খাদ্যের উৎস, কার্যাবলী ও খাদ্য তৈরির বিবেচ্য বিষয়

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়- খাদ্যের উৎস, কার্যাবলী ও খাদ্য তৈরির বিবেচ্য বিষয়। খাদ্যের উৎস: হাঁস-মুরগি থেকে অধিক মাংস ও ডিম পেতে হলে তাদের প্রয়োজনমত সুষম খাদ্য দিতে হয়। মুরগির সুষম খাদ্য তৈরির সময় খাদ্যের পুষ্টি উপাদানগুলো পরিমাণমত অবশ্যই থাকতে হবে। এদের খাদ্য তালিকাতেও ৬টি উপাদান থাকা প্রয়োজন এগুলো হলো: ১। আমিষ, ২। শর্করা, ৪। স্নেহ, ৩। ভিটামিন, ৫। খনিজ পদার্থ এবং ৬ পানি।

 

খাদ্যের উৎস, কার্যাবলী ও খাদ্য তৈরির বিবেচ্য বিষয়

 

খাদ্যের কাজ

১। শরীরের বৃদ্ধি ঘটায়।

২। শরীরের ক্ষয়পূরণ করে।

৩। শরীরের তাপ উৎপাদন করে, কর্মশক্তি যোগায়।

৪। প্রাণীর উৎপাদন বাড়ায়।

৫। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৬। দেহে পানির সমতা রক্ষা করে।

 

 

খাদ্যের উপাদান : উপাদানগুলোর উৎস ও কার্যাবলি

১। আমিষ বা প্রোটিন

শরীরের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে। আমিষ সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন:

ক. প্রাণিজ আমিষ : শুটকি মাছের গুঁড়া, গরু-ছাগলের নাড়িভুঁড়ি, শামুক-ঝিনুকের ভিতরের অংশ, শুকনা রক্ত ইত্যাদি।

খ. উদ্ভিদ আমিষ ডাল, খৈল ইত্যাদি।

২। শর্করা বা শ্বেতসার

শরীরের তাপ উৎপাদন ও শক্তি যোগায়। ধান, গম, যব, জোয়ার, ভুট্টা, গমের ভূষি, চাউলের কুঁড়া ইত্যাদি শর্করা জাতীয় খাদ্য।

৩। হেপদার্থ বা চর্বি :

শরীরের তাপ ও শক্তি বাড়ায়। সরিষা, সয়াবিন, বাদাম তৈল, তেলের খৈল, মাছের তেল, চাউলের কুঁড়া ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে।

 

 

৪। ভিটামিন বা খাদ্যপ্ৰাণ

ভিটামিন উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মাছের তেল, সবুজ ঘাস, শাক-সবজি, হলুদ রঙের ভুট্টা, চাউলের কুড়া ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে।

৫। খনিজ পদার্থ

খনিজ পদার্থ হাড়ের বৃদ্ধি ও উৎপাদনে সহায়তা করে। শামুক ও ঝিনুকচুর্ন, হাঁড়ের গুঁড়, শাক-সবজি ও লবণে খনিজ দ্রব্য থাকে।

৬। পানি

পানির অপর নাম জীবন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার পানি জীবন ধারণের জন্য 1 অপরিহার্য। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য পরিপাকের জন্য পানির প্রয়োজন।

 

 

খাদ্য তৈরির বিবেচ্য বিষয়

খামারের দৈনন্দিন খরচের ৬৫-৭০% বাঘ হয় খাদ্যের তাই খাদ্য তৈরিতে নিম্নেবর্ণিত বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হয়। যথা :

১। খাদ্যে হাঁস-মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পরিমাণ মত থাকতে হবে।

২। খাদ্য সহজলভ্য হবে।

৩। খাদ্য দামে সস্তা হবে।

৪। খাদ্য হাঁস-মুরগি পছন্দ করতে হবে।

৫। খাদ্যে শক্তিমান সঠিকভাবে থাকতে হবে।

৬। খাদ্য সুষম এবং সহজ- প্রাচ্য হতে হবে।

৭। খাদ্য গ্রহণে কোন উপসর্গ বা খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে না।

৮। খাদ্যে কোন দুর্গন্ধ থাকবে না।

৯। ভেজাল খাদ্য পরিহার করতে হবে।

১০। বেশি খাদ্য তৈরি করে দীর্ঘদিন মজুত করে রাখা যাবে না। এতে খাদ্যে বিষাক্ত ছত্রাক জন্মাবে।

১১। তৈরি খাদা শুষ্ক জায়গায় এবং ৫-৭ দিনে ব্যবহার করে ফেলা উত্তম।

বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদানের উৎস পুষ্টি উপাদান উৎস

১। আমিষ

শুঁটকি মাছের গুঁড়া, গরু-ছাগলের নাড়িভুঁড়ি, শামুক- ঝিনুকের ভিতরের মাংস, শুকনা রক্ত, ডাল, খৈল ইত্যাদি।

২। শর্করা

গম, ভুট্টা, যব, শোয়ার, বাজরা, সরগম, গমের ভূষি, চাউলের কুঁড়া।

৩। হেপদার্থ বা চর্বি

সরিষা, সয়াবিন, বাদাম তেল, মাছের তেল, চাউলের কুড়া।

৪। ভিটামিন

মাছের তৈল, সবুজ ঘাস, শাকশবজী, সূর্যের আলো, কৃত্রিম উপায়ে তৈরি ভিটামিন প্রিমিক্স।

By একাডেমিক ডেস্ক, কৃষি গুরুকুল

কৃষি গুরুকুলের একাডেমিক ডেস্ক

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version