বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্যের তালিকা ও পরিমাণ

বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্যের তালিকা ও পরিমাণ

বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্যের তালিকা ও পরিমাণ – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “কৃষি পরিচিতি ও পরিবেশ” বিষয়ের “পরিবেশের উপাদান” বিষয়ের ইউনিট ৩ এর ৩.৫ নং পাঠ।

 

বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্যের তালিকা ও পরিমাণ

 

আমদানিকৃত পণ্য বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের মাটি ও জলবায়ু ফসল উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। কিন্তু অত্যধিক জনসংখ্যার চাপে দেশ আজ ভারাক্রান্ত এবং যে খাদ্যশস্য উৎপন্ন হয় তা এ বাড়তি

জনসংখ্যার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই প্রতি বছরই আমাদের বিদেশ হতে খাদ্য আমদানি করে এ ঘাটতি পুরণ করতে হয়। শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও বেশ কিছু পণ্য বিদেশ হতে আমদানি করতে হয়। বস্ত্র শিল্পের জন্য প্রতি বছরই আমাদের তুলা আমদানি করতে হয়। শিশুখাদ্য হিসেবে বিদেশ হতে প্রচুর পরিমাণে গুঁড়া দুধ আমদানি করতে হয়। প্রধান প্রধান কৃষি পণ্য যেগুলো বিদেশ হতে আমদানি করতে হয় তার খতিয়ান নিম্নে (ছক — ১) দেয়া হলো:
ছক — ১ ঃ আমাদানিকৃত প্রধান প্রধান কৃষি পণ্যের তালিকা।

রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্য

আমরা যে শুধু কৃষি পণ্য বিদেশ হতে আমদানি করি তা নয়, কিছু কিছু পণ্য আমরা বিদেশে রপ্তানিও করে থাকি। এক সময় একচেটিয়া পাট রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম এক নম্বরে ছিল। বর্তমানেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সিংহভাগ আসে পাট ও চা রপ্তানি খাত হতে। তাছাড়া আমরা শুকনা ও হিমায়িত মাছ, চামড়া, তামাক ও তামাক জাত দ্রব্য ইত্যাদি বিদেশে রপ্তানি করে থাকি। প্রধান প্রধান কৃষি পণ্য যেগুলো আমাদের দেশ হতে বিদেশে রপ্তানি করা হয় তাদের নাম ও পরিমাণ নিম্নে (ছক — ২) দেয়া হলো:
ছক — ২ ঃ পরিমাণসহ রপ্তানিযোগ্য প্রধান প্রধান পণ্যের তালিকা।

উপরিউক্ত রপ্তানি পণ্য তালিকার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে কিছু কিছু রপ্তানি পণ্য যেমন হিমায়িত মাছ, চা, চামড়া ইত্যাদির রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। পাট ও পাটজাত দ্রব্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও এর রপ্তানির পরিমাণ ১৯৯২—৯৩ সনে কমে গেছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে এবং উন্নত মানের পাট ও পাটজাত সামগ্রীর রপ্তানি বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।

রপ্তানি আয়ের বেশ একটা ভাল অংশ আসে চামড়া থেকে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। চায়ের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে এবং সে সঙ্গে বাড়ছে এর রপ্তানির পরিমাণ এবং দেশের রপ্তানি আয়। হিমায়িত ও শুকনা মাছ রপ্তানির পরিমাণও ক্রমান¦য়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বর্তমানে আমদানির পরিমাণ রপ্তানির তুলনায় বেশি। জাতীয় আয়ের বিরাট অংশ ব্যয় হয় খাদ্য আমদানির জন্য। যে বছর দেশে বন্যা, খরা, বা অন্য কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত হানে সে বছরই খাদ্যশস্য ফলনের উপর এদের বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে ফলন কমে যায় এবং তখনই বিদেশ হতে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষিকেই প্রধান্য দিতে হবে বেশি। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে পারলেই দেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।

 

সারমর্ম

বাংলাদেশে কৃষি পণ্যের আমদানির পরিমাণ রপ্তানির তুলনায় বেশি। আমাদানিকৃত প্রধান প্রধান কৃষি পণ্য হলো গম, চাল, চিনি, গুঁড়াদুধ, সয়াবিন তৈল, পাম্প ওয়েল, বিভিন্ন ধরনের মশলা, ডাল, ফল এবং ঔষধ ও প্রসাধনী শিল্পের কাঁচামাল। সবচেয়ে বেশি আমদানি করতে হয় গম, চাল ও ভোজ্য তেল। বাংলাদেশ হতে যে সব পন্য বিদেশে রপ্তানি হয় সেগুলোর মধ্যে উলে­খযোগ্য হলো হিমায়িত ও শুকনো মাছ, চা, চামড়া, পাট ও পাটজাত দ্রব্য ইত্যাদি। সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় পাট ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *