প্রদর্শিত মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) শনাক্তকরণ ব্যবহারিক

প্রদর্শিত মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) শনাক্তকরণ ব্যবহারিক – আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি কৃষি শিক্ষা ২য় পত্রের, ১ নং ইউনিটের ১.৭ নং পাঠ।

 

প্রদর্শিত মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) শনাক্তকরণ ব্যবহারিক

 

মূলতত্ত্ব :

মাছ আমিষ জাতীয় খাদ্য। আমাদের দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে মাছের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। মাছ বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে মাছ শনাক্ত করতে পারে সে দিকে বিবেচনায় রেখেই এই পাঠের অবতরণা।

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবহমানকাল থেকেই এদেশের মানুষের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে মাছ। আর এজন্যই বলা হয় “মাছে ভাতে বাঙালী। বিপুল জলসম্পদের এই দেশে অগনিত মানুষ মৎস্য আহরণ, চাষ ও বেচা—বিক্রিসহ এ সংক্রান্ত নানা কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে প্রাণীজ আমিষের উত্তম উৎস হিসেবে মাছের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বৈদেশিক মুদ্রার্জনের পাশাপাশি মৎস্য চাষ করে অনেক বেকার যুবকযুবতী স্বাবলম্বী হচ্ছে।

ব্যবহারিক : প্রদর্শিত মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) শনাক্তকরণ, কৃষি শিক্ষা ২য় পত্র , ইউনিট-১ , পাঠ -১.৭

যার ফলে দেশের আর্থ—সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ত্বরাম্বিত হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার মৎস্য খাতের সার্বিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাগত উৎকর্ষতা সাধনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। সময়োপযোগী ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছসহ অন্যান্য জলসম্পদের উৎপাদন বাড়াতে নেওয়া হয়েছে নানা কার্যকর উদ্যোগ। ফলে দেশের মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪—১৫ অর্থবছরে ৩৬ লক্ষ ৮৪ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনা সরকারের সুযোগ্য নেতৃত্বে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ গভীর সমুদ্রে ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকার মালিকানা অর্জন করেছে।

এখন জাতিসংঘ ঘোষিত “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এস.ডি.জি)” অর্জনে অভ্যন্তরীণ জলাশয়ের পাশাপাশি সামুদ্রিক বিশাল জলজসম্পদকে সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হবে।
এ ইউনিটের বিভিন্ন পাঠে মাছ চাষের ইতিহাস, মাছের অর্থনৈতিক গুরুত্ব, মাছের বাসস্থানসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন মাছের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

 

প্রয়োজনীয় উপকরণ:

*নমুনা মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) রর.. মাছ রাখার জন্য ট্রে/পাত্র ররর. ফরসেফ বা চিমটা রা. ফরমালিন, খাতা, কলম ইত্যাদি।

 

কার্যপদ্ধতি:

১. প্রথমে বাজার থেকে চারটি নমুনা মাছ জোগাড় করুন। এবার চারটি মাছকে পৃথক পৃথক ট্রেতে রাখুন। ররর. মাছগুলো যাতে তাড়াতাড়ি পচে না যায় তার জন্য সামান্য পরিমাণ ফরমালিন ব্যবহার করুন। রা. এবার চিমটা দিয়ে নমুনা মাছগুলো ভালোভাবে নেড়েচেড়ে বহিরাকৃতি পর্যবেক্ষণ করুন। ব্যবহারিক নোটবুকে ট্রেতে রাখা মাছ চারটির চিহ্নিত চিত্র অংকন করুন এবং তাদের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য লিখুন। ক্লাস শেষে মাছগুলো গ্লাসজারে ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষণ করুন।

রাজপুটির 2 প্রদর্শিত মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) শনাক্তকরণ ব্যবহারিক

 

 

নমুনা— রাজপুটি শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

১. রূপালি আঁইশে আবৃত দেহ দেখতে অনেকটা দেশী সরপঁুটির মত। তবে শরীর পাশ্বীর্য়ভাবে বেশ চ্যাপ্টা ও পাতলা। রর. দেশী সরপুঁটি তুলনায় এর মাথা ছোট।
২. দেহের সামনে ও পিছনে চাপা এবং মাঝখানে বেশ চওড়া।
৩. মাছটির পিঠের দিকে হালকা মেটে এবং পেটের পাখনার রং হালকা হলুদ।

নমুনা : নাইলোটিকা শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:
১. মাছটি দেখতে ধুসর—নীলাভ থেকে সাদা লালচে।
২. পৃষ্ঠ পাখনা কালো বর্ণের মার্জিনযুক্ত এবং পুচ্ছ পাখনা সাদা বর্ণের সরু ও লম্বা দাগযুক্ত । ররর. পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনায় শক্ত কাঁটা আছে।

 

 

নমুনা : কই শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

১. দেশী কই—মাছ ছোট অবস্থায় কালচে ধরনের এবং পরিপক্ক অবস্থায় পিঠের দিকে বাদামী সবুজ আর পেটের দিকে হালকা হলুদ রঙের হয়। থাই/ভিয়েতনামী কই—এর দেহ হালকা ফ্যাকাশে ধরনের। দেহের উপরিভাগে ছোট ছোট
কালো দাগ থাকে এবং পাখনাগুলো হালকা হলুদ রঙের হয়। রর. দেশী কই—এর কানকোর পিছনে কালো দাগ থাকে কিন্তু পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় কালো দাগ থাকে না। থাই কইয়ের  কানকোর পিছনে এবং পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় কালো দাগ থাকে। ররর. দেশী কই—এর মুখ কিছুটা চোখা (চড়রহঃবফ) এবং থাই কই এর মুখটা ভেঁাতা (ইষঁহঃ)। রা. উভয়েরই পৃষ্ঠ পাখনায় ১৬ থেকে ২০টি এবং পায়ু পাখনায় ৯—১১ টি শক্ত কাঁটা থাকে। া. মাথার উপরেও আঁইশ বিদ্যমান।

পাঙ্গাস মাছ 1 প্রদর্শিত মাছ (রাজপুটি, নাইলোটিকা কই ও পাঙ্গাস) শনাক্তকরণ ব্যবহারিক

 

 

নমুনা : পাঙ্গাস (থাই) শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

১. পাঙ্গাসের দেহে কোন আঁইশ থাকে না।
২. পাঙ্গাস দেখতে রুপালি—সাদা, পিঠের দিকটা নীলাভ—কালচে বর্ণের হয়। ররর. পিঠে ৯টি ও কানের পাশে ২টি শক্ত কাঁটা থাকে।
৩. এদের ছোট গোঁফ এবং পিঠে এডিপোজ ফিন থাকে।

 

 

আরও দেখুন :

Leave a Comment