জাত উন্নয়নের উদ্দেশ্য এবং পদ্ধতি

জাত উন্নয়নের উদ্দেশ্য এবং পদ্ধতি

আজকে আমরা জাত উন্নয়নের উদ্দেশ্য এবং পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো। এটি কৃত্রিম প্রজনন ও খামার স্থাপন এর গাভীর জাত উন্নয়ন ইউনিটের অন্তর্গত।

 

 

জাত উন্নয়নের উদ্দেশ্য এবং পদ্ধতি

পৃথিবীতে কবে কখন পশুপাখি গৃহপালিতকরণ শুরু হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও ধারনা করা হয় যে পুরাতন প্রস্তর যুগের শেষভাগে এবং নব্যপ্রস্তর যুগের শুরুতে মানুষ পশুপাখি পালন শুরু করে । সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে মানুষ গৃহপালিত পশু থেকে অধিক উৎপাদন পাওয়ার চিন্তা করতে থাকে । রবার্ট ব্যাকওয়েল থেকে শুরু করে মেন্ডেলের সূত্র আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আধুনিক কৌলিবিজ্ঞান ও পশু প্রজনন বিদ্যার উদ্ভব ঘটেছে ।

কৌলিবিজ্ঞানের জ্ঞান ও মূলনীতিকে কাজে লাগিয়ে পশু প্রজনন বিদ্যার মাধ্যমে একদিকে যেমন বিশুদ্ধ জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে অপরদিকে তেমনি বিভিন্ন দেশের স্থানীয় অনুন্নত জাতের উৎপাদন দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব হয়েছে ।

 

জাত উন্নয়নের উদ্দেশ্য

জাত উন্নয়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো গবাদিপশুর কিছু বৈশিষ্ট্য, যেমন— দুধ উৎপাদন, দৈহিক বৃদ্ধি, যৌন পরিপক্কতা, মাংস উৎপাদন ইত্যাদির উন্নয়ন সাধন । এ উন্নয়ন দু’ভাবে ঘটানো যায়— ক) কৌলিক মানের উন্নয়ন ঘটিয়ে (Genetic improvement) এবং খ) পরিবেশগত উন্নয়ন ঘটিয়ে (Environmental improvement) ।

উপযুক্ত খাদ্য, ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির ব্যবস্থা করে পরিবেশগত উন্নয়ন ঘটানো যায় । কিন্তু কৌলিক মানের উন্নয়নের জন্য চাই সঠিক প্রজনন কৌশল ।

গবাদিপশুর প্রজনন কৌশল ঠিক করার পূর্বে প্রথমেই ভেবে নিতে হবে প্রজনন কী উদ্দেশ্যে করা হবে বা কোন্ বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন ঘটানো হবে । পশু প্রজননের দুটো হাতিয়ার রয়েছে— বাছাই (Selection) ও সমাগম (Mating)|

 

 

বাছাই (Selection )

গবাদিপশুর জাত উন্নয়নের জন্য প্রথমেই দরকার নির্দিষ্ট দেশের প্রাপ্ত জাতগুলোর মধ্যে বাছাই করে অধিক উৎপাদনক্ষম ও অধিক গুণাগুণ সম্পন্ন গবাদিপশু নির্বাচন করা । বাছাই কার্য সঠিক ও উন্নত না হলে প্রজনন কর্মসূচী কখনোই সফল হবে না ।

বাছাই পদ্ধতি প্রধানত তিন প্রকার—

১. ট্যানডেম পদ্ধতি (Tandem method)

২. অবাধ ছাটাই পদ্ধতি (Independent culling method)

৩. বাছাই সূচক পদ্ধতি (Selection Index method)

১. ট্যানডেম পদ্ধতি (Tandem method)

কোনো জাতের একাধিক বৈশিষ্ট্য উন্নয়নের জন্য একক বৈশিষ্ট্য বাছাইয়ের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিক উন্নয়ন করাকে ট্যানডেম পদ্ধতি বলে । এই পদ্ধতিতে কোনো একটি বৈশিষ্ট্যের সন্তোষজনক উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ঐ বৈশিষ্ট্যের জন্য বাছাই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হয় । একটি বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন হলে তখন অন্য বৈশিষ্ট্যের জন্য বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করা হয় । এভাবে সবগুলো বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত বাছাই প্রক্রিয়া চলতে থাকে । এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যটি প্রথম নির্বাচন করা হয় । যেমন— গাভীর ক্ষেত্রে দুধ উৎপাদন, উর্বরতা, দুধে সর্বমোট কঠিন পদার্থের পরিমাণ – এই তিনটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি প্রথম একক বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করতে হবে । যখন সেই বৈশিষ্ট্য কাঙ্ক্ষিত স্তরে চলে আসবে তখন অপর বৈশিষ্ট্য একক বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করতে হবে ।

