উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহ , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৬ , পাঠ – ১৬.৩ , বৃক্ষ রোপণ আন্দোলনকে জোরদার করণের জন্য প্রতিবছর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্দোগে অন্যান্য তার ও স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহের আয়োজন করা হয়ে থাকে। নিম্নে উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলা সম্মন্ধে আলোচনা করা হলো।
উপজেলা পর্যায়ের কৃষি ও বৃক্ষমেলা
উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহ , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৬ , পাঠ – ১৬.৩
গ্রামীণ জনগণকে বৃক্ষ রোপণে উৎসাহিত করার জন্য প্রত্যক বছর দেশের প্রতিটি উপজেলায় বৃক্ষ ও কৃষি মেলার আয়োজন করা হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্দ্যোগে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসার ও বৃক্ষমেলার আয়োজন করে থাকেন। অনেক সময় প্রতিটি জেলায় অবস্থিত বন বিভাগ কর্তৃক জেলা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষ মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। মেলাসমূহ সাধারণত ৩-৭ দিন ব্যাপি অনুষ্ঠিত হয়। এসব মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ বৃক্ষের চারার পাশাপাশি বিভিন্ন থকার ফসলের জাত কৃষি পণ্য, উৎপাদন উপকরণ, কৃষি প্রযুক্তি ও বিক্রয় করা হয়।
উপজেলা বৃক্ষ মেলার বৈশিষ্ট্য:
ক. উপজেলা পর্যায়ে জুন-জুলাই মাসে প্রতিবছর কৃষি ও বৃক্ষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
খ. সাধারণত উপজেলা কৃষি বিভাগ এবং বন বিভাগের তত্ত্ববধানে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পৃষ্ঠপোষাকতায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
গ. এ মেলায় কৃষকদের উৎপাদিত ভালোমানের ফল, ফসল, কৃষি উপকরণাদি প্রদর্শিত হয়।
ঘ. মেলায় কৃষি সম্প্রাসারণ বিভাগ, বনবিভাগ, সরকারি ও বেসরকারী নার্সারী বিভিন্ন প্রকারের বৃক্ষের চারা ও বৃক্ষ রোপণের প্রযুক্তি কৃষকদেরকে প্রদর্শন করেন।
ঙ. মেলায় জনসমাগম বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
চ. মেলায় কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত হয় সেজন্য আকর্ষনীয় পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়।
জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহ
জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষমেলা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর ৫ই জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ঢাকার শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলার মাঠের বিশাল চত্বরের সুপরিসর স্থানজুড়ে এ মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বন অধিদপ্তর মাসব্যাপী এ বৃক্ষমেলার আয়োজন করে থাকে। বৃক্ষমেলার মূল উদ্দেশ্য হল বৃক্ষরোপণকে একটি অভিযানে রূপান্তরিত করার জন্য জনমানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
এ উদ্দেশ্যকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্বপরিবেশ দিবসে এ মেলার উদ্বোধন করেন। মেলার তাৎপর্য বৃহত্তর গণমানুষের কাছে পৌছানোর লক্ষ্যে বণার্ঢ্য র্যালী, ব্যানার, ফেস্টুন, পোষ্টার, স্টিকার দিয়ে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া বেতার টেলিভিশনে অনুষ্টান, ভিডিও ছবি প্রদর্শন, পত্র পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে বৃক্ষ রোপণে জনগণ এর আগ্রহ সৃষ্টির সর্বাত্মক প্রচেষ্ট চালানো হয়। এ মেলা আয়োজনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ভেষজ উদ্ভিদের প্রদর্শনী, বিপণন ও রোপণে মানুষকে উৎসাহিত করা। নগরবাসীর আগ্রহ সৃষ্টির জন্য এ মেলায় প্রচুর অর্ণামেন্টাল গাছ পালার সমরোহ ঘটানো হয় যাতে মানুষ এগুলোর সাথে পরিচিত হতে পারে। সারাদেশ থেকে বড় বড় নার্সারীসহ, বৃক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ গ্রহণ করে।
ইদানিংকালে মাসব্যাপী এ বৃক্ষমেলায় কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলজ, ভেষজ ও অর্ণামেন্টাল গাছের চারা বিক্রয় হয়। এই সাথে চলে ব্যাপক বৃক্ষ রোপণ অভিযান । সাধারণ মানুষ ছাড়াও এই সময়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্দে্যাগে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষ রোপণ করা হয়। বিগত তিনদশকে এ বৃক্ষমেলার কারণেই বৃক্ষ রোপণের হার যেমন বেড়েছে, গাছপালার পরিমাণও বেড়েছে।
আরও দেখুন :
- বৃক্ষ মেলার উপযোগী প্রজাতি নির্বাচন , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৬ , পাঠ – ১৬.২
- কৃষি ও বৃক্ষ মেলা , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৬ , পাঠ – ১৬.১
- ব্যবহারিক : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বনজ বৃক্ষের চারা রোপণ ও পরিচর্যা , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৫ , পাঠ – ১৫.৬
- কাষ্ঠল বৃক্ষের ট্রেনিং, প্রম্ননিং ও ক্ষতস্থান ড্রেসিং , কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট – ১৫ , পাঠ – ১৫.৫
- বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের ভূমিকা