আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – গবাদিপশুর শারীরিক ওজন নির্ণয় করা। গবাদিপশুর খামার ব্যবস্থাপনায় লাভবান হতে গবাদিপশুর ওজন নির্ণয় অবশ্যই জানতে হবে।
এই পাঠ শেষে আপনি-
- গবাদিপশুর শারীরিক ওজন নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তা লিখতে পারবেন।
- গবাদিপশুর শারীরিক ওজন নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা করতে পারবেন।
গবাদিপশুর শারীরিক ওজন নির্ণয় করা
জন্মের পর থেকে প্রতিদিনই গবাদিপশুর শরীর বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে দৈহিক ওজন বাড়তে থাকে। গবাদিপশুকে যে খাদ্য খাওয়ানো হয় তার একটি অংশ মলমূত্র হয়ে শরীর থেকে বের হয়ে যায় এবং অপর অংশ শরীর গঠনে ব্যয় হয়। যে অংশ পশুর শরীর গঠনে ব্যবহৃত হয় তা পশুর দৈহিক বৃদ্ধি ঘটায়।
যে পশু দিন দিন খাবার খেয়ে বড় হয়ে ওঠে তার শারীরতত্ত্ব স্বাভাবিক চলে। গবাদিপশুর দৈহিক ওজন প্রায় সময়ই পরিমাপ করতে হয়। যেমন- জন্ম, বয়ঃবৃদ্ধি, গরম হওয়া, যৌন পরিপক্কতা, অন্তঃসত্ত্বা হওয়া প্রভৃতির সময়। গরুমহিষের ওজন দুভাবে নির্ণয় করা যায়। যথা-
১. ওজন মাপার যন্ত্র বা তুলাদন্ডের (balance) সাহায্যে এবং
২. দৈর্ঘ্য ও বুকের বেড় পরিমাপের মাধ্যমে। গরুমহিষের ওজন তুলাদন্ডের সাহায্যে পরিমাপ করলে একেবারে নির্ভুল তথ্য পাওয়া যায়। যেখানে গরুমহিষ পালন করা হয় সেখানে একটি নিরাপদ স্থানে তুলাদন্ডটি মাটিতে স্থাপন করা যেতে পারে। গরুমহিষকে তুলাদন্ডের উপরে উঠিয়ে ওজন নিতে হয়।
তুলাদন্ডের ব্যবস্থা না থাকলে দৈর্ঘ্য ও বুকের বেড় পরিমাপের মাধ্যমেও গরুমহিষের ওজন- নির্ণয় করা যায়। তবে এক্ষেত্রে তুলাদন্ডের মতো নির্ভুল ওজন পাওয়া যাবে না। এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত ওজন প্রকৃত ওজনের চেয়ে °৫% কমবেশি হতে পারে। এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত সূত্রটি নিম্নরূপ-
L X G²
10400
= দৈহিক ওজন (কেজি)
[ এখানে, খ = দৈঘ্য (সে.মি.), এ = বুকের বেড় (সে.মি.)]
দৈর্ঘ্য মাপতে হলে পশুকে শান্ত ভাবে সমতলে দাঁড় করাতে হবে। পশুর ঘাড় থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দূরত্বটুকু দৈর্ঘ্য মাপার ফিতা বা ট্যাপের সাহায্যে সে.মি.-এ মাপতে হবে। এরপর বুকের বেড় সে.মি.-এ মেপে উপরোক্ত সূত্র অনুযায়ী হিসাব করে ওজন- নির্ণয় করতে হবে।