জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মৎস্য ক্ষেত্রে অভিযোজন কলাকৌশল

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মৎস্য ক্ষেত্রে অভিযোজন কলাকৌশল

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মৎস্য ক্ষেত্রে অভিযোজন কলাকৌশল – যা কৃষি ও জলবায়ু এর অন্তর্ভুক্ত ।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মৎস্য ক্ষেত্রে অভিযোজন কলাকৌশল

 

 

অভিযোজন কলাকৌশল

প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য কোনো জীবের বিভিন্ন ধরনের শরীরবৃত্তীয় ও জৈব রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কৌশলকে অভিযোজন বলা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ম জীব বৈচিত্র ও উৎপাদনে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তা কাটিয়ে উঠার জন্য মৎস্য অভিযোজন কলাকৌশলকে কাজে লাগাতে হবে । এ উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত উদ্যোগসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে।

লবণাক্ততা এড়ানোর অভিযোজন কৌশল

১। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি প্রাপ্ত এলাকার লবণাক্ততা সহনশীল মাছ যেমন-ভেটকী, ভাটা, পারসে ইত্যাদির চাষ ও পোনা উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ।

২। অধিক লবণাক্ত জলাশয়ে চিংড়ি ও কাকড়া চাষ করা।

 

 

বন্যাজনিত প্রভাব এড়াতে কৌশল

১। বন্যা প্রবণ এলাকায় পুকুরের পাড় উঁচু করে বেঁধে দেওয়া বা নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়া। এতে বন্যার পানি পুকুরে প্রবেশ করবে না এবং মাছ ভেসে যাবে না।

২। বন্যাপ্রবণ এলাকায় সমাজভিত্তিক মৎস্য পোনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা যাতে প্রয়োজনে বন্যামুক্ত সময়ে এসব পোনা পুকুরের মজুদ করা যায়।

৩। বন্যার সময়ে খাচায় মাছ চাষ করা।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব এড়ানোর কৌশল

১। তাপমাত্রাসহনশীল মাছ চাষ এবং এদের পোনা উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ।

২। তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত প্রভাব এড়ানোর জন্য পুকুরে কয়েকটি স্থানে বাশের ফ্রেম তৈরি করে তাতে টোপাপানা রাখা যেতে পারে। মাছ এর নিচে অবস্থান করে নিজেকে গরম থেকে রক্ষা করতে পারে।

৩। পুকুরের পাড়ে পানির উপর লতানো উদ্ভিদ জন্মানোর সুযোগ সৃস্টি করে দেওয়া যাতে মাছ এর নিচে ঠান্ডা পরিবেশে আশ্রয় নিতে পারে ।

৪। পুকুরের পানির অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমানোর জন্য প্রয়োজনে বাহির থেকে পুকুরে পানি প্রবেশ করানো।

খরার প্রভাব এড়ানোর কৌশল

১। খরা প্রবণ এলাকায় অল্প পানিতে স্বল্প সময়ে তুলনামূলকভাবে বড় আকারের পোনা চাষ করা ।

২। খরা অঞ্চলে খরা সহনশীল মাছ যেমন দেশি মাগুর ও কৈ চাষ করা।

সামগ্রিকভাবে উপরোক্ত কৌশলগুলো অবলম্বনের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত লাগসই নতুন কলাকৌশল উদ্ভাবন করতে হবে। একই সাথে গবেষণার আধুনিকায়ন ও সময় উপযোগী জরীপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মৎস্য এলাকায় মাছের পরিবর্তিন নতুন বিচরণ ক্ষেত্র অনুসন্ধান করতে হবে।

 

সারাংশ

প্রতিকূল পরিবেশে বেচে থাকার জন্য কোনো জীবের বিভিন্ন ধরনের শরীরবৃত্তীয় ও জৈব রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কৌশলকে অভিযোজন বলা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মৎস্য জীব বৈচিত্র ও উৎপাদনে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তা কাটিয়ে উঠার জন্য মৎস্য অভিযোজন কলাকৌশলকে কাজে লাগাতে হবে ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *