হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য | ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র

হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ , মুরগির মতো বিভিন্ন জাতের হাঁস ও রাজহাঁসও ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য খামারভিত্তিতে পালন করা হয়। হাঁস ডিম এবং মাংস উভয় উদ্দেশ্যেই পালন করা হয়। ডিম এবং মাংস উৎপাদন সাধারণত জাতের উপর নির্ভরশীল। বিশে^ যে সব হাঁসের জাত ও উপজাত রয়েছে তা এশিয়া জাত এবং উপজাত হতে উদ্ভুত।

হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩

হাঁসের জাতকে নিম্নোক্ত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।

১. ডিমপাড়া জাত : খাকী ক্যম্পবেল, ইন্ডিয়ান রানার, জিনডিং ইত্যাদি।

২. মাংসের জাত: পিকিন, আইলশবারি, মাসকোভি, রুয়েন ইত্যাদি।

৩. সৌন্দর্যবর্ধক জাত : কল, ক্রেস্টেড, কায়াগো, ব্লু সুইডিস ইত্যাদি।

হাঁসের জাত ও বৈশিষ্ট্য খাকী ক্যাম্পবেল
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: খাকী ক্যাম্পবেল ডিম উৎপাদনের জন্য একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় জাত। এদের উৎপত্তি ইংল্যান্ডে যা মিসেস ক্যাম্পবেল উদ্ভাবন করেন ১৯০১ সালে।

হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩
চিত্র ৬.৩.১ : খাকী ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. পালকের রং খাকি।

২. এদের মাথা গোলাকার।

৩. মাথা ঘন বাদামি ও চোখের চারপাশে গোল সবুজ বন্ধনী থাকে।

৪. হাঁসের পা ও পায়ের পাতা গাঢ় কমলা এবং হাঁসির পা ও পায়ের পাতা তামাটে।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : পূর্ণ বয়সে হাঁসা ২.০—২.৫ কেজি এবং হাঁসি ১.০—১.৫ কেজি হয়ে থাকে। এরা বছরে ২৫০৩০০টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে।

ইন্ডিয়ান রানার
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এ জাতের হাঁসের উৎপত্তি ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। তবে এদের ডিম পাড়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে পশ্চিম ইউরোপে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে এ জাতটি পালিত হয়। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সহজেই এ জাতের হাঁস পালন করা যায়।

জাত বৈশিষ্ট্য:
১. এদের গায়ের রং সাদা, ধূসর ও সাদা—ধূসর হয়ে থাকে।

২. এদের তিনটি উপজাতের মধ্যে সাদা রঙের রানার অধিক জনপ্রিয়।

৩. এদের আকার ছোট, গলা লম্বা, সরু ও ঘাড় দেহের সঙ্গে প্রায় সমান্তরাল।

৪. এদের মাথার উপরিভাগে বেশ চওড়া ও চোখ দুটি উপরের দিকে অবস্থিত।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : এরা ওজনে ১.৫—২.৫ কেজি হয়ে থাকে। বছরে ২৫০—২৬০টি ডিম দেয়।

জিনডিং হাঁস চিত্র ৬.৩.২ : ইন্ডিয়ান রানার জাতের হাঁস উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এ জাতের হাঁসের উৎপত্তি চীনে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সহজেই এ জাতের হাঁস পালন করা যায়।

Capture 152 হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য | ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের গলা লম্বা এবং আকারে সরু ও লম্বা।

২. চোখের চারপাশে খাকী ক্যাম্পেল হাঁসের মতো গোল চক্র নেই।

৩. এদের পালকের রং খাকী—বাদামি মিশ্রিত ও কালো ফেঁাটায় ভরা।

৪. ডিমের রং ঈষৎ নীল বা সবুজাভ হয়ে থাকে।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : পূর্ণ বয়সে হাঁসা ২.০—২.৫ কেজি এবং হািঁস ১.০—১.৫ কেজি হয়। বার্ষিক ডিম উৎপাদান ২৭৫—৩০০টি।

পেকিন হাঁস
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এ জাতের হাঁসের উৎপত্তি চীনে। এরা দ্রুত বর্ধনশীল ও মাংসের জন্য বিখ্যাত।

জাত বৈশিষ্ট্য:
১. এদের দেহ প্রশস্ত ও গোলাকার।
২. পালকের রং সাদা।
৩. চোখের রং ধূসর—নীল এবং পায়ের পাতা লাল কমলা রঙের।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : পূর্ণবয়ষ্ক হাঁসা ৪—৫ কেজি এবং হাঁসি ৩—৪ কেজি হয়ে থাকে। বার্ষিক ডিম উৎপাদন— ১৫০—১৬০টি।

