আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় শিল্পে ব্যবহৃত কৃষিজ দ্রব্যাদির পরিচিতি, বৈশিষ্ঠ্য ও গুরুত্ব – যা শিল্পের কাঁচামাল: কৃষিজ দ্রব্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত।
Table of Contents
শিল্পে ব্যবহৃত কৃষিজ দ্রব্যাদির পরিচিতি, বৈশিষ্ঠ্য ও গুরুত্ব
আম
আমের বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica, পরিবার Anacardiaceae। আমকে ফলের রাজা বলা হয়, পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম রয়েছে। আমের বিভন্ন জাত আছে যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, আম্রপালি, হাড়িভাঙ্গা ইত্যাদি। ভারতের মালদহ ও মুর্শিদাবাদে প্রচুর পরিমানে আম চাষ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে আম চাষ বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে।
২০১০ সালের ১৫ নভেম্বর আম গাছকে বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। পৃথিবীতে আম উৎপাদনকারী শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম এবং প্রতিবছর প্রায় ১ মিলিয়ন টন আম বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়।
পৃথিবীতে আমের অন্যতম আদি ভূমি বাংলাদেশ। সুস্বাদু ও জনপ্রিয়তার কারনেই আম ভারত, পাকিস্তান ও ফিলিপাইনের জাতীয় ফল। আম্রপালি আমের সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্ভাবিত জাত। দেশে তৈরী আমের জুস রপ্তানি হচ্ছে আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, ইতালি, জার্মান ও যুক্তরাজ্যের বাজারে।
নারিকেল
নারিকেলের বৈজ্ঞানিক নাম Cocos nucifera, পরিবার Arecaceae। নারিকেল একটি অর্থকারী ও তেল জাতীয় ফসল। নারিকেল গাছ বিশ্বের উষ্ণমণ্ডলে বিস্তৃত, বিশেষ করে সমুদ্র উপকূলে নিচু জমি ও ক্ষুদ্র দ্বীপাঞ্চলে এ গাছ ভাল জানে। শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া এবং ভারতে এ গাছ প্রচুর জন্যে।
গাছের উচ্চতা হয় ২০-৩০ মিটার, কান্ড ম বেলনাকার, উপরের দিকে ক্রমশ সরু। বাংলাদেশের সর্বত্রই নারিকেল গাছ জন্যে। তবে সমুদ্র তীরবর্তী লোনা মাটিতে এর উৎপাদন ভাল। বাংলাদেশে যেসব নারিকেল হয় সেগুলো হল টিপিকা সবুজ, টিপিকা বাদামি ও দুধে। জাতভেদে বছরে প্রতি গাছে ২০০ বা ততোধিক নারিকেল পাওয়া যায়। অর্থনৈতিক দিক থেকে নারিকেল একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল ।
বাঁশ
বাঁশের বৈজ্ঞানিক নাম Bambusa vulgaris পরিবার Bambusoideae। বাঁশ ফাঁপা কান্ডবিশিষ্ট ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। কাষ্ঠল চিরহরিৎ উদ্ভিদ বাঁশগাছ সাধারনত একত্রে গুচ্ছ হিসেবে জন্মায়। এক একটি গুচ্ছে ১০-৭০ টি বাঁশ গাছ একত্রে দেখা যায় । এসব গুচ্ছকে বাঁশঝাড় বলে । বাঁশের অধিকাংশ প্রজাতিই ফুল প্রদানের পর মৃত্যুবরণ করে । পৃথিবীতে সর্বাধিক বাঁশের প্রজাতি আছে চীনে ( ৫০০ প্রজাতি)। বাংলাদেশে আছে ৬৬ প্রজাতির বাঁশ। বাঁশের প্রজাতি বৈচিত্র্যের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে ৮ম ।
বেড
বেতের বৈজ্ঞানিক নাম Calamus tenuis পরিবার Arecaceae। বেত এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। এটি বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারত, জাভা, সুমাত্রা অঞ্চলের উদ্ভিদ বেত গাছ সাধারণত গ্রামের রাস্তার পাশে, বসতবাড়ির পেছনে, পতিত জমিতে ও বনে কিছুটা আর্দ্র জায়গায় জন্মে। বেত চিরসবুজ উদ্ভিদ। বেত গাছের ফলকে বেতফল, বেগুন, বেগুন, বেগুল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। বাংলাদেশে ৬ প্রজাতির বেতফল পাওয়া যায়। এ ফল খেতে সুস্বাদু ও অনেকের প্রিয়।
বিশ্বে ১৩টি গাছের প্রায় ৬০০ প্রজাতির বেতরেয়েছে। বাংলাদেশে আছে বেতের মাত্র ২টি গণ যথা Calamus ও Daemonorops । ২-৩ বছরে বেত বড় ঝাড় হয়ে উঠে, ৭-৮ বছরে তা কাটা যায়। চাষে বেশি যত্ন লাগে না ।
সারসংক্ষেপ
কৃষি বিজ্ঞানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা। কৃষি, মাটি ও মানুষের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছে ও উন্নয়নে অবদান রেখেছে। এরকম । কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৃষিজ দ্রব্যাদি যেমন আম, নারিকেল, বাঁশ, বেত ইত্যাদি ।