নওগাঁ, ৭ মার্চ ২০২৫ (বাসস): নওগাঁ জেলার বরেন্দ্র এলাকার সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু নতুন জাতের ‘লাউ বেগুন’ চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। দূর থেকে দেখে মনে হবে লাউ, তবে কাছে গেলে জানা যায় এটি পরিচিত বেগুন। এই জাতের নাম বারি-১২।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এটি নওগাঁতে প্রথমবারের মতো চাষ করা হচ্ছে। প্রতি বেগুনের ওজন এক থেকে দেড় কেজি এবং প্রতিটি গাছে ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত বেগুন উৎপাদিত হচ্ছে। অন্যান্য বেগুনের তুলনায় এই জাতের বেগুনে ফলন এবং গুণগত মান ভালো হওয়ায় বাজারে দামও বেশি। এই বেগুনের রোগ-বালাই কম এবং কম সেচে চাষ করা যায়। এর ভর্তা, ভাজি বা অন্যান্য তরকারিতে স্বাদ অতুলনীয়।
উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘এই বেগুনে রয়েছে পুষ্টিগুণ যেমন ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম, যা দাঁত এবং হাড়ের জন্য উপকারী।’ এই বেগুন অন্যান্য বেগুনের তুলনায় বেশি উৎপাদনশীল এবং রোগ প্রতিরোধী।
রফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু ২০২৪ সালে ‘মৌসুমী’ নামক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা থেকে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষের প্রশিক্ষণ নেন এবং ৬০০টি চারা পান। তারা তাদের ১৫ শতক জমিতে এই বেগুনের চারা রোপণ করেন এবং এখন প্রচুর বেগুন উৎপাদিত হচ্ছে।
রফিকুল ইসলাম জানান, “গত সপ্তাহে নওগাঁ হাটে দেড় মন বেগুন বিক্রি করেছি, যেখানে অন্য বেগুন ৫০০ টাকা মন, আমি তা বিক্রি করেছি ১৬০০ টাকা মন দরে।” তিনি আরও জানান, প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই বেগুন দেখতে আসছে।
বৃষ্টি বানু বলেন, “এই বেগুন বিক্রি করে ভালো লাভ করেছি, মৌসুমীকে ধন্যবাদ জানাই।”
মৌসুমির কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আরিফ জানান, রফিকুল দম্পতি সফল হয়েছেন এবং তাদের উৎপাদন জেলা জুড়ে সাড়া ফেলেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নতুন জাতের এই বেগুন দ্রুত মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।