এমোনিয়াম সার যেমন এমোনিয়াম সালফেট, এমোনিয়াম নাইট্রেট ও অম্ল উৎপাদনকারী সার যেমন ফেরাস সালফেট প্রয়োগ করে তা মাটিতে আর্দ্র বিশ্লেষিত হচ্ছে। সালফিউরিক এসিড উৎপন্ন করে যার ফলে মৃত্তিকায় অম্লত্ব বৃদ্ধি পায় ৷
৩. কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রিক অক্সাইড প্রভৃতি যৌগ বায়ুতে মিশে থাকে এবং বৃষ্টির পানিতে দ্রবীভূত হয়ে মাটিতে নেমে আসে ফলে এসিডের উৎস হিসাবে কাজ করে।
৪. অধিক বৃষ্টিপাত সম্পন্ন বৃষ্টির পানি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম লবণের ক্ষয় বা অপচয় ঘটায়। মৃত্তিকা পানিতে কার্বন ডাই অক্সাইড দ্রবীভূত হয়ে কার্বনিক এসিড উৎপন্ন করে ফলে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম লবণের ক্ষয় ঘটে এটি অম্লত্ব সৃষ্টির অন্যতম কারণ হয়।
৫. গ্রানাইট, রায়োলাইট, বালি, পাথর ও এসব অম্লীয় শিলায় ক্ষারীয় উপাদানের চেয়ে সিলিকার পরিমাণ বেশি থাকে। থাকৃতিক শক্তির প্রভাবে এসব শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে দ্রবণে সিলিসিক এসিড উৎপন্ন করে ফলে মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়।
৬. জৈব পদার্থের বিয়োজনের ফলে মাটিতে প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয় যা আদ্রবিশ্লেষিত হয়ে H+ আয়ন উৎপন্ন করে যা অম্লত্ব বাড়ায়। CO2 + H2O] H2CO3H++ CO
৭. কোন জমিতে ফসল উৎপাদনের তীব্রতা যতই বাড়ে ক্ষারের পরিমাণ ততই কমে এবং অম্লতা বৃদ্ধির আশংকা বাড়ে। আবার ঋতু অনুযায়ী অম্লত্ব সামান্য বাড়ে বা কমে।
৮. বিজারিত সালফার ও নাইট্রোজেন যৌগ অক্সিজেন ও বিচূর্ণীভবনের মাধ্যম সালফিউরিক ও নাইট্রিক এসিড উৎপন্ন করে যাH+ আয়ন উৎপন্ন করে ফলে অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়।
৯. আমাদের দেশের অনেক উঁচু ও মাঝারি উঁচু পলিমাটি অম্লীয় ধরনের হয়। পিএইচ (pH) মান অনুযায়ী মৃত্তিকা তিন ধরনের হয়ে থাকে।
পিএইচ (pH) মানভিত্তিক মৃত্তিকার অম্লত্বের শ্রেণীবিন্যাস:
১. অম্লীয় মৃত্তিকা পিএইচ (pH) <৭ (সাত)
২. ক্ষারীয় মৃত্তিকা পিএইচ (pH) > ৭ (সাত)
৩. নিরপেক্ষ বা প্রশম মৃত্তিকা পিএইচ (pH) > ৭ (সাত)
অত্যাধিক অম্লতা ফসল উৎপাদনের জন্য ক্ষতিকর। মাটির বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ভিন্ন ভিন্ন পিএইচ এ গাছের জন্য সহজ লভ্য হয়। সেজন্য ফসল উৎপাদনের জন্য মাটির একটি উপযোগী অম্লত্ব নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। অধিক অম্লীয় মাটি বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে সংশোধন করা যায়।
অম্লীয় মাটির বৈশিষ্ট্য :
১। অম্লীয় মাটির পিএইচ ৭ এর কম হবে।
২। মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে মাটিস্থ অণুজীব যেমন ছত্রাকের কার্যাবলী বেড়ে যায়।
৩। অম্লত্ব বৃদ্ধি পেলে অণুজীব ব্যাকটেরিয়ার কার্যাবলী কমে যায়।
৪। অম্লীয় মাটিতে নাইট্রোজেনের অপচয় কম হয়।
৫। এ মাটিতে ফসল চাষ করতে হলে চুন প্রয়োগ করতে হয়।
৬। অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও লৌহ এর আধিক্যেও মাটি বিষাক্ত হতে পারে।
৭। মাটিতে ফসফরাজ, জিংক ও কোবাল্টের সহজ লভ্যতা কমে যায়।
৮। অম্ল মাটিতে বীজের অঙ্গুরোদগম হয় না অথবা ভাল হয় না।
৯। তবে অম্ল সহনশীল ফসল যেমন আনারস, লেবু, চা, কফি ইত্যাদি অম্লীয় মাটিতে ভাল জন্মে।
অম্লতা দূরীকরণের গুরুত্বপূর্ণ উপায়সমূহ:
অম্লীয় মাটি সংশোধনের বা মাটির অম্লতা দূরীকরণের গুরুত্বপূর্ণ উপায়সমূহ নিম্নরূপ—
১. চুন প্রয়োগের মাধ্যমে:
মাটি থেকে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম অপসারিত হলে মাটিতে অম্লত্ব সৃষ্টি হয়। জমির অম্লীয় মাটি
চুন প্রয়োগ করে তাকে ফসল উৎপাদনের জন্য উপযোগী করা যায়। জমিতে বিভিন্ন চুন জাতীয় পদার্থ যেমন—কুইকলাইম
(CaOMgO), ক্যালসাইট (CaCO3), ডলোমাইট [CMgCO3)2], ম্যাগনেসাইট (MgCO3), কলিচুন Ca(OH)2. Mg (OH)2], ইত্যাদি প্রয়োগ করা হলে এগুলো বিয়োজিত হয়ে Ca++ বা Mg++ উৎপন্ন করে যা আয়ন বিনিময় প্রক্রিয়ার
মাধ্যমে মৃত্তিকা কলয়েডের H+ কে প্রতিস্থাপন করে মাটির অম্লতা কমায়।
২। জৈব সার ব্যবহার করে :
মাটিতে নিয়মিত বিভিন্ন জৈব সার, যেমন-গোবর সার, সবুজ সার, কম্পোস্ট, খামার জাত সার, কেঁচো সার, অণুজীব সার, ট্রাইকোডার্মা, বায়োপেস্টিসাইড ইত্যাদি প্রয়োগ করলে মাটির বাফার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং অম্লত্ব হ্রাস করে। মাটির বাফারিং ক্ষমতা মাটির pH পরিবর্তনে বাধা প্রদান করে এবং pH মানকে স্থির রাখে। জৈব সারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা মত্তিকা দ্রব্ ণের H+ আয়নকে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মাটির অম্লত্ব হ্রাস করে।
অম্লত্ব দূরীকরণে কয়েকটি জৈব সার:
অম্লত্ব দূরীকরণে কয়েকটি জৈব সারের ভূমিকা নিম্নে আলোচনা করা হলো:
(1) সবুজ সার ব্যবহার :
সবুজ সার শস্য যেমন- ধৈঞ্চা, আলফা, শন, ছোলা, বরবটি, সয়াবিন ইত্যাদি নির্দিষ্ট বয়সে সবুজ অবস্থায় অস্ট্রীয় মাটিতে মিশিয়ে দিলে জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা মাটির বাফার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সাধারণত লিগিউম জাতীয় উদ্ভিদ সবুজ সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ সকল উদ্ভি র শিকড়ে রাইজোরিয়াম ব্যাকটেরিয়া নডিউল সৃষ্টি ক্ রে যা বায়ুমন্ডলের মুক্ত নাইট্রোজেনকে সংবদ্ধ করে। মাটির নাইট্রোজেনের পরিমাণ ও বৃদ্ধি পায় এবং জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না। এ সকল কারণে সবুজ সার ব্যবহারে মাটির অম্লত্ব হ্রাস পায়।
(11) বায়োফার্টিলাইজার বা অণুজীব সার ব্যবহার:
বিভিন্ন প্রকার অণুজীব সার যেমন- রাইজোবিয়াম, অ্যাজোলা, অ্যাজোটোব্যাক্টার, ইত্যাদি অম্লীয় মাটিতে ব্যবহার করার ফলে মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমানে হিউমাস উৎপন্ন হয় এবং মাটির বাফার ক্ষমতা উন্নত হয়। আবার, অনুজীব সারসমূহ বায়ুমন্ডল থেকে প্রচুর পরিমানে মুক্ত নাইট্রোজেন মাটিতে ও উদ্ভিদের শিকড়ে যুক্ত করে। কাজেই, মাটিতে অম্লত্ব বৃদ্ধিকারী নাইট্রোজেন ঘটিত রাসায়নিক সার যেমন- ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম সালফেট, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ইত্যাদি প্রয়োগের মাত্রা কমে যায়। ফলে মাটির অম্লত্ব দূর হয়।
(111) ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার:
ট্রাইকোডার্মা পরিবেশ বান্ধব উপকারী ছত্রাক। এটি মাটি বাহিত রোগ দমন ও মাটির গুণাগুন বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী সরাসরি মাটিতে ব্যবহার করা হয়। এটি মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি করে এবং ক্ষতিকারক রোগের জীবাণু ধ্বংস করে। ট্রাইকোডার্মা জৈব পদার্থ দ্রুত পঁচিয়ে জৈব সার তৈরি করে যা মাটিতে মিশে মাটি অম্লত্ব, হ্রাস করে।
৩। বায়োপেস্টিসাইড বা জৈব বালাইনাশক ব্যবহার:
শস্য উৎপাদনে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পেষ্টিসাইড ব্যবহার করা হয়। এগুলো ব্যয়বহুল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক এবং মাটিতে অম্লত্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ হতে প্রাপ্ত বিভিন্ন জৈব বালাই নাশক যেমন-নিমপাতা, তামাক, নীম বীজ, আতাপাতা, ও খেজুর পাতার নির্যাস ইত্যাদি মাটিতে ও ফসলে স্প্রে করলে মাটিবাহিত ও উদ্ভিদের পোকামাকড় দমন হয় এবং মাটির সক্রিয় H+, Al3+ এর পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে মাটির অম্লত্ব কমে যায়।
৪। সেচের পানির মান উন্নয়ন:
সেচের পানির অম্লতের কারণেও মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য ফসলের জমিতে সেচের পানি প্রয়োগ করার পূর্বে পানির গুণগত মান পরীক্ষা করে সেচ দিতে হবে যাতে অস্ট্রীয় মাটি সৃষ্টি হওয়া রোধ করা যায়। এক্ষেত্রে সেচের পানিতে যাতে অ্যালুমিনিয়াম (Al), আয়রন (Fe) প্রভৃতি খনিজ লবণ না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৫। অম্লীয় সারের ব্যবহার কমানো :
অম্লত্ব সৃষ্টিকারী রাসায়নিক সার বিশেষ করে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার যেমন- ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম
সালফেট প্রভৃতি জমিতে প্রয়োগ করলে মাটির অম্লত বৃদ্ধি পায়। সুতরাং এর বিকল্প হিসেবে ক্ষারীয় সার যেমন সোডিয়াম নাইট্রেট [NaNO3]. ক্যালসিয়ামনাইট্রেট [Ca(NO3)2], বেসিক স্ল্যাগ ইত্যাদি জমিতে ব্যবহার করে অম্লত্ব যায়।
৬। কাঠের ছাই প্রয়োগ:
মাটিতে পরিমাণ মত কাঠের ছাই প্রয়োগ করলে অম্লত্ব দূর হয়। কাঠের ছাইয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম বিদ্যমান থাকায় মৃত্তিকার অম্লতা হ্রাস পায়।
মৃত্তিকা অম্লত্বের গুরুত্ব:
১. মৃত্তিকার অম্লমানের সাহায্যে মাটির উর্বরতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।
২. অম্লীয় মৃত্তিকায় বীজের অংকুরোদগম ভালো হয় না এবং ফসলের বেড়ে ওঠার উপর প্রভাব ফেলে।
৩. মৃত্তিকার পিএইচ এর সাহায্যে কোন জমিতে কোন ফসল ভালো জন্মে এবং কোন সার কতটুকু পরিমাণ দিতে হবে তা জানা যায়।
৪. অম্ল মাটিতে চা, কফি, আনারস, বুস্নবেরী ইত্যাদি ফসলের বৃদ্ধি ভালো হয়।
৫. মৃত্তিকায় বিদ্যমান অণুজীবের কার্যাবলী, রাসায়নিক সারের রূপান্তর ও জৈব পদার্থের বিয়োজন অম্লত্বের কারণে হ্রাস পায়।
৬. মৃত্তিকার অম্লত্ব ক্যাটায়ন বিনিময় ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে।
৭. মৃত্তিকার অম্লতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, সালফার এর দ্রবণীয়তা হ্রাস পায়।
৮. শীত প্রধান দেশে মৃত্তিকার ঢ়ঐ এর মান ৪ এর কম হলে সে জমি চারন ভূমি হিসাবে ব্যবহার করা হয় কারণ সেখানে অধিকাংশ গাছ পালা জন্মায় না অথবা দূর্বল গাছ পালা জন্মায় সেখানে উৎপাদনের হার খুবই কম।
সারাংশ :
মৃত্তিকা অম্লত্ব মৃত্তিকার একটি রাসায়নিক ধর্ম। মৃত্তিকা অম্লত্ব প্রকাশের একক হচ্ছে ঢ়ঐ (পিএইচ)। মৃত্তিকার অম্লত্ব ১—১৪ সংখ্যা দ্বারা উল্লেখ করা হয়। কোন মৃত্তিকার অম্লত্ব মান ৭ এর নিচে হলে অম্লীয় মৃত্তিকা বলা হয়। মৃত্তিকা অম্লত্বের কমবেশির জন্য মৃত্তিকায় উপস্থিত উদ্ভিদ পানি ও অণুজীবসমূহের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।