মাটিতে জৈব পদার্থের উৎস, জৈব পদার্থের কারণে মাটির গুণাগুণের তারতম্য

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মাটিতে জৈব পদার্থের উৎস, জৈব পদার্থের কারণে মাটির গুণাগুণের তারতম্য

মাটিতে জৈব পদার্থের উৎস, জৈব পদার্থের কারণে মাটির গুণাগুণের তারতম্য

 

মাটিতে জৈব পদার্থের উৎস, জৈব পদার্থের কারণে মাটির গুণাগুণের তারতম্য

জৈব পদার্থ পাঁচটি মৌলিক উপাদানের একটি। অন্যান্য উপাদানগুলো হলো খনিজ দ্রব্য, বায়ু, পানি ও অণুজীব। জৈব পদার্থকে মাটির প্রাণ বলে অভিহিত করা হয়, কারণ জৈব পদার্থই মূলত মাটির উর্বরতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ।

মাটিতে জৈব পদার্থের উৎস

উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মাটিতে জৈব পদার্থের প্রধান উৎস। মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন ধরনের জীব, অণুজীব এবং অন্যান্য প্রাণীর মৃতদেহ, মলমূত্র ইত্যাদি প্রতিদিনই মাটিতে যোগ হচ্ছে। জৈব পদার্থের উৎস হিসেবে প্রাণীর চাইতে উদ্ভিদের অবদান সম্ভবত অনেক বেশি।

কারণ ফসলের পরিত্যক্ত অংশ- যেমন শিকড়, পাতা, খড়কুটা, ফসল সংগ্রহের পর জমিতে ফেলে আসা মূলসহ গাছের নিচের অংশ, আগাছার দেহাবশেষ ইত্যাদি ছাড়াও বাড়িঘর, রাস্তাঘাটের আবর্জনা ও বনাঞ্চলের গাছপালার অংসখ্য ঝরা পাতা, ছোট ডালপালা, ফুলফলের অংশ বিশেষ প্রতিনিয়ত মাটিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ যোগ করে চলেছে।

মাটিতে প্রয়োগকৃত জৈব সার যেমন- গোবর, কম্পোস্ট, খামারজাত সার, সবুজ সার, খৈল, হাড়ের গুঁড়া, মাছের গুঁড়া ইত্যাদিও মাটিতে জৈব পদার্থের উৎস।

 

 

জৈব পদার্থের কারণে মাটির গুণাগুণের তারতম্য

জৈব পদার্থ মাটির গুণাগুণের উপর স্পষ্ট প্রভাব বিস্তার করে যেমন –

ক) জৈব পদার্থ মাটির দলাবন্ধনে সাহায্য করে। হালকা বুনটের জমিতে (বেলে মাটিতে) জৈব পদার্থ সিমেন্টের মত বালিকণাকে একত্রে ধরে রাখে, যার ফলে মাটির ফাঁকাস্থান কমে যায় এবং পানি ধারণ মতা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে ভারী বুনটের এঁটেল মাটিতে জৈব পদার্থ মাটিকণাগুলোকে পরস্পর থেকে দুরে ঠেলে দিয়ে এদের মধ্যে অবস্থান গ্রহণ করে, যার ফলে মাটির মধ্যে ফাঁকা জায়গা বাড়ে এবং আলোবাতাস ও পানির চলাচল সহজতর হয়।

খ) জৈব পদার্থ মাটিতে উদ্ভিদের বিভিন্ন খাদ্যোপাদান যোগান দেয় বলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় । জৈব পদার্থের মাধ্যমে কিছু নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম ছাড়াও অনেকগুলো গৌণ খাদ্যোপাদান যোগ হয় বলে মাটিতে সাধারণত গৌণ খাদ্যোপাদানের অভাব হয় না।

গ) জৈব পদার্থের বিয়োজনের ফলে মাটিতে হিউমাস (Humus) সৃষ্টি হয় যা মাটিতে খাদ্যোপাদানকে ধরে রাখার মতা বৃদ্ধি করে। যার ফলে মাটিতে অবস্থিত অথবা প্রয়োগকৃত সার ও সেচের পানির অপচয় কম হয়। হিউমাস সমৃদ্ধ মাটি নরম থাকে, এতে ভূমিকর্ষণ সহজতর হয় এবং বীজতলা থেকে চারা ওঠানোর সময় শিকড়ের তেমন তি হয় না।

 

ঘ) জৈব পদার্থ মাটির উপকারী জীবাণুর খাদ্য সরবরাহ করে, তাদের বংশবৃদ্ধি ও কার্যকলাপ বৃদ্ধিতে এবং হিউমাস গঠনে সহায়তা করে। এছাড়া জৈব পদার্থের বিয়োজনে সৃষ্ট কার্বনিক এসিড ও অন্যান্য জৈব এসিড কোন কোন খাদ্যোপাদানকে অদ্রবীভূত অবস্থা থেকে দ্রবীভূত অবস্থায় আনতে সহায়তা করে এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।

By একাডেমিক ডেস্ক, কৃষি গুরুকুল

কৃষি গুরুকুলের একাডেমিক ডেস্ক

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version