পোনা সনাক্তকরণ, আহরন, পরিবহন ও মজুদকরণ

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-পোনা সনাক্তকরণ, আহরন, পরিবহন ও মজুদকরণ

পোনা সনাক্তকরণ, আহরন, পরিবহন ও মজুদকরণ

পোনা সনাক্তকরণ

কাতল

মাখা বড়, দেহে কোন কাল দাগ নেই। পাখনা ধূসর রঙের মুখ চওড়া এবং উপরের দিকে ওঠানো ঠোঁট পুরু।

বুই

দেহ কিছুটা লম্বা। লেজের গোড়ায় কাল গোলাকার চিহ্ন রয়েছে। য়ছে। পা পাখনার আगा লাল বর্ণের। মুখ ছোট, ঠোঁটে গাঁজযুক্ত মাংসপিণ্ড রয়েছে। ছোট দুই জোড়া শুঁড় বসেছে।

মৃগেল

দেহ ঈষৎ সরু ও লম্বা লেজের গোড়ায় চারকোণা কাল দাগ রয়েছে। দেহের উপর হাল্কা কাল লম্বালম্বি দাগ আছে। লেকের পাখনা কালিকা লাল বর্ণের। খুব ছোট শুঁড় দেখা যার ঠোঁট সমান। মুখ একটু নিচের দিকে অবনমিত ।

 

সিলভার কার্প

দেখতে কিছুটা চাপিলা মাছের মত। সেই চ্যাপ্টা ও বর্ণ উगाना ाा ঈষৎ বড় পাখনাগুলো ধূসর। মুখ একটু বড় পৃষ্ঠ পাখনা ও আঁশ ছোট।

কমন কার্প:

নেহ ঈষৎ উজ্জ্বল সোনালী বর্ণের ও চওড়া। পিঠের পাখনা লেজের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। মাথা ছোট, দুই জোড়া শুঁড় আছে। পৃষ্ঠদেশ খানিকটা উঁচু। পৃষ্ঠের পাখনায় শক্ত কাঁটা আছে।

গ্রাস কার্প –

লম্বা গোলাকার দেহ। বর্ণ হালকা সবুজাভ। মাথা ছোট এবং একটু লম্বা। পিঠের পাখনার বিস্তৃতি ছোট, তবে একটু লম্বা।

 

পোনা আহরণ ও পরিবহন

মাছ চাষের জন্য ৮-১০ সে.মি. আকারের পোনা প্রয়োজন। এ পোনা অনেক সময় দূর দূরান্ত হতে সংগ্রহ করতে হয়। হ্যাচারি ও প্রাকৃতিক উৎস থেকে যে রেণু পোনা পাওয়া যায় তার এক বিরাট অংশ আহরণ ও পরিবহন জনিত সমস্যার কারণে মারা যায়। পোনা মাছ খুবই নরম ও নাজুক বলে পরিবহনকালীন আঘাতপ্রাপ্ত হলে অন্য কোন কারণে নিস্তেজ হয়ে পড়লে তা চাষের জন্য অনুপযোগী হয়ে যায়। তাই মাছ চাষের জন্য সুস্থ সবল পোনা প্রয়োজন।

পোনা মাছ সকালে আহরণ করা উচিত। নতুবা পোনা মাছের মৃত্যুহার অনেক বেশি হবে। পুকুরের সমস্ত পোনা আহরণ করার জন্য বার বার জাল টানতে হবে। অবশিষ্ট পোনা পানি নিষ্কাশন করে আহরণ করতে হবে। যদি একই পুকুরে পোনা রেখে বিক্রয় করতে হয় তবে সকালে এক থেকে দু’বার জাল টেনে মাছ ধরতে হবে। কোন অবস্থাতেই দিনে দুবারের বেশি জাল টানা যাবে না এবং দিনের দু’বেলা জাল টানা যাবে না। এতে পানি ঘোলা হলে পোনার ক্ষতি হবে এবং পোনা মাছ মারা যাবে।

পরিবহন

আমাদের দেশে দুটি পদ্ধতিতে পোনা পরিবহন করা হয়। যথা- আধুনিক ও সনাতন। আধুনিক পদ্ধতিতে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাগে বেশি সংখ্যক পোনা মাছ অনেক দূরে পরিবহন করা যায়। তবে পলিথিন ব্যাগে অবশ্যই অক্সিজেন ভরে নিতে হয়। সনাতন পদ্ধতিতে মাটির হাঁড়ি, অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল, হাফ ড্রাম ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

পরিবহনের পূর্বে সাধারণত ১২-২৪ ঘণ্টা পোনা মাছকে অভ্যুত অবস্থায় রাখতে হবে। এতে মাছের পোনার পেট খালি হয় ফলে পরিবহনরে সময় গোনার মূলমন্ত্র দিয়ে পানি নষ্ট হয় না। এবং পোনার মত্যুর আশঙ্কা কমে যায়। পরিবহনকালে যেন পোনা নষ্ট না হয়ে সেজন্য নিম্নোক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন

১. মাটির হাঁড়ি বা ড্রামে পোনা নেয়ার পর থেকে পুকুরে ছাড়া পর্যন্ত বা ড্রামের পানি ধীরে ধীরে নাড়তে হবে। নতুবা অক্সিজেনের অভাবে পোনা মরে যেতে পারে।

২. ভোরে কাপড় নিয়ে হাঁড়ি বা ড্রামের গা জড়িয়ে রাখতে হবে। তাতে পাত্রের ভিতর পানি ঠাণ্ডা থাকবে। ৩. পলিথিন ব্যাগে পোনা পরিবহনের সময় ব্যাগকে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা ভালো। তে তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে গেলে ভেজা বলে যারা জড়িয়ে রাখতে হবে।

 

 

মজুদকরণ

পুকুরে পোনা ছাড়াকেই পোনা মজুদকরণ বলা হয়। পোনা সরাসরি পুকুরে ছাড়া উচিত নয়। কারণ ড্রাম বা পাত্রের পানির তাপমাত্রা ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা আলাদা হতে পারে। এ অবস্থায় পোনা সরাসরি পুকুরে না ছেড়ে পোলার পাত্র পুকুরের পানিতে আংশিকভাবে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে পুকুরের পানি আছে আছে পাত্রের পানির সাথে মেশাতে হবে।

পাত্র ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা যখন এক মনে হবে তখন পাত্রটিকে ধীরে ধীরে কাত করে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। যাতে পোনা ইচ্ছামতো বের হয়ে পুকুরের পানিতে চলে যেতে পারে। সকাল বা সন্ধ্যায় পুকুরের পানি ঠাণ্ডা থাকে তখনই পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়। তবে পুকুরে পোনা ছাড়ার আগে বেশ কয়েকবার হররা টানা ভালো।

সারমর্ম
  • পোনার মৃত্যুর হার কমাতে হলে সকালে পোনা আহরণ করা উচিত।
  • পরিবহনের আগে সুস্থ সবল পোনা মাছকে অভুক্ত রাখতে হয়য়।
  • পোনা পরিবহনের সময় ভেজা কাপড় দিয়ে পরিবহন পাত্রের গা জড়িয়ে রাখতে হয়।
  • পোনা সরাসরি পুকুরে ছাড়া উচিত নয়।
  • পুকুরে পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময় সকাল এবং সন্ধ্যা।

By একাডেমিক ডেস্ক, কৃষি গুরুকুল

কৃষি গুরুকুলের একাডেমিক ডেস্ক

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version