সুবিধা (Advantages)

  • উন্নয়নের জন্য বাছাইকৃত বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে যখন আকাঙ্ক্ষিত কৌলিক অনুবন্ধ (genetic correlation) থাকে তখন এই পদ্ধতিটি বেশি কার্যকরী হয় । কৌলিক অনুবন্ধ হচ্ছে বাছাইয়ের মাধ্যমে একটি বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন ঘটানোর সাথে সাথে অন্য বৈশিষ্ট্যতে উন্নয়ন ঘটে ।
  • সাধারণত যে সমস্ত দলে একটি মাত্র বৈশিষ্ট্য উন্নয়নের জন্য পালন করা হয় সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সুবিধাজনক ।
  • নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অর্থনৈতিক গুরুত্বের ভিত্তিতে একসাথে একটিমাত্র বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন করা যায় ।

অসুবিধা (Disadvantages)

  • কম দক্ষ পদ্ধতি ।
  • উন্নয়ন করতে খুব বেশি সময় এবং অর্থ লাগে ।
  • যখন দুটো বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কৌলিক অনুবন্ধ নেগেটিভ হয় তখন বাছাইএর ফলস্বরূপ একটি বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন ঘটলেও অন্য বৈশিষ্ট্যের অবনতি ঘটে ।

অবাধ ছাটাই পদ্ধতি (Independent culling method)

এই পদ্ধতিতে একই সময়ে দুই বা ততোধিক বৈশিষ্ট্যের উন্নতির জন্য বাছাই কাজ চালানো হয় এবং প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের জন্য নূন্যতম মান ধার্য করা হয় । প্রজননের জন্য নির্বাচিত হতে হলে নির্বাচিত পশুকে প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের ঐ নূন্যতম মান পেতে হয় । কোন একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য যদি পশুটি ন্যূনতম মানের চেয়ে কম হয় তবে ঐ পশুকে প্রজননের জন্য ব্যবহার করা হয় না ।

ধরা যাক, দুধ উৎপাদন, দুধ ছাড়াকালীন সময়ে ওজন, এবং প্রথম প্রসবকালীন সময়ে বয়স ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের জন্য তিনটি গাভীর মধ্যেই বাছাই কাজ চালানো হবে। এই তিনটি বৈশিষ্ট্যের জন্য ছাঁটাই মাত্রা যথাক্রমে ১.৮ লিটার/দিন, ৬৫ কেজি, এবং ৫৩ মাস দেওয়া আছে ।

উদাহরণস্বরূপ ঃ

 

 

সুবিধা (Advantages)

  • কোন পশুকে প্রদর্শনীর জন্য তৈরি করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সবচেয়ে ভাল ফল দেয় । কারণ এক্ষেত্রে পশুকে সব বৈশিষ্ট্যের জন্য উৎকৃষ্ট হতে হয় ।
  • একসঙ্গে অনেক বৈশিষ্ট্যের জন্য বাছাই কার্য চালানো যায় ।
  • কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য অপ্রাপ্ত বয়সেই ছাটাই করা যায় ফলে খরচ কম হয় ।

অসুবিধা (Disadvantages)

  • এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, একটি প্রাণী একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য ভাল দক্ষতা প্রদর্শন করা সত্ত্বেও অন্য বৈশিষ্ট্যের মান ছাটাইমাত্রার নিচে থাকায় ঐ প্রাণীকে ছাটাই করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ ২নং গাভীর দুধ ছাড়াকালীন সময়ে ওজন বেশি হওয়া সত্ত্বেও গড় দুধ উৎপাদন ছাটাই মাত্রার নিচে হওয়ায় গাভীটিকে ছাটাই করতে হচ্ছে।

 

৩. বাছাই সূচক পদ্ধতি (Selection Index method)

