আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মাটিতে জৈব পদার্থ বৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা
Table of Contents
মাটিতে জৈব পদার্থ বৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা
মাটিতে জৈব পদার্থ বৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা
ফসলের জমিতে শতকরা প্রায় ৫ ভাগ আয়তনভিত্তিক জৈব পদার্থ থাকা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ অত্যন্ত কম, শতকরা মাত্র ০.৩-২.১ ভাগ। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র হবার ফলে এবং নিবিড় চাষের কারণে মাটির জৈব পদার্থ অতি দ্রুত বিয়োজিত ও পরিশোষিত হয়ে দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন মতা উভয়ই হ্রাস পাচ্ছে।
মাটিতে জৈব পদার্থ বৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা
বাংলাদেশের কৃষিতে সর্বত্র পশুশক্তি ব্যবহৃত হলেও আজকাল জমিতে গোবর ব্যবহার করা যাচ্ছে না । কারণ গ্রাম গঞ্জে জ্বালানির প্রকট অভাব মেটানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ গোবর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন ফসল যেমন- ধান, গম ইত্যাদি সংগ্রহের সময় গাছের গোড়ার দিকের যে অংশটুকু জমিতে থেকে যায় সেটুকুও গরীব লোকজন জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কেটে নিয়ে যায়।
আম, জাম, কাঁঠাল ও বনাঞ্চলের ঝরাপাতাও আজকাল মাটিতে জৈব পদার্থ যোগ করতে পারছে না। প্রায় প্রতিদিনই এগুলো কুড়িয়ে জ্বালানির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। উন্নত দেশে সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা, শনপাট, বরবটি ইত্যাদির চাষ হয়। কিন্তু আমাদের দেশে লোকসংখ্যার অনুপাতে আবাদী জমি কম থাকার জন্য প্রধান ফসল (যেমন- ধান, পাট) বাদ দিয়ে সবুজ সার ফসল আবাদ করাও সম্ভব হচ্ছে না ।
মাটির জৈব পদার্থ বৃদ্ধির উপায়
১. গোবর, কম্পোস্ট, পাতা পচা সার জমিতে নিয়মিত প্রয়োগ করার মাধ্যমে জমির জৈব পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
২. দুটো প্রধান ফসলের মধ্যবর্তী সময়ে একটি সবুজ সার ফসল চাষ করার মাধ্যমে জমিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ বৃদ্ধি করা যেতে পাবে।
৩. ফসল-সংগ্রহের সময় ফসলের গোড়ার কিছুটা অংশ জমিতে রেখে দেয়া যেতে পারে ।
৪. ভূমি য় রোধ করার মাধ্যমেও জমির জৈব পদার্থ সংরণ করা যেতে পারে ।
৫. আউশ ধানের সঙ্গে মিশ্র ফসল হিসেবে ধৈঞ্চার চাষ করেও জমিতে জৈব পদার্থ যোগ করা যেতে পারে।
আইন প্রণয়নের মাধ্যমে গোবর, গাছের ঝরাপাতা ও ফসলের পরিত্যক্ত অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। তবে সেই সাথে মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য জ্বালানির সংস্থান করতে হবে।