সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা। কৃষি উৎপাদনে বালাই বা ক্ষতিকর পোকামাকড়, রোগজীবাণু ও আগাছা অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। অতিরিক্ত বা অযৌক্তিকভাবে রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করলে যেমন পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে, তেমনি তা দীর্ঘমেয়াদে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে। এই প্রেক্ষাপটে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা (Integrated Pest Management – IPM) একটি কার্যকর ও টেকসই পন্থা হিসেবে স্বীকৃত। এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হলো— অর্থনৈতিক ক্ষতির সীমা বজায় রেখে, বালাই দমনে সকল সম্ভাব্য কৌশলকে একত্রে প্রয়োগ করে পরিবেশবান্ধবভাবে কৃষিজ উৎপাদন নিশ্চিত করা।

এই ব্যবস্থায় কেবল রাসায়নিক নয়, বরং জৈব, যান্ত্রিক, জেনেটিক ও সাংস্কৃতিক কৌশলও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। IPM ব্যবস্থা কৃষকের খরচ কমিয়ে দেয়, ফসলের গুণমান বৃদ্ধি করে এবং কৃষিকে পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের দিক থেকে অধিক নিরাপদ করে তোলে।

আপদের সঠিক কোন সংজ্ঞা দেয়া যায় না কারণ এটা বিভিন্নভাবে পরিবর্তনশীল । শুরু ব্যাপক অর্থে যে কোন প্রাণী বা উদ্ভিদ যা মানুষ, তাদের পালিত পশু-পাখি, ফসল, ব্যবহৃত দ্রব্যাদি প্রভৃতির ক্ষতিসাধন করে বা বিরক্তির উদ্রেক করে থাকে তাকে আপন বা বালাই বলা হয়।

যেমন- পোকামাকড়, ইদুরজাতীয় প্রাণী, শিয়াল, পাখি, কাঠবিড়ালি, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, কৃমি, আগাছা ইত্যাদি। ফল বিবেচনা করলে আপসসমূহের মধ্যে পোকামাকড়ের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা হলো উদ্ভিদ সংরক্ষণের একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পদ্ধতি, যার মাধ্যমে বিভিন্ন দমন কৌশলের সমন্বয় ঘটিয়ে ক্ষতিকর বালাইগুলোকে অর্থনৈতিক ক্ষতির সীমার নিচে রাখা হয়। এতে রাসায়নিক, জৈব, যান্ত্রিক, জেনেটিক এবং সাংস্কৃতিক পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি সুষম কৌশল গড়ে ওঠে। এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য ফসলের ক্ষতি কমানো এবং পরিবেশ ও উপকারী প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা।

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার মূল বৈশিষ্ট্য:
  • IPM-এ শুধু রাসায়নিক কীটনাশক নয় বরং কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে সমস্যার নিরূপণ ও সমাধানে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
  • পোকা-মাকড়, রোগ ও আগাছার চক্র বুঝে তাদের সংক্রমণের মাত্রা ও প্রকৃতি অনুযায়ী কৌশল প্রয়োগ করা হয়।
  • নির্দিষ্ট ক্ষতির মাত্রা (“Economic Threshold Level – ETL”)-এর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কীটনাশক ব্যবহার করা হবে কিনা।

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার উপকারিতা:
ক্র. উপকারিতা ব্যাখ্যা
প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা উপকারী জীব যেমন ব্যাঙ, গিরগিটি, টিকটিকি ও পরজীবী পোকা সংরক্ষিত থাকে
পরিবেশ দূষণ কমানো অকার্যকর বা অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার না করায় মাটি, পানি ও বায়ু কম দূষিত হয়
উপকারী পোকামাকড় সংরক্ষণ পরজীবী এবং পরভোজী পোকামাকড়ের জীবিত থাকা ফসলের জন্য প্রাকৃতিক রক্ষা দেয়াল
কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাস শুধুমাত্র প্রয়োজন হলে ও পরিমাণ বুঝে ব্যবহার করা হয়
ফসলের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়মিত আক্রমণ থেকে ফসল নিজে রক্ষা করার ক্ষমতা তৈরি করে
কীট প্রতিরোধীতা হ্রাস অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারে যে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, তা অনেকাংশে রোধ হয়
উৎপাদন খরচ কমে, ফলন বাড়ে কম কীটনাশক, সঠিক কৌশল ও সময়ে ব্যবস্থাপনার ফলে খরচ কমে, ফলন বাড়ে

 

IPM ব্যবস্থায় ব্যবহৃত প্রধান কৌশলগুলো:
কৌশল উদাহরণ
১. সাংস্কৃতিক দমন সঠিক সময়ে চাষ, ফসলের ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ, ফসল পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন (Crop Rotation)
২. যান্ত্রিক দমন হাত দিয়ে বা ফাঁদ দিয়ে পোকা ধরা, আলোর ফাঁদ, পিপিই ব্যবহার
৩. জৈব দমন ট্রাইকোগ্রামা পোকা ছাড়া, বিটি ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার
৪. রাসায়নিক দমন (সীমিতভাবে) নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে কীটনাশক ব্যবহারে অনুমোদিত প্রয়োগ
৫. প্রতিরোধী জাত ব্যবহার রোগ ও পোকা সহিষ্ণু বা প্রতিরোধী জাত ব্যবহার

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, অন্যদিকে কৃষকের জন্য একটি লাভজনক ও দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদন পদ্ধতি নিশ্চিত করে। একে যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে এটি বাংলাদেশের কৃষিতে একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব বিপ্লব এনে দিতে পারে।

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা (IPM) হলো এমন একটি পরিবেশবান্ধব কৌশল, যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষতির নিচে থেকে বালাই নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। এতে একাধিক দমন কৌশল (সংস্কৃতিক, জৈবিক, যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও প্রতিরোধক জাত) একত্রে এবং সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবহার করা হয়।

নিম্নে এই ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:

 

. আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির মাধ্যমে দমন

  • জমি গভীরভাবে চাষ করলে মাটির নিচের পোকা ও ডিম উঠে এসে রোদে বা পাখির খাদ্য হয়ে মারা যায়।
  • ফসল পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করলে নির্দিষ্ট পোকামাকড় বা রোগের চক্র ভেঙে যায়।
  • সুষম সার ব্যবহারে গাছ সুস্থ থাকে, ফলে রোগ বা পোকার আক্রমণ কমে।
  • ধানখেতে অতিরিক্ত পানি অপসারণ বা সেচ ব্যবস্থা বদল করে নির্দিষ্ট পোকার (যেমন গাছ ফড়িং বা শীষকাটা পোকা) আক্রমণ কমানো যায়।

 

. প্রতিরোধক শস্যের মাধ্যমে দমন

  • প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করলে প্রাকৃতিকভাবেই রোগ বা পোকার আক্রমণ রোধ করা যায়।
  • উদাহরণ:
    • চান্দিনা ধান – মাজরা পোকার প্রতিরোধী।
    • প্রগতি ধান – টুংরো ভাইরাস, রস্ট ও বাকানী রোগ প্রতিরোধী।

 

. যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমন

  • মানুষের হাত বা যন্ত্র ব্যবহার করে পোকা ধ্বংস করা হয়।
  • পদ্ধতিসমূহ:
    • হাতজাল বা দলে ধরে পোকা ধরা
    • পিটিয়ে, ঝাঁকিয়ে ফেলা
    • কুলা বা চালুনিতে চেলে ফেলা
    • আলো ফাঁদ – আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পোকা ধরা পড়ে

 

. জৈবিক পদ্ধতিতে দমন

  • প্রাকৃতিক শত্রু বা পরজীবীর মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকা দমন করা।
  • উদাহরণ:
    • Trichogramma spp. – ডিমপর্যায়ে পরজীবী
    • Beauveria bassiana – ছত্রাক, যা পোকামাকড়ে সংক্রমণ ঘটায়
    • লেডি বিটল – অ্যাফিড দমন করে

 

. রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমন

  • অনুমোদিত এবং নির্দিষ্ট মাত্রায় বালাইনাশক ব্যবহার করে বালাই দমন করা।
  • উদাহরণ:
    • ডায়াজিনন ৬০ ইসি – উদ্ভিদভোজী পোকা দমনে ব্যবহৃত
    • ম্যালাথিয়ন – চুষে খাওয়া পোকা দমনে কার্যকর
    • কুইনালফস, কার্বারিল, ক্লোরপাইরিফস – অন্যান্য বহুল ব্যবহৃত কীটনাশক

 

পদ্ধতিগুলোর তুলনামূলক টেবিল:

দমন পদ্ধতির নাম কার্যপদ্ধতি / কৌশল উদাহরণ / মন্তব্য
আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি গভীর চাষ, ফসল পরিবর্তন, সুষম সার প্রয়োগ, পানি ব্যবস্থাপনা চুঙ্গি পোকার দমন, শীষ কাটা পোকা নিয়ন্ত্রণ
প্রতিরোধক শস্য রোগ ও পোকা প্রতিরোধী জাত ব্যবহার চান্দিনা, প্রগতি জাত
যান্ত্রিক পদ্ধতি ফাঁদ, ঝাঁকানো, কুলা, আলো ফাঁদ ধানক্ষেতে আলো ফাঁদ
জৈবিক পদ্ধতি পরজীবী ও শিকারি জীবের ব্যবহার Trichogramma, Lady Beetle, ছত্রাক
রাসায়নিক পদ্ধতি অনুমোদিত কীটনাশকের সঠিক মাত্রায় ব্যবহার ডায়াজিনন ৬০ ইসি, ম্যালাথিয়ন

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা হলো আধুনিক কৃষির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি শুধু উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে না, বরং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায়ও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সঠিক সময়ে ও সঠিক পদ্ধতি বেছে নিয়ে IPM বাস্তবায়ন করলে কৃষক অধিক লাভবান হতে পারে এবং কৃষি ব্যবস্থাপনা আরও টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হতে পারে।

 

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার উপাদানসমূহ

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা (IPM) হলো এমন একটি ফসলভিত্তিক টেকসই কৌশল, যার মাধ্যমে ফসলের পুরো চাষাবাদ চক্রে (চারা অবস্থা, বৃদ্ধির পর্যায়, ফুল ও ফল ধরা পর্যন্ত) বালাই নিয়ন্ত্রণ করা হয়। IPM-এর লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রার নিচে বালাই রাখা এবং পরিবেশ, মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনা।

IPM বাস্তবায়নে নিচের ৫টি প্রধান উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে:

 

. পর্যবেক্ষণ (Monitoring)

  • ফসলের ক্ষেতে নিয়মিত পরিদর্শনের মাধ্যমে বালাই বা তাদের উপসর্গ আছে কি না তা খেয়াল রাখা।
  • এটি প্রাথমিক সংকেত দেয় যে বালাই নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন কি না।

. জরিপ (Survey)

  • জমিতে উপস্থিত বালাই ও তাদের প্রাকৃতিক শত্রুদের সনাক্তকরণ ও গণনা করা।
  • উদাহরণ: প্রতি নির্দিষ্ট সংখ্যক গাছে কীটপতঙ্গ বা রোগ লক্ষণ কত শতাংশে বিদ্যমান তা নথিভুক্ত করা।

. দমননীতি (Decision-Making Rules)

  • নির্ধারণ করা যে কখন, কত পরিমাণ আক্রমণ হলে এবং কোন পদ্ধতি বেছে নিয়ে বালাই দমন করতে হবে।
  • একে ইকোনমিক থ্রেশহোল্ড লেভেল (ETL) বা অর্থনৈতিক সহনশীল মাত্রাও বলা হয়।

. দমন পদ্ধতি (Control Methods)

  • নিচের চারটি পদ্ধতি থেকে প্রয়োজনে একাধিক কৌশল প্রয়োগ করা হয়:
    • যান্ত্রিক পদ্ধতি: ফাঁদ, হাতজাল, আলো ফাঁদ ইত্যাদি
    • জৈবিক পদ্ধতি: পরজীবী পোকা বা ছত্রাকের ব্যবহার
    • রাসায়নিক পদ্ধতি: অনুমোদিত কীটনাশক, নির্ধারিত মাত্রায় প্রয়োগ
    • কৃষিনির্ভর পদ্ধতি: জমি চাষ, ফসল পরিবর্তন, সময়মতো সেচ

. অজীবীয় উপাদান (Abiotic Factors)

  • তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, কুয়াশা, বৃষ্টি, বাতাসের গতি ইত্যাদি পরিবেশগত উপাদান অনেক সময় বালাইকে প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • যেমন—গ্রীষ্মকালে অধিক তাপমাত্রায় ছত্রাকজাত রোগ কমে যায়, বর্ষায় কিছু পোকা প্রাকৃতিকভাবে ধ্বংস হয়।

 

টেবিলে উপস্থাপন: IPM এর উপাদান কার্যকারিতা

উপাদান কার্যকারিতা বা ভূমিকা
পর্যবেক্ষণ ক্ষেতে নিয়মিত পরিদর্শন করে বালাই উপস্থিতি শনাক্তকরণ
জরিপ বালাই ও প্রাকৃতিক শত্রুর সংখ্যা নিরূপণ
দমননীতি কখন ও কী পদ্ধতিতে দমন করতে হবে তা নির্ধারণ
দমন পদ্ধতি যান্ত্রিক, রাসায়নিক, জৈবিক ও কৃষিনির্ভর উপায় প্রয়োগ
অজীবীয় উপাদান আবহাওয়া ও পরিবেশের প্রতিকূলতা কাজে লাগিয়ে বালাই দমন

 

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার এই উপাদানসমূহ একে অপরের পরিপূরক। এসব উপাদান কার্যকরভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে ফসলের গুণগত মান বজায় থাকে, উৎপাদন ব্যয় কমে, পরিবেশ সুরক্ষিত থাকে এবং কৃষি হয় অধিক টেকসই ও লাভজনক।

 

 

 

সারমর্ম

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা হলো উদ্ভিদ সংরক্ষণের একটি পদক্ষেপ যেখানে বিভিন্ন প্রকার দমন পদ্ধতির সমন্ধ্যা সাধন ও প্রয়োগ করাকে বুঝায় অর্থাৎ যখন যে পদ্ধতির দরকার সেটির ব্যবহার বুঝায়। এ ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য হলো পোকামাকড় সম্পূর্ণভাবে নয় বরং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর পর্যায়ের নিচে রাখা হয়। এ ব্যবস্থাপনা শস্যভিত্তিক হয়ে থাকে। এর প্রধান উপাদান ৫টি। যথা- পর্যবেক্ষণ, জরিপ, দমননীতি দমন পদ্ধতি ও অজীবীয় উপাদান।

By একাডেমিক ডেস্ক, কৃষি গুরুকুল

কৃষি গুরুকুলের একাডেমিক ডেস্ক

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version