এই পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকরী ও জটিল। এই পদ্ধতিতে বাছাই এর জন্য নির্ধারিত বৈশিষ্ট্যগুলোর নূন্যতম মান ধরা হয় এবং প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের নূন্যতম মানের সাথে আপেক্ষিক অর্থনৈতিক মূল্য গুণ করে ও পরে সবগুলো বৈশিষ্ট্যের মান যোগ করে ইনডেক্স মান (Index value) বা সূচক বের করা হয়। সাধারণত ইনডেক্স মান বা সূচককে ও দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীতে ইনডেক্স মান দেখে প্রাণীকে বাছাই করা হয় অর্থাৎ যে প্রাণীর ইনডেক্স মান ঐ বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য বেশি থাকে তাকে বাছাই করা হয় এবং এভাবে বাছাই কার্য চালিয়ে যাওয়া হয় । তবে বাছাই সূচক পদ্ধতিটি মাংস বা দুধের গরু অপেক্ষা ভেড়া এবং শুকুরের বেলায় বেশি কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

ধরা যাক, দুধ উৎপাদন, দৈহিক ওজন ও খাদ্য রূপান্তরের দক্ষতা এই বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য তিনটি গাভীর ইনডেক্স মান বের করা হবে । উদাহরণস্বরূপ, গাভী তিনটির এই বৈশিষ্ট্যগুলোর নূন্যতম মান ও আপেক্ষিক অর্থনৈতিক মান নিচে দেওয়া হলো ।

 

 

আপেক্ষিক অর্থনৈতিক মান—

দুধ উৎপাদন = ০.৬

দৈহিক ওজন = ০.২

খাদ্য রূপান্তরের দক্ষতা = ০.২

সূচক I = x1b1 + x2 b2 + x3b3 + ——- + xnbn

এখানে,

x1 = দুধ উৎপাদন    by = দুধ উৎপাদনের আপেক্ষিক অর্থনৈতিক মান ।

X2 = দৈহিক ওজন   by = দৈহিক ওজনের আপেক্ষিক অর্থনৈতিক মান ।

x3 = খাদ্য রূপান্তরের দক্ষতা   b3 = খাদ্য রূপান্তর দক্ষতার আপেক্ষিক অর্থনৈতিক মান ।

১নং গাভীর ইনডেক্স মান = ১০ × ০.৬ + ৪০০ x ০.২ + ৫ × ০.২
= ৬.০ + ৮০.o + ১.০
= ৮৭

২নং গাভীর ইনডেক্স মান = ৮ × ৬ + ৭০০ x 0.2 + x 0.2
= ৪.৮ + ১৪০.০ + ১.৪
= ১৪৬.২

৩নং গাভীর ইনডেক্স মান = ৫ × ৬ + ৭০০ × ০.২ + ৬ × ০.২
= ৩.0 + ১২০.০ +১.২
= ১২৪.২

এখানে ২নং গাভীটিকে বাছাই করা হবে ।

সুবিধা (Advantages)

১. সবচেয়ে দক্ষ পদ্ধতি ।

২. সময় কম লাগে ।

৩. দুই বা ততোধিক বৈশিষ্ট্যের উন্নয়ন একসঙ্গে করা যায় ।

8. মোট স্কোরের ভিত্তিতে পশু ছাটাই করা যায় ।

৫. সকল বিষয় যথাযথভাবে বিবেচনা করে সঠিকভাবে যদি কোন ইনডেক্স তৈরি করা হয় তবে তা অধিকতকর সহজ হয়ে থাকে এবং এতে সময় ও প্রচেষ্টা সাপেক্ষে বেশি পরিমাণ কৌলিক উন্নয়ন ঘটে থাকে ।

 

অসুবিধা (Disadvantages)

১. বেশ জটিল পদ্ধতি ।

২. একসাথে অধিক বৈশিষ্ট্যের উন্নয়নের জন্য বাছাই করতে অনেক সময় অসুবিধা হয়। এ

৩. ই পদ্ধতির কার্যকারিতা এবং সঠিকতা নির্ভর করে সঠিকভাবে বাছাই সূচক তৈরির উপর এবং এজন্য প্রজনন কর্মসূচীতে অভিজ্ঞ লোকের প্রয়োজন পড়ে ।

 

বাছাই সাহায্যকারী (Aids to selection)

যে সমস্ত উপাদান পশু প্রজননের জন্য বাছাই করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে, সে উপাদানগুলো হলো বাছাই সাহায্যকারী । বাছাই এর ক্ষেত্রে যেসব উপাদান অতি প্রয়োজনীয় তা নিচে আলোচনা করা হলো-

১. সাতন্ত্র্যতা বা বাহ্যিক নমুনা বা সরল ফেনোটাইপিক বাছাই (Individual or Mass or Simple phenotypic selection)

