মুরগির খামারের জন্য স্থান নির্বাচন

আজকে আমরা মুরগির খামারের জন্য স্থান নির্বাচন আলোচনা করবো।এটি কৃত্রিম প্রজনন ও খামার স্থাপন এর  মুরগির খামার স্থাপন ইউনিটের অন্তর্গত।

 

 

 মুরগির খামারের জন্য স্থান নির্বাচন

খামার বলতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হাঁসমুরগি প্রতিপালন করার জন্য নির্দ্দিষ্ট স্থানকে বুঝায় । হাঁসমুরগির উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে খামার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন- ডিম উৎপাদন খামার (egg farm), মাংস উৎপাদন খামার (broiler farm), প্রজননের খামার বা ব্রিডার খামার (breeder farm ) বাচ্চা উৎপাদন খামার (hatchery) ইত্যাদি । আবার হাঁস উৎপাদনের জন্য স্থাপিত খামারকে হাঁসের খামার (duck farm) বলা হয়।

অনুরূপভাবে, কোয়েল, রাজহাঁস, তিতির ও কবুতর ইত্যাদি উৎপাদনের খামারকে যথাক্রমে কোয়েল খামার, রাজহাঁসের খামার, তিতির পাখির খামার ও কবুতরের খামার বলা হয় । তবে কোয়েলের খামারকে কোয়েলারিও (quailary) বলা হয়ে থাকে । কোয়েলের ক্ষেত্রেও লেয়ার খামার, ব্রয়লার খামার, ব্রিডার খামার ও হ্যাচারি ইত্যাদি রয়েছে । আবার কবুতরের বাচ্চা উৎপাদনের খামার স্কোয়াব খামার (squab farm) নামে পরিচিত ।

 

 

এদেশে বাণিজ্যিকভিত্তিতে মুরগি, হাঁস বা কোয়েলের খামার থাকলেও রাজহাঁস, কবুতর ও তিতিরের কোনো বাণিজ্যিক খামার নেই বললেই চলে । এছাড়াও একই স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির ডিম, বাচ্চা ও মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপিত খামারকে পোলট্রি খামার (poultry farm) বলে । তবে প্রজাতি বা উৎপাদিত বস্তুর নামে খামারের নাম রাখা অধিক যুক্তিযুক্ত । একটি কথা মনে রাখা উচিত, একই খামারে বিভিন্ন প্রজাতির পোল্ট্রি পালন না করাই ভালো । কারণ একসঙ্গে পালন করলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে ।

মুরগির খামার একটি স্থায়ী ব্যবস্থা। যে ধরনের মুরগির খামারই স্থাপন করা হোক না কেন সাফল্যজনকভাবে খামার পরিচালনার জন্য এর স্থান নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কৌশল । কারণ মনে রাখতে হবে শুধু খামার স্থাপন করলেই চলবে না তা করে তুলতে হবে লাভজনক ।

 

 

মুরগির খামারের জন্য স্থান নির্বাচনের সময় নিচের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে । যেমন-

  • খামারের স্থান উঁচু হওয়া উচিত। খামার এমন স্থানে গড়তে হবে যেখানে বন্যা কখনও প্রবেশ করতে না পারে ।
  • যে স্থানে খামার করা হবে সেখানকার মাটি বালু ও কাঁকর মিশ্রিত হতে হবে এবং মাটির পানি শোষণ ক্ষমতা থাকতে হবে ।
  • খামার স্থাপনের জন্য নির্বাচিত স্থানে সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে ।
  • খামারের স্থানটি মানুষের বাড়িঘর থেকে দূরে কোলাহলমুক্ত জায়গায় হতে হবে ।
  • যে স্থানে খামার করা হবে সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হতে হবে ।
  • মানুষের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত রাজপথ থেকে অন্তত আধা কিলোমিটার দূরে খামারের স্থান নির্বাচন করা উচিত।
  • যেখানে খামার করা হবে সেখানে বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে ।
  • খামারের স্থান নির্বাচনের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আশেপাশে সস্তায় ও সহজে মুরগির খাদ্য ক্রয় করার সুযোগসুবিধা থাকে ।
  • খামারে উৎপাদিত পণ্য, যেমন- ডিম, মুরগি ইত্যাদি সহজে বাজারজাতকরণের সুযোগ থাকতে হবে ।
  • খামার স্থাপনের জন্য নির্বাচিত স্থানের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম কি-না সেটাও বিবেচনা করতে হবে ।

 

 

পাঠোত্তর মূল্যায়ন

১। সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (√) দিন ।

ক. কবুতরের বাচ্চা উৎপাদনের খামারকে কী বলে ?

i) স্কোয়াব খামার

ii) লেয়ার খামার

iii) ব্রয়লার খামার

iv) হ্যাচারি

খ. যে স্থানে খামার করা হবে সেখানকার মাটি কেমন হবে ?

i) এঁটেল

ii) দো-আঁশ

iii) বেলে

iv) বালি ও কাঁকর মিশ্রিত

২। সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন ।

ক. প্রজননের খামারকে ব্রিডার খামার বলে ।

খ. মুরগির খামার একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা ।

৩। শূন্যস্থান পূরণ করুন ।

ক. কোয়েলের খামারকে ——- বলা হয়ে থাকে ।

খ. যেখানে খামার করা হবে সেখানে ——– ও ———ব্যবস্থা করতে হয় ।

৪। এক কথায় বা বাক্যে উত্তর দিন ।

ক. একই স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির ডিম, বাচ্চা ও মাংস উৎপাদনের খামারকে কী বলে?

খ. ডিম উৎপাদনের খামারকে কী বলে ?

By একাডেমিক ডেস্ক, কৃষি গুরুকুল

কৃষি গুরুকুলের একাডেমিক ডেস্ক

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version