Capture 153 হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য | ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র
চিত্র ৬.৩.২ : মাসকোভি জাতের হাঁস

মাসকোভি
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এদের উৎপত্তি ব্রাজিল ও দক্ষিণ আমেরিকা। আমাদের গ্রামঞ্চলে এরা চীনা হাঁস নামে অধিক পরিচিত। জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এরা আকারে বেশ বড়, শরীর বেশ গভীর ও প্রশস্ত।

২. এদের গায়ের রং সাদা, কালো বাদামি—নীল বা মিশ্র রঙের হয়ে থাকে। তবে সাাদা পাখায় কালো রংয়ের মাসকোভি হাঁস অধিক জনপ্রিয়।

৩. এদের মাথার চারিদিকে ঝুঁটি থাকে।

৪. মাসকোভি হাঁসের মাথায় ও চোখের উপর দিয়ে লাল পালকমুক্ত অলংকার থাকে।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : পূর্ণবয়ষ্ক হাঁসা ৪—৫ কেজি এবং হাঁসি ২.৫—৩.০ কেজি হয়ে থাকে। এদের বার্ষিক ডিম উৎপাদন ১০০—১৫০টি।

এসব উন্নতজাতের হাঁস ছাড়াও কিছুৃ দেশী জাতের হাঁস রয়েছে। এদের মধ্যে নাগেশ^রী, সাদা হাঁস ও মাটি হাঁস উল্লেখযোগ্য। এদের নাগেশ্বরীর জাত বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো।

পোল্ট্রি ১ 1 হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য | ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র

নাগেশ^রী 
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: সিলেট ও ভারতের কাছাড় জেলায় এই হাঁসের আদি উৎপত্তিস্থল। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বত্রই কিছু না কিছু এই জাতের হাঁস পরিলক্ষিত হয়।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এ জাতের হাঁস আকারে ছোট।

২. এদের দেহের উপরিভাগের পালক কালো।

৩. গলার কিছু অংশ, বুক ও তলপেট সাদা।

৪. এরা অত্যন্ত কষ্ট সহিষ্ণু এবং নিকৃষ্ট মানের খাদ্য খেয়ে জীবন ধারণ করতে পারে।

৫. ডিমের খোসার রং সামান্য নীলাভ।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : পূর্ণবয়ষ্ক হাঁসার গড় ওজন ১.৭৫ কেজি এবং হাঁসি ১.৫০ কেজি। এদের বার্ষিক ডিম উৎপাদন— ১০০—১৫০টি। পরিচর্যা ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতি হলে এ জাতের হাঁস বছরে আরো বেশি ডিম দেয়।

রাজহাঁস প্রধানত সৌন্দর্যবৃদ্ধি ও মাংসের জন্য পালন করা হয়। রাজহাঁস ঋতুভিত্তিক ডিম উৎপাদন করে থাকে। রাজহাঁস জাতের মধ্যে টলুউইস, অ্যাম্বডেন, আফ্রিকান ও চাইনিজ জাত উল্লেখযোগ্য। নিচে এদের জাত বৈশিষ্ট্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

টলুউইস
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এ জাতের রাজহাঁসের উৎপত্তি ফ্রান্স। এরা মাংসল ও বড় আকারের রাজহাঁস। এরা ইউরোপীয় দেশে বেশি জনপ্রিয়।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের বুক উঁচু, পুরু ও গভীর।

২. ডানা লম্বা, লেজ খাটো, মাথা বড়, ঠেঁাট মজবুত, গলা লম্বা ও পুরু এবং পা মজবুত।

৩. পালকের রং— দেহের পিছনের ভাগ গাঢ় ধূসর, তলপেট এবং বক্ষগহ্বর হালকা ধূসর ও সাদা।

৪. পায়ের নারা ও ঠোঁটের অগ্রভাগ কমলা।

৫. গলা ঝুলন্ত ও পালক ঢিলা।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : প্রাপ্ত বয়ষ্ক রাজহাঁসের ওজন ১২.৫—১৩.৫ কেজি এবং রাজহাঁসির ওজন ৯.০—১০.০ কেজি। এদের ডিম উৎপাদন প্রতি ঋতুতে প্রায় ৩৫টি।

অ্যাম্বডেন জাত
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এ জাতের রাজহাঁসের উৎপত্তি জামার্নীতে।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের দেহে প্রশস্ত, পুরু ও গোলাকার।