২. সারাজীবনের উৎপাদন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে বাছাই (Lifetime performance records)

৩. বংশবিবরণের ভিত্তিতে বাছাই (Pedigree selection)

8. পরিবার ভিত্তিতে বাছাই (Family selection)

৫. সন্তান পরীক্ষার ভিত্তিতে বাছাই (Progeny testing)

 

১. সাতন্ত্র্য্যতা বা বাহ্যিক নমুনা বা সরল ফেনোটাইপিক বাছাই (Individual or Mass or Simple phenotypic selection)

ভাল জাত উৎপাদন করার জন্য এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার করার জন্য পশুর নিজস্ব গুণাগুণের ভিত্তিতে একে প্রজননের জন্য বাছাই করাকে স্বাতন্ত্র্যতা বাছাই বলে। এক্ষেত্রে পশুকে তার নিজস্ব বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বাছাই করা হয়। যেমন- দুধ উৎপাদন, দুধে হেপদার্থের শতকরা হার ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ, কোন খামারে যদি ৫০০ গাভী থাকে তবে তাদের দুধ উৎপাদনের রেকর্ড দেখে যাদের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি তাদের বাছাই করা হয় ।

২. সারাজীবনের উৎপাদন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে বাছাই (Lifetime performance records)

একটি প্রাণী তার উৎপাদন দক্ষতার ধারাবাহিকতা কতটুকু বজায় রাখছে তার উপর ভিত্তি করে এই ধরনের বাছাই করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি গাভী তার জীবনকালে প্রতি ল্যাকটেশন পিরিয়ডে কী পরিমাণ দুধ উৎপাদন করছে তার উপর নির্ভর করে ঐ গাভীটি বাছাই করা যায় । পরিবেশগত নানাবিধ অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও উন্নত কৌলিক গুণসম্পন্ন একটি প্রাণীর সারা বছরের গড় উৎপাদন মোটামুটি একই থাকবে ।

উদাহরণস্বরূপ, উৎকৃষ্ট জাতের একটি দুধালো গাভীকে যদি সঠিক পরিমাণ খাদ্য ও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা দেয়া নাও হয়, তবুও ঐ গাভীটি অন্য গাভীর তুলনায় বেশি পরিমাণ দুধ দেবে। সুতরাং একজন প্রজননকারী খুব সহজেই একটি গাভীর উৎপাদন ক্ষমতার তথ্যগুলো দেখে তার ভবিষ্যত উৎপাদন ক্ষমতা সম্পর্কে ধারনা করতে পারবেন । কৌলিবিজ্ঞানে, এই বিষয়টিকে বলে “রিপিটেবিলিটি” অর্থাৎ রিপিটেবিলিটি বলতে বোঝায় একটি প্রাণীর জীবনকালে তার কোনো একটি বৈশিষ্ট্যের কীভাবে পুনরাবৃত্তি ঘটছে ।

৩. বংশ বিবরণের ভিত্তিতে বাছাই (Pedigree selection)

বংশ বিবরণ বলতে কোন পশুপাখির পূর্বপুরুষের রেকর্ডকেই বোঝায়, যার মাধ্যমে ঐ পশুটি তার পিতা-মাতার সাথে সম্পর্কযুক্ত । বংশবিবরণ বাছাই এর মূল অবলম্বন না হলেও এটি বাছাই এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ । এর কারণ হলো প্রতিটি প্রাণী তার পিতা থেকে অর্ধেক এবং মাতা থেকে অর্ধেক বৈশিষ্ট্য পেয়ে থাকে । নিশেক্ত কারণে আমরা বংশবিবরণের ভিত্তিতে বাছাই এর গুরুত্ব দেই—

  • পশুর নিজস্ব গুণাবলী সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব হলে ।
  • কোন পশুকে শৈশবে বাছাই এর ক্ষেত্রে। কারণ অনেক বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো পশু কেবলমাত্র পূর্ণবয়স্ক হলেই প্ৰকাশ পায় ।
  • এই পদ্ধতির ব্যবহার সহজ ।
  • কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য শুধু একলিংগে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে অন্য লিংগের প্রাণী বাছাই এর জন্য বংশবিবরণ দেখে বাছাই করা হয় ।
  • পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য কেমন ছিল তা জেনে ঐ স্বতন্ত্র প্রাণীতে কোন্ কোন্ বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাবার সম্ভাবনা রয়েছে সেটা জানা যায় ।

 

৪. পরিবার ভিত্তিতে বাছাই (Family selection)

এক্ষেত্রে পরিবারের তথ্যের উপর ভিত্তি করে বাছাই করা হয়। এই পদ্ধতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পোল্ট্রির জন্য ব্যবহৃত হয় । পরিবার তিন ধরনের হতে পারে—

i) পিতার পরিবার (Sire family)

একটি পিতার সাথে যখন বিভিন্ন মাতার মিলনের ফলে বাচ্চা উৎপন্ন হয় তখন তাকে পিতার পরিবারের বাচ্চা বলে ।

ii) মাতার পরিবার (Dam family )

যখন একটি মাতার সাথে বিভিন্ন পিতার মিলনের ফলে বাচ্চা উৎপন্ন হয় তখন তাকে গাভীর পরিবারের বাচ্চা বলে ।

iii) পিতা ও মাতার পরিবার (Sire and dam family)

যখন একটি পিতার সাথে একটি মাতার মিলনের ফলে বাচ্চা উৎপন্ন হয় তখন তাকে পিতা ও মাতার পরিবারের বাচ্চা বলে ।

 

৫. সন্তান পরীক্ষার ভিত্তিতে বাছাই (Progeny testing)

কোনো প্রাণীর বাচ্চার বৈশিষ্ট্য পরীক্ষার মাধ্যমে ঐ প্রাণীর প্রজনন মান নির্ণয় করে বাছাই করার পদ্ধতিকে সন্তান পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই বলে ।

অথবা অন্য কথায় বিভিন্ন প্রাণীর বাচ্চা পরীক্ষা করার মাধ্যমে সুপিরিয়র বা উৎকৃষ্ট গ্রুপ নির্ণয় করা হয় এবং এই ভিত্তিতে ভবিষ্যত প্রজননের উদ্দেশ্যে সুপিরিয়র প্রজনন প্রাণীকে অগ্রাধিকার দেয়া হয় ।

  • যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র একটি লিংগে প্রকাশ পায় সেক্ষেত্রে সন্তান পরীক্ষার ভিত্তিতে বাছাই পদ্ধতি উপকারী । যেমন— ডিম উৎপাদন ও দুধ উৎপাদন । পুরুষগুলো যদিও ডিম ও দুধ উৎপাদন করে না কিন্তু ঐ নির্দ্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জিন বহন করে এবং প্রতিটি কন্যা সন্তানে বংশগতির অর্ধেক বহন করে ।
  • যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য জীবিত প্রাণীতে পরিমাপ করা যায় না সেসব ক্ষেত্রে সন্তান পরীক্ষার ভিত্তিতে বাছাই পদ্ধতি খুবই উপকারী। যেমন— মাংসের গুণাগুণ ।
  • দুর্বল বংশগত বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।

 

সমাগম (Mating)

এতোক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম ভবিষ্যত বংশধর তৈরিতে কীভাবে পিতা-মাতা বাছাই করা হবে । এখন স্বভাবতই প্রশ্ন আসে কোন্ পদ্ধতিতে এদের মধ্যে মিলন ঘটবে। সারণি ১ এ বিভিন্ন ধরনের প্রজনন পদ্ধতির শ্রেণীবিভাগ দেওয়া হলো ।

সারণি  বিভিন্ন ধরনের প্রজনন পদ্ধতি

 

 

ক্লোজ ব্রিডিং (Closebreeding)

রক্তের সাথে সম্পর্কযুক্ত প্রাণীদের মধ্যে মিলন ঘটলে তাকে ক্লোজব্রিডিং বলে ।

ইনব্রিডিং (Inbreeding)

যে পদ্ধতিতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত দুটো প্রাণীর মধ্যে মিলন ঘটিয়ে বংশধারা ও গুনাবলী অব্যাহত রাখা হয় তাকে ইনব্রিডিং বা আন্তঃ প্রজনন বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী প্রাণী পিতা-মাতা ঘনিষ্ঠ রক্ত সম্পর্কযুক্ত । যেমন— আপন ভাই বোন, সৎ ভাই বোন ইত্যাদি ।

ইনব্রিডিং এর প্রভাব (Effect of Inbreeding)

  •  ইনব্রিডিং এর মাধ্যমে কোনো নতুন ধরনের জিনের সৃষ্টি হয় না ।
  • সাধারণত ইনব্রিডিং এর ফলে দৈহিক বৃদ্ধি হ্রাস পায় ।
  • দীর্ঘ দিন ধরে ইনব্রিডিং করলে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায় এবং মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায় ।
  • দীর্ঘদিন ধরে ইনব্রিডিং চলতে থাকলে প্রাণীর সজীবতা কমে যায় ।
  • ইনব্রিডিং এর ফলে বংশানুক্রমিক অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় ।

লাইনব্রিডিং (Line breeding)

একই জাতের উত্তম গুণাবলী সম্পন্ন দূর সম্পর্কীয় প্রাণীদের মধ্যে যখন প্রজনন ঘটানো হয় তখন তাকে লাইন ব্রিডিং (Line breeding) বলে। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে চাচাত, মামাত, ফুফাত ভাই বোনদের মাঝে অথবা আরও দূরসম্পর্কীয় প্রাণীদের মাঝে মিলন ঘটানো হয় । উদাহরণসরূপ বলা যায় দাদা-নাতনী অথবা মামাত ভাই ও ফুফাত বোনের মধ্যে যে প্রজনন ঘটে সেটাই লাইনব্রিডিং ।

আউটব্রিডিং (Out breeding)

যে প্রজনন পদ্ধতিতে সম্পর্কহীন বা ঘনিষ্ট সম্পর্কযুক্ত নয় এমন প্রাণীদের মধ্যে মিলন ঘটিয়ে প্রজনন কার্য সম্পন্ন করা হয় তাকে আউটব্রিডিং (Out breeding) বলে। আউটব্রিডিং ইনব্রিডিং এর বিপরীত প্রক্রিয়া ।

ক্রসব্রিডিং বা সকর প্রজনন (Cross breeding)

সম্পূর্ণ ভিন্ন জাতের দুটো প্রাণীর মধ্যে মিলন ঘটিয়ে যে প্রজনন কার্য সম্পন্ন করা হয় তাকে ক্রসব্রিডিং বলে । ক্রসব্রিডিং দুটো ভিন্ন প্রতিষ্ঠিত জাতের মধ্যে করা হয়। সাধারণত নতুন জাত উদ্ভাবনের জন্য এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। যেমন— জার্সি গাভীর সাথে শাহীওয়াল ষাঁড়ের প্রজনন ঘটিয়ে যদি নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয় তবে সেটা হবে ক্রসব্রিডিং ।

আউটক্রসিং (Out crossing)

যখন কোনো প্রজননকারী তার খামারের গবাদি পশুর কৌলিক মানে নতুন বৈচিত্র্য আনার উদ্দেশ্যে বাইরে থেকে ষাঁড় নিয়ে এসে প্রজনন ঘটান তখন তাকে আউটক্রসিং বলে ।

ব্যাক ক্রসিং (Back crossing)

দুটো বিশুদ্ধ জাতের মধ্যে ক্রসব্রিডিং এর ফলে সৃষ্ট সংকর জাতকে যদি পুনরায় তার মাতা বা পিতার সাথে প্রজনন করানো হয় তবে সেটা হবে ব্যাক ক্রসিং। উদাহরণস্বরূপ, জার্সি ও শাহীওয়ালের মধ্যে প্রজননের ফলে সৃষ্ট সংকর জাতকে যদি পুনরায় জার্সি বা শাহীওয়ালের সাথে প্রজনন করানো হয় তবে সেটাই হবে ব্যাক ক্রসিং।

জার্সি x শাহীওয়াল

সংকর জাত × (জার্সি বা শাহীওয়ালের সাথে)

ক্রিস ক্রসিং (Criss crossing)

ক্রিস ক্রসিং হলো ঐ প্রক্রিয়া যেখানে দুটো বিশুদ্ধ জাতের মধ্যে প্রজননের ফলে সৃষ্ট সংকর জাতের সাথে প্রথমে একটি বিশুদ্ধ জাতের প্রজনন ঘটাতে হবে এবং এই প্রজননের ফলে সৃষ্ট সংকর জাতের সাথে আবার অপর একটি বিশুদ্ধ জাতের প্রজনন ঘটাতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বিশুদ্ধ জার্সি ও শাহীওয়াল জাতের প্রজননে সৃষ্ট সংকর জাতের সাথে প্রথমে শাহীওয়াল জাতের মিলন ঘটানো হলো এবং এদের মিলনে উৎপন্ন সংকর জাতের সাথে জার্সি জাতের মিলন ঘটাতে হবে ।

 

 

ম্যাটিং লাইকস বা পছন্দনীয় সংগম (Mating likes )

এটি যদিও একটি পুরোনো প্রজনন পদ্ধতি তবু বর্তমানেও এর ব্যবহার রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে এ পদ্ধতিতে “ভালোর সাথে ভালো” (best to best) “মধ্যমের সাথে মধ্যম” (average to average ) এবং “খারাপের সাথে খারাপ” ( worst to worst) এ নীতিতে প্রজনন ঘটানো হয়ে থাকে । কোনো পশু ভালো না মধ্যম না খারাপ তা ঐ পশুটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য দেখে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে ।

ম্যাটিং আনলাইকস বা অপছন্দনীয় সংগম (Mating unlikes)

এ ধরনের প্রজনন পদ্ধতিকে ক্ষতিপূরণমূলক প্রজনন (compensatory mating) পদ্ধতি হিসেবেও চিহ্নিত করা যেতে পারে। কোনো একটি পশুর যে বৈশিষ্ট্যগুলোর ঘাটতি রয়েছে তা অন্য একটি উৎকৃষ্ট পশু দিয়ে পূরণ করা হয় ।

টপ ক্রসিং এবং গ্রেডিং আপ (Grading up )

এ দুটো প্ৰজনন পদ্ধতি প্রায় একই রকমের । যখন কোনো প্রতিষ্ঠিত জাতের উৎপত্তিস্থল থেকে ষাঁড় বা গাভী এনে ঐ জাতের সাথে প্রজনন করানো হয় তখন তাকে টপক্রসিং বলে। যেমন— মাংস উৎপাদনকারী এ্যাংগাস জাতের উৎপত্তিস্থল হলো স্কটল্যান্ডের পার্থে। যদি আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ার কোন অ্যাংগাস জাতের মালিক পার্থ থেকে ষাঁড় এনে প্রজনন করান তবে সেটাই হবে টপক্রসিং। আর গ্রেডিংআপ পদ্ধতিতে উন্নত জাতের বিদেশী ষাঁড় ও দেশী অনুন্নত জাতের গাভীর মধ্যে পর্যায়ক্রমে মিলন ঘটিয়ে উন্নত জাত সৃষ্টি করা সম্ভব।

উদাহরণস্বরূপ একটি দেশী গাভীকে একটি হলস্টেইন- ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়ের মাধ্যমে প্রজনন করানো হলে যে বাচ্চা জন্ম নেয় তার দেহে ৫০% দেশী ও ৫০% হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ানের রক্ত থাকে। এ বাছুরকে F, ক্রস বলে। এ বাছুর বকনা হলে বড় হওয়ার পর হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় দিয়ে তাকে প্রজনন করানো হলে বাচ্চার দেহে আদি দেশী মা গাভীর রক্ত আরও অর্ধেক কমে ২৫% হয়ে যাবে । অর্থাৎ এটি ৭৫% উন্নত জাতের বৈশিষ্ট্য পাবে । এটাকে F2 ক্রস বলে ।

এভাবে সংকর গাভী থেকে সাত পুরুষে তাত্ত্বিকভাবে প্রায় ১০০% খাটি হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান আনা যায়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম বংশের গাভী বা ষাঁড়ই ৫০% দেশী ও ৫০% হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান রক্ত বৈশিষ্ট্য বহন করে বেশি উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে থাকে ।

 

 

বাংলাদেশের গবাদিপশুর উন্নয়নে প্রজনন কর্মসূচী (Breeding programme for livestock improvement in Bangladesh)

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশ। বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে পশুসম্পদের অবদান অনস্বীকার্য । বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পশুসম্পদকে বলা হয় মানুষের খাদ্য যোগানের জৈবিক মেশিন । বাংলাদেশের পশুসম্পদের কৌলিক মান সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়নি। কৌলিক মান নির্ণয়ের জন্য পশুর পরিবেশগত প্রয়োজনগুলো আগে মেটানো দরকার । উপযুক্ত পরিবেশে কৌলিক মান নির্ণয় করা হলে আমাদের দেশেও অনেক ভাল জাতের পশু পাওয়া সম্ভব ।

আমাদের দেশের গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে উন্মুক্ত নিউক্লিয়াস প্রজনন কর্মসূচী (Open Nucleus Breeding System) সংক্ষেপে ONBS হাতে নেওয়া খুবই প্রয়োজন । বিশ্বের অনেক দেশ এই কর্মসূচী ব্যবহার করে গবাদিপশুর উন্নয়ন ঘটিয়েছে। যেমন— জার্মানি, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, তানজিনিয়া, তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক ও জর্দান ।

 

 

এই পদ্ধতিতে গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গবাদিপশুর মধ্যে থেকে অধিক উৎপাদনশীল ১০০০ টি গবাদিপশু নির্বাচন করা হয় এবং একটি কেন্দ্রে এনে রাখা হয় অতপর আবারো উৎপাদনের ভিত্তিতে ২০০ টি গাভী বা ৫০০ টি ছাগী বা ভেড়ী নির্বাচন করা হয়। এটিই নিউক্লিয়াস পাল। এই পালের প্রতিটি প্রাণীর বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনুমানকৃত প্রজনন মান (Predicted breeding value) দ্বারা ২০ টি ষাঁড় বা ৫০ টি পাঠা নির্বাচন করে নিউক্লিয়াস পালে সংযোজন করা হয় । অতপর এদের মাঝে প্রজনন ঘটিয়ে অধিক উৎপাদনক্ষম প্রাণীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাছাই করা হয় এবং শতকরা ২০ ভাগ নিম্নমানের প্রাণীকে ছাঁটাই করা হয়। নিউক্লিয়াস পালের পুরুষ প্রাণীগুলোকে কৃত্রিম প্রজননের কাজে ব্যবহার করে অথবা প্রাকৃতিকভাবে প্রজনন কাজে ব্যবহার করে গ্রামের কৃষকদের স্ত্রী প্রাণীগুলোকে পাল দেওয়ানো হয় ।

ফলে কৃষকের ঘরে যে বাচ্চা উৎপন্ন হবে তা কিছুটা উন্নত মানের হবে। তখন আবার গ্রামীণ কৃষকদের প্রাণীগুলো থেকে ২০% অধিক উৎপাদনশীল স্ত্রী প্রাণী বাছাই করে নতুন নিউক্লিয়াস পাল তৈরি করা হয়। এভাবে এই কর্মসূচীর মাধ্যমে ৪-৫ বারে অর্থাৎ ২০-২৫ বছরে উন্নত ও অধিক উৎপাদনক্ষম গবাদিপশু তৈরি করা
সম্ভব ।

সারমর্ম

জাতের উন্নয়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো গবাদিপশুর কৌলিক মানের উন্নয়ন ঘটানো । বাছাই ও সমাগম হলো পশু প্রজননের দুটো প্রধান হাতিয়ার। ট্যানডেম, অবাধ ছাটাই ও বাছাই সূচক এই তিন ধরনের বাছাই পদ্ধতি রয়েছে । এছাড়া কিছু বাছাই সাহায্যকারী রয়েছে যা বাছাই কার্যক্রমকে সহায়তা করে । | প্রজনন কর্মসূচীতে বাছাই এর পরের ধাপই হলো সমাগম পদ্ধতি । আমাদের দেশের গ্রামীন প্রেক্ষাপটে অনুন্নত গবাদিপশুর উন্নয়নে উন্মুক্ত নিউক্লিয়াস প্রজনন কর্মসূচী (Open Nuclurs Breeding System) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ।

মূল্যায়ন

১। সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (√) দিন ।

ক. বাছাই পদ্ধতি কত প্রকার?

i. দুই প্রকার

ii. তিন প্রকার

iii.চার প্রকার

iv.পাঁচ প্রকার

খ. কোটি বাছাই সাহায্যকারী?

i. ট্যানডেম পদ্ধতি

ii. বাছাই সূচক পদ্ধতি

iii. অবাধ ছাটাই পদ্ধতি

iv. পরিবার ভিত্তিতে বাছাই

২. সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে “মি’ লিখুন ।

ক. বাছাই সূচক একটি কার্যকরী ও জটিল পদ্ধতি ।

খ. উন্মুক্ত নিউক্লিয়াস প্রজনন কর্মসূচী বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয় ।

৩. শূণ্যস্থান পূরণ করুন ।

ক. রক্তের সাথে সম্পর্কযুক্ত প্রাণীদের মধ্যে মিলন ঘটলে তাকে ——বলে।
ট্যানডেম পদ্ধতিতে জাতের উন্নয়ন ঘটাতে খুব বেশি ——-লাগে ।

8. এক কথায় বা বাক্যে উত্তর দিন ।

ক. পশু প্রজননের প্রধান হাতিয়ার কী কী?

খ. কোন্ ধরনের প্রজনন পদ্ধতিতে বিদেশী ষাঁড় ও দেশী অনুন্নত জাতের পর্যায়ক্রমিক মিলন ঘটানো হয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *