সুস্থ বীজ বাছাইকরণ , পাঠ – ৭.৯ , ইউনিট – ৭ , মূলতত্ত্ব : বীজ ফসল উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। ফসলের ফলন নির্ভর করে সুস্থ বীজের উপর। বীজের মধ্যে অপুষ্ট বীজ, রোগাক্রান্ত বীজ, বিবর্ণ বীজ না থাকাকে সুস্থ বীজ বুঝায়। কারণ অপুষ্ট বীজ থেকে দূর্বল চারা উৎপন্ন হয় না মাঠে ভালো ফলন দিতে অক্ষম। তাই বীজে বপনের পূর্বে অবশ্যই ভালো সুস্থ বীজ বাছাই করতে হবে।মাঠ ফসল অন্যান্য ফসলের চেয়ে এর গুরুত্ব সর্বাধিক। চাষযোগ্য জমির অধিকাংশ ব্যবহৃত হয় মাঠ ফসল উৎপাদনের জন্য। মাঠ ফসল ধান, গম, পাট, আখ, সরিষা, ছোলা, ভুট্টা, মুসর, খেসারী, চীনা, কাউন ইত্যাদি।
সুস্থ বীজ বাছাইকরণ , পাঠ – ৭.৯ , ইউনিট – ৭
বাংলাদেশে মাঠ ফসলের সমগ্র চাষযোগ্য জমির শতকরা ৮০ ভাগই দানাজাতীয় ফসলের চাষ হয়ে থাকে। ডাল ও তেল জাতীয় ফসল অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশে ডালফসল হিসেবে মসুর, মুগ, মাসকালাই, খেসারী, অড়হর, মটর, ছোলা ইত্যাদি তেল জাতীয় ফসল হিসেবে সূর্যমুখি, সয়াবিন, সরিষা, তিল, তিশি, চিনাবাদাম ইত্যাদি চাষ করা হয়। ডাল জাতীয় ফসল মানুষ ও গবাদিপশু, পাখির আমিষের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। জাতীয় খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ঋঅঙ এর সুপারিশ অনুযায়ী দৈনিক ৫৮ গ্রাম ডাল শস্য খাওয়া উচিত।
বাংলাদেশে অর্থকরি ফসল হিসেবে চিনি জাতীয় ফসলও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আখ ও সুগারবিট চিনিজাতীয় ফসলের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আঁশ ফসল দিয়ে বস্ত্র, চট, থলে, কার্পেট ও অনেক শৌখিন দ্রব্য তৈরি করা হয়। বস্ত্রের প্রধান কাঁচামাল হলো তুলা। এসব মাঠ ফসলের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে এই ইউনিটে দানা জাতীয় ফসল, ডাল জাতীয়, তেল জাতীয় ফসল, চিনি ও আঁশ জাতীয় ফসল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
১. বপনের জন্য নিবার্চিত ধান বীজ
২. পানি
৩. বালতি/ চৌবাচ্চা
৪. ইউরিয়া সার
৫. লোহা বা কাঠের দন্ড
৬. চালনী
কার্যপদ্ধতি
১. প্রথমে একটি বড় বালতিতে ১৩ লিটার পরিস্কার পানি নিতে হবে।
২. এরপর বালতির পানিতে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার ঢেলে দিয়ে দন্ডের সাহায্যে নাড়াচাড়া করতে হবে যাতে সমস্ত ইউরিয়া দ্রবীভূত হয়।
৩. ইউরিয়া দ্রবণে ধানের বীজ (২০ কেজি) ঢেলে দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে।
৪. পুষ্ট ভারী বীজ বালতির তলদেশে ডুবে যাবে।
৫. অপুষ্ট বীজ ও চিটা দ্রবণের উপরিভাগে ভেসে উঠবে।
৬. ভাসমান চিটা ও অপুষ্ট বীজ চালনীর মাধ্যমে বা হাত দিয়ে তুলে ফেলতে হবে।
৭. বালতির তলায় ডুবে থাকা বীজগুলো উঠিয়ে পরিস্কার পানিতে ৩—৪ বার ধুয়ে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। এ বীজ বীজতলায় বপন করা যাবে অথবা জাগ দেয়া যাবে।
সাবধানতা
১. ইউরিয়া ও পানির অনুপাত সঠিক হতে হবে (১—১.৫: ৪০)
২. বীজ পানিতে ঢেলে ভালোভাবে নাড়তে হবে।
৩. বাছাইকৃত বীজ পরে ব্যবহার করতে হলে তা অবশ্যই দ্রুত পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে।
আরও দেখুন :
- তুলা চাষ পদ্ধতি , পাঠ- ৭.৮ , ইউনিট – ৭
- আঁশ ফসল : পাট চাষ , পাঠ – ৭.৭ , ইউনিট – ৭
- চিনি ফসল : আখ চাষ , পাঠ – ৭.৬ , ইউনিট – ৭
- তেল ফসল : সয়াবিন চাষ , পাঠ – ৭.৫ , ইউনিট – ৭
- তেল ফসল : সূর্যমুখী চাষ , পাঠ – ৭.৪ , ইউনিট-৭
- ডাল ফসল : মসুর ও মুগডাল চাষ , পাঠ – ৭.৩ , ইউনিট – ৭
- বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের ভূমিকা