পিঁয়াজ আলু ও সরিষার বীজ শোধন , বীজ উৎপাদন , ইউনিট – ৪ , পাঠ – ৪.৫ , (ক) পিঁয়াজ বীজ শোধন পিঁয়াজ বীজ বেশ ছোট আকৃতির। এর সাথে বিভিন্ন রোগজীবাণু যেমন- ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও নেমাটোড় লেগে থাকতে পারে। পিঁয়াজ গাছ জন্মানোর পর এসব বীজ বাহিত রোগ জীবাণু পিঁয়াজের কন্দ, পাতা, শিকড় ইত্যাদি অংশে আক্রমণ করতে পারে। এজন্য পিঁয়াজ বীজ বপনের পূর্বে তা শোধন (জীবাণযুক্ত) করে নিতে হবে। বীজ শোধন বলতে বীজ জীবাণুমুক্তকরণকে বোঝায়।
পিঁয়াজ আলু ও সরিষার বীজ শোধন , বীজ উৎপাদন , ইউনিট – ৪ , পাঠ – ৪.৫
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
(১) পিঁয়াজের বীজ (২) বীজ শোধক ভিটাভ্যাক্স ২০০ পাউডার (এম ৪৫) (৩) মুখ আটকানো কৌটা (৪) নিক্তি ইত্যাদি।
কার্যপ্রণালী:
১. এক কেজি পেঁয়াজ বীজ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কৌটায় নিন।
২. পরিমাণমত ভিটাভ্যাক্স ২০০ পাউডার (২ গ্রাম/কেজি) নিক্তি দ্বারা মেপে কৌটার বীজের মধ্যে নিয়ে কৌটার মুখ ভালভাবে আটকিয়ে দিন।
৩. এবার বন্ধ কৌটাটি উল্টিয়ে পাল্টিয়ে কয়েকবার ঝাঁকুন। এতে বীজ শোধক পাউডার বীজের গায়ে লেগে যায়। ৪. শোধন করা বীজ পলিব্যাগ বা উক্ত কৌটায় কয়েক ঘন্টা সংরক্ষণ করুন। অতঃপর নির্ধারিত বীজ তলায় বপন করুন।
সাবধানতা:
১. বীজ শোধক এক ধরনের বিষ। তাই শোধন করা বীজ এবং ঔষধ শিশু ও পশুপাখির নাগালের বাইরে রাখুন।
২. বীজ শোধনের পর হাত ও মুখ ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালভাবে ধৌত করে নিন।
৩. বীজ ও ঔষধ সঠিক পরিমাণে মিশাতে হবে।
(খ) আলু বীজ শোধন বীজ আলুর সাথে বিভিন্ন রোগজীবাণু লেগে থাকতে পারে। তাই আলু বীজ লাগানোর পূর্বে শোধন করে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় উপকরণ:
(১) একটি বড় পাত্র
(২) বাঁশের কঞ্চি
(৩) আলু বীজ
(৪) ডাইথেন এম ৪৫ (বা এমিসন —৬)
কার্যপ্রণালী:
১. একটি বড় পাত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি নিয়ে তাতে নির্দিষ্ট হারে ডাইথেন এম —৪৫ (৩.৬ গ্রাম/লিটার) নিয়ে ভালভাবে মিশান।
২. দ্রবণের মধ্যে প্রয়োজনীয় বীজ আলু (প্রতি লিটারে দেড় কেজি) এক মিনিট ডুবিয়ে তুলে ছায়ায় শুকিয়ে নিন।
৩. এরপর বীজ আলু মাঠে বপন করুন। তবে আলু বীজ কাটা অবস্থায় দ্রবণে নিলে পানি বেরিয়ে অন্তত ২৪ ঘন্টা চট দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যাতে কাটা অংশের উপর একটি পাতলা আবরণ পড়ে। এ আবরণ আলুর বীজকে পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে রক্ষা করে। (গ) সরিষা বীজ শোধন: সরিষা বীজ ছোট আকৃতির। এর সাথে বিভিন্ন বীজবাহিত রোগজীবাণু লেগে থাকতে পারে। তাই বপনের পূর্বে সরিষাবীজ
শোধন করে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় উপকরণ: (১) ডাইথেন এম ৪৫ (বা এগ্রোসান জি এন), (২) বীজ শোধন যন্ত্র ইত্যাদি। কার্যপ্রণালী:
১. একটি বড় বালতিতে ১০ লিটার পানি দিয়ে তার মধ্যে ৩০০ গ্রাম লবন দিয়ে ভালভাবে মিশান।
২. লবণ দ্রবণে সরিষার বীজ ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করতে থাকুন। অপুষ্ট বীজগুলো উপরে ভেসে উঠবে। ভেসে
থাকা বীজগুলো ফেলে দিন এবং পানিতে ডুবে থাকা বীজ গুলো উঠিয়ে শুকিয়ে নিন।
৩. শুকনো বীজের সাথে প্রয়োজনমতো ডাইথেন এম ৪৫ (প্রতি কেজিতে ৩ গ্রাম) মিশিয়ে সীড ড্রেসারে নিন।
৪. সীড ড্রেসারটি কিছুক্ষণ ঘোরালে বীজের গায়ে ঔষধ ভালোভাবে লেগে যাবে। এবার শোধন করা বীজ কয়েক ঘন্টার মধ্যে বপন করুন।
সাবধান :
১. বীজ শোধক এক ধরনের বিষ। তাই শোধন করা বীজ এবং ঔষধ শিশু ও পশুপাখির নাগালের বাইরে রাখুন।
২. বীজ শোধনের পর হাত ও মুখ ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালভাবে ধৌত করে নিন।
৩. বীজ ও ঔষধ সঠিক পরিমাণে মিশাতে হবে।
আরও দেখুন :
- বীজের বিশুদ্ধতার হার নির্ণয় , বীজ উৎপাদন , ইউনিট-৪ , পাঠ-৪.৪
- বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ , বীজ উৎপাদন , ইউনিট-৪ ,পাঠ-৪.৩
- পিঁয়াজ ও সরিষার বীজ উৎপাদন কৌশল , বীজ উৎপাদন , ইউনিট-৪, পাঠ-৪.২
- আলুর বীজ উৎপাদন প্রযুক্তি , বীজ উৎপাদন , ইউনিট-৪, পাঠ-৪.১
- পানি নিস্কাশন , পানি সেচ ও নিষ্কাশন , ইউনিট ৩ , পাঠ – ৩.৪
- লবণাক্ত এলাকায় মিনিপুকুরে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