২.পিঠ লম্বা, সোজা ও মজবুত।

৩. ডানা আকারে লম্বা।

৪. মাথা লম্বা, ঠেঁাট মজবুত, চোখ অত্যন্ত উজ্জ্বল।

৫. পা খাটো, পালক শক্ত ও সুবিন্যস্ত।

৬. পালকের রং সম্পূর্ণ উজ্জ্বল চকচকে সাদা।

৭. ঠোঁট কমলা—হলুদ ও চোখ হালকা নীল।

৮. পা ও পায়ের পাতা কমলা।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : প্রাপ্ত বয়ষ্ক রাজহাঁসের ওজন ১৩—১৫ কেজি এবং রাজহাঁসির ওজন ৯—১০ কেজি। এদের ডিম উৎপাদন প্রতি ঋতুতে প্রায় ৪০টি।

চাইনিজ
উৎপত্তি এবং প্রাপ্তিস্থান: এ জাতের উৎপত্তিস্থল এশিয়া। এদের ২টি প্রজাতি রয়েছে, যেমন— সাদা ও বাদামি।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের দেহ সরল ও রৈখিক।

২. মাথা ও ঠেঁাটের সংযোগস্থলে ক্ষুদ্র মাংসের মতো গুটি থাকে।

৩. এদের গলা লম্বা, অনেকটা সোয়ানের মতো।

৪. সাদা উপজাতের পা, ঠেঁাট ও পায়ের নালা কমলা।

৫. বাদামী উপজাতের পা, ঠেঁাট ও পায়ের নালা কালো।

উৎপাদান বৈশিষ্ট্য : প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষ ও স্ত্রী রাজহাঁসের দৈহিক ওজন যথাক্রমে ৪.৫—৫.৫ ও ৩.৫—৪.৫ কেজি। এদের ডিম উৎপাদন প্রতি ঋতুতে ৫০—৬০টি।

কবুতর মুরগি, হাঁস ও রাজহাঁসের মতো কবুতরও পোল্টি্রর জনপ্রিয় প্রজাতি। কবুতর অত্যন্ত সৌখিন পাখি এবং রুচিশীল মানুষের একান্ত শখের বিষয়। এদেরকে গ্রাম, শহরতলী, এমনকি শহরের বাসাবাড়িতে পারন কেও থাকে। কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও উপাদেয়। এই মাংস সদ্য রোগ থেকে বেড়ে ওঠা রোগীদের জন্য বলবর্ধক। এখানে কবুতরের কয়েকটি জাত ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।

ফেনটেইল 
উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান: এই জাতের কবুতরের উৎপত্তি ভারতে। বর্তমানে বিশ^ব্যাপী এদের দেখা মেলে। এদেশে এরা ময়ূরপঙ্খী নামেও পরিচিত।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের লেজ পাখার মতো বিধায় এদের এরকম নামকরণ।

২. এদের শারীরিক কাঠামো ছোট হয়।

৩. এদের বুক ঊর্ধ্বমুখী হয়।

৪. এদের সবচেয়ে জনপ্রিয় রং হলো সাদা।

৫. সাদা ছাড়াও হলুদ, কালো, সিলভার বর্ণেরও হতে পারে।

উৎপাদন বৈশিষ্ট্য: প্রাপ্তবয়ষ্ক কবুতরের ওজন ৬০০ গ্রাম। এদের বাচ্চা বা স্কোয়াবের ওজন ৩০০ গ্রাম।

কিং কবুতর 
উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান: এই জাতের কবুতরের উৎপত্তি আমেরকিা। বর্তমানে এদেরকে বিশ^ব্যাপী পালন করা হয়। এরা রেসিংয়ের জন্য বেশি জনপ্রিয়।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের দেহের আকার বড় হয়।

২. সাদা, নীল, সিলভার, লাল ও হলুদ বর্ণের দেখা যায়।

৩. পায়ের নালা, পা ও ঠেঁাট গোলাপি রঙের হয়ে থাকে।

উৎপাদন বৈশিষ্ট্য: প্রাপ্তবয়ষ্ক কবুতরের ওজন ৭৫০ গ্রাম। এদের বাচ্চা বা স্কোয়াবের ওজন ৫০০ গ্রাম।

Capture 154 হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য | ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র
চিত্র ৬.৩.৩ : কিং কবুতর

হোমার 
উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান: এদের উৎপত্তি বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও জার্মানী। বর্তমানে এ জাতটিকে বিশ্বের প্রায় সর্বত্র পোষা হয়।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. নীল, লাল সিলভার ও হলুদ বর্ণের কবুতর খুব জনপ্রিয়।

২. দেহ ছোট, কিন্তু পালক খুব অঁাটোসাঁটো

৩. পায়ের নালার রং গোলাপি।

৪. ঠেঁাটের রং কালো।

উৎপাদন বৈশিষ্ট্য: প্রাপ্তবয়ষ্ক কবুতরের ওজন ৬৫০ গ্রাম। বাচ্চা বা স্কোয়াবের ওজন ৪০০ গ্রাম।

কোয়েল
কোয়েল পোল্টি্রর ক্ষুদ্রতম সদস্য। বিশ্বব্যাপী বহু বুনো প্রজাতির কোয়েল রয়েছে, যেমন— রেইন কোয়েল, ক্যালিফোর্নিয়া কোয়েল, মাউন্টেন কোয়েল, মন্টেজুমা কোয়েল, হারলেকুইন কোয়েল, রঙিলা কোয়েল ইত্যাদি। তবে এসব প্রজাতির মধ্যে জাপানি কোয়েল ও বব হোয়াইট কোয়েল ছাড়া অন্য কোন প্রজাতিকে যেমন গৃহপালিত করা হয়নি, তেমনি বাণিজ্যিকভিত্তিতে পোল্টি্র হিসেবে এই দু’প্রজাতি ছাড়া অন্য কোন কোয়েল পালন করা হয় না।
জাপানি কোয়েল ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হলেও বব হোয়াইট কোয়েল মূলত মাংসের জন্যই পোষা হয়।

বাণিজ্যিক জাপানি কোয়েলের বেশ ক’টি জাত ও উপজাত রয়েছে, যেমন— ফারাও, ব্রিটিশ রেঞ্চ, ইংলিশ হোয়াইট, ম্যানচুরিয়ান গোল্ডেন, টুক্সেডো, ফন/ব্রাইন কোয়েল ইত্যাদি। নিম্নে ফারাও ও ফন উপজাতের কোয়েল দু’টো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো।

ফারাও 
উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান: এই উপজাতের জাপানি কোয়েলটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এদের উৎপত্তি জাপান, চীনসহ এশিয়া অন্য কয়েকটি দেশে। জাপানে ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে এর ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এরা ছোট ও গাট্টাগোট্টা পাখি।

২. পালকের মূল রং বাদামি; এর উপর থাকে গাঢ় চকোলেট বা কালো রঙের ছেঁাপ।

৩. বুকের উপরের অংশের বাদামি রঙের উপর কালো বা খয়েরি গোলাকার ফেঁাটা থাকে।

৪. বুকের নিচের অংশ তামাটে।

উৎপাদন বৈশিষ্ট্য: এরা ৬—৭ সপ্তাহ বয়সে ডিমপাড়া শুরু করে। বার্ষিক ডিম উৎপাদন— ২৭৫—৩০০টি। প্রাপ্তবয়ষ্ক কোয়েলের ওজন— ১৫০১৭৫ গ্রাম।

Capture 155 হাঁস, রাজহাঁস, কবুতর ও কোয়েলের জাত ও বৈশিষ্ট্য | ইউনিট-৬ , পাঠ -৬.৩ | কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র
চিত্র ৬.৩.৪ : ফন বা ব্রাউন কোয়েল

ফন বা ব্রাউন কোয়েল 
উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান: এদের উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান ফারাওয়ের মতোই।

জাত বৈশিষ্ট্য:

১. এদের পালকের রঙের ধরন ফারাওয়ের মতোই, কিন্তু রং একেবারেই হালকা। কোন কালচে ভাব নেই।

২. বাচ্চাগুলোর দেহের কোমল পালকের রং হলদে; এর উপরের  ছোপগুলো বেশ হালকা।

৩. এরা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির। ফারাওয়ের মতো মারামারি বা ঠেঁাকরাঠুকরি করে না।

৪. বাকি সব বৈশিষ্ট্য ফারাওয়ের মতোই।

উৎপাদন বৈশিষ্ট্য: এরা ৬—৭ সপ্তাহ বয়সে ডিমপাড়া শুরু করে। বার্ষিক ডিম উৎপাদন— ২৭৫—৩০০টি। এদের প্রাপ্তবয়ষ্ক কোয়েলের ওজন— ১৫০—১৭৫ গ্রাম।

আরও দেখুন :

Leave a